team-india-kohli-mirror-bumrah-bowling

মোহালি ও ইন্দোরে প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের পর বেঙ্গালুরুতে আফগানিস্তানকে হারাতে রীতিমত বেগ পেতে হলো টিম ইন্ডিয়াকে (Team India)। রোহিত শর্মার দলকে নিজেদের দক্ষতার শীর্ষে পৌঁছতে হলো রহমানুল্লাহ গুরবাজ, গুলবদন নাইবদের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিতে। প্রথম দুই ম্যাচে প্রথমে বোলিং করে জিতেছিলো ভারত। গতকাল সিদ্ধান্ত বদলান টিম ইন্ডিয়ার (Team India) অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেন তিনি। ফরিদ আহমেদের স্পেল ভারতকে শুরুতে বিপদে ফেলেছিলো ঠিকই, কিন্তু পরে রোহিত শর্মা ও রিঙ্কু সিং-এর অবিচ্ছেদ্য ১৯০ রানের জুটি তাদের পৌঁছে দেয় ২১২ রানে। ১২১ করে অপরাজিত থাকেন রোহিত, বেঙ্গালুরুতে রিঙ্কুর সংগ্রহ ৬৯*।

২১৩ রানের লক্ষ্য সামনে রেখে খেলতে নেমে সমানে সমানে টক্কর দিলো আফগানরা। গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদ্রান-দুই ওপেনারই অর্ধশতক করেন। তিনে নেমে এদিনও ঝড় তুললেন গুলবদিন নাইব। সাথে পেলেন মহম্মদ নবি’কে। শেষ বলে বাকি ছিলো ৩ রান। মুকেশ কুমারের বলে ২ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করেন গুলবদিন’ই (Gulbadin Naib)। সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে ১ উইকেট হারিয়ে ১৬ রান তোলে আফগানিস্তান। জবাবে ভারত’ও আটকে থাকে ১৬তেই। প্রথম সুপার ওভার টাই হওয়ার পর বাধ্য হয়েই খেলতে হয় দ্বিতীয় সুপার ওভার। প্রথমে ব্যাট করে ভারত তোলে ১১। রবি বিষ্ণোইয়ের বলে ১ রানেই আফগানরা ২ উইকেট হারানোয় জয় পায় ভারত। রোহিত, রিঙ্কু, ওয়াশিংটন, বিষ্ণোইয়ের মত তারকাদের টিম ইন্ডিয়ার জয়ের কৃতিত্ব দিচ্ছেন অনেকেই। তবে কৃতিত্বের খানিকটা দাবী করতে পারেন বিরাট কোহলিও (Virat Kohli)। গতকাল জসপ্রীত বুমরাহ’র ছায়া দেখা গেলো তাঁর মধ্যে।

বেঙ্গালুরুতে বুমরাহ’র ফোটোকপি হয়ে উঠলেন বিরাট-

Virat Kohli | Team India | Image: Twitter
Virat Kohli | Image: Twitter

২০২২-এর টি-২০ বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক টি-২০ থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ২০২৩-এ টিম ইন্ডিয়া (Team India) কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটে খেলেছে শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মত দলের বিরুদ্ধে। কিন্তু মাঠে নামেন নি কোহলি। অবশেষে ২০২৪-এর টি-২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ১৪ মাস পর আফগানিস্তান সিরিজে ফেরানো হয়েছিলো তাঁকে। মোহালিতে প্রথম ম্যাচ খেলেন নি তিনি। ইন্দোরে ১৬ বলে ২৯ করেছিলেন। তৃতীয় ম্যাচটা ব্যাট হাতে স্মরণীয় করে রাখা হলো না তাঁর। আইপিএলের দৌলতে চিন্নাস্বামী তাঁর ‘ঘরের মাঠ’। কিন্তু সেখানেই নিজের আন্তর্জাতিক টি-২০ কেরিয়ারের প্রথম ‘গোল্ডেন ডাক’ করলেন তিনি। একই সাথে কেরিয়ারে ৩৫তম বার শূন্য রানে আউট হয়ে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ‘ডাক’-এর রেকর্ড’ও গড়লেন তিনি।

ব্যাট হাতে সফল না হলেও ফিল্ডিং-এ কিন্তু নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিলেন কোহলি। ৩০ মিটার দৌড়ে ক্যাচ নিতে দেখা গেলো তাঁকে। দুর্দান্ত ডাইভে রান আটকাতেও দেখা গেলো কয়েকবার। তবে নিজের ফিটনেস ও ফিল্ডিং দক্ষতার সেরা নমুনা কোহলি (Virat Kohli) দেখালেন ম্যাচের ১৭তম ওভারে। তখন বল করছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। আফগান ব্যাটার করিম জানাত (Karim Zanat) চেয়েছিলেন তাঁকে মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলতে। লং-অনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কোহলি। মাথার উপর দিয়ে বল উড়ে যাওয়ার সময় এক অবিশ্বাস্য লাফে এক হাত বাড়িয়ে বল তালুবন্দী করেন তিনি। শরীরের ভারসাম্য যে রাখতে পারবেন না তা শূন্যে থাকা অবস্থাতেই বুঝেছিলেন বিরাট। তিনি মুহূর্তের মধ্যে বল ছুঁড়ে দেন মাঠের মধ্যে। আটকান নিশ্চিত ছক্কা। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ম্যাচ যে টাই হলো, তাতে কোহলির এই দুরন্ত ফিল্ডি-এর ভূমিকাও যথেষ্ট।

বল হাতে এক ওভার’ও দেখা যায় নি কোহলিকে। তাও বুধবারের বেঙ্গালুরুতে তাঁর মধ্যে জসপ্রীত বুমরাহ’র (Jasprit Bumrah) ছায়া দেখছেন অনেকে। তাঁর কারণ কোহলির অতিমানবীয় ফিল্ডিং-ই। ১৭তম ওভারে শূন্যে লাফিয়ে তিনি যখন এক হাতে করিম জানাতের ছক্কা আটকাচ্ছিলেন, সেই মুহূর্তের ছবি ফ্রেমবন্দী করেছেন চিত্রসাংবাদিকরা। সেই ছবিতে কোহলিকে দেখে মনে হচ্ছে অবিকল জসপ্রীত বুমরাহ’র বোলিং অ্যাকশন নকল করছেন যেন। এর আগে এক সাক্ষাৎকারে কোহলি (Virat Kohli) জানিয়েছিলেন, তাঁর বোলিং অ্যাকশন বেশ নড়বড়ে। কিন্তু বদলানোর চেষ্টা করেও বদলাতে পারেন নি তিনি। ছন্দই খুঁজে পান নি বোলিং-এর। জসপ্রীত বুমরাহ অবতারে ফ্রেমবন্দী হওয়ার পর ‘বুম-বুম’-এর অ্যাকশন কি অনুশীলন করেও দেখবেন বিরাট? চর্চায় মেতেছেন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা। দুই ভারতীয় তারকার ছবি শেয়ার করে ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা আইসিসি অবধি লিখেছে, “যেন একে অপরের প্রতিবিম্ব।”

দেখুন ICC’র ট্যুইট’টি-

Also Read: Team India: “ও একজন ম্যাচ উইনার, তবে…” যুজবেন্দ্র চাহালের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে অকপট সুরেশ রায়না !!

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *