TOP 3: কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপে (T20 World Cup) চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়-পরাজয়ের হেড টু হেড পরিসংখ্যানে টিম ইন্ডিয়া (Team India) এতদিন এগিয়ে ছিলো ৬-১ ফলে। গতকালের পর তা দাঁড়ালো ৭-১। নিউ ইয়র্কের নাসাও কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক রুদ্ধশ্বাস লড়াইতে পড়শি দেশকে পিছনে ফেললো ‘মেন ইন ব্লু।’ টসভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় নি টিম ইন্ডিয়ার (Team India)। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে বৃষ্টিভেজা পিচে পড়তে হয়েছিলো সমস্যায়। রান পান নি রোহিত, কোহলি, সূর্যকুমার যাদবদের মত তারকারা। পাক পেস চতুর্ভুজের দাপটে ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিলো ১১৯ রানে।
কিন্তু অল্প রানের পুঁজি নিয়েও লড়াই থেকে সরে আসে নি ভারত। মহম্মদ রিজওয়ান (Mohammad Rizwan) ও উসমান খানের জুটি যখন ম্যাচের রাশ কেড়ে নিয়ে যেতে বসেছিলো, তখনও বিশ্বাস হারায় নি রোহিত শর্মার দল। উইকেটের জন্য লাগাতার চালয়ে গিয়েছে আক্রমণ। বুমরাহ, আর্শদীপ, সিরাজ, হার্দিকদের মরিয়া লড়াই সফল করে শেষ হাসি টিম ইন্ডিয়ারই (Team India)। প্রতিপক্ষকে ১১৩ রানে রুখে দিয়ে ৬ রানের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিলো তারা। এগিয়ে গেলো সুপার-এইট পর্বের দিকে। যে তিন ভারতীয় সুপারস্টার নিউ ইয়র্কে সুনিশ্চিত করলেন দলের জয়, আসুন দেখা নেওয়া যাক তাঁদের পারফর্ম্যান্স।
Read More: “ট্রফি আসছেই…” পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১১৯ রান ডিফেন্ড করলো টিম ইন্ডিয়া, সমাজ মাধ্যমে শুরু হলো চর্চা !!
ঋষভ পন্থ-

তালিকায় সবার প্রথমে থাকবে ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant) নাম। টসে জিতে প্রথম ব্যাট করতে নেমে টিম ইন্ডিয়া যখন রীতিমত ধুঁকছে, সাজঘরে ফিরে গিয়েছেন বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার মত মহাতারকা, তখন ঋষভই প্রথম প্রত্যাঘাতের প্রচেষ্টা শুরু করেন। অক্ষর প্যাটেলকে সাথে নিয়ে ভারতীয় ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান তিনি। হারিস রউফকে একই ওভারের পরপর তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ঋষভ বুঝিয়ে দেন যে নাসাও কায়ন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বোলিং সহায়ক পিচেও ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার রাস্তা থেকে সরবেন না তিনি। ৩১ বলে তাঁর ৪২ রানের ইনিংস ভারতের জয়ে বড় ভূমিকা রাখে গতকাল। এছাড়াও স্টাম্পের পিছনেও সপ্রতিভ ছিলেন ঋষভ। ধরেন তিনটি ক্যাচ। এর মধ্যে ফখর জামান ও শাদাব খানের ক্যাচ দুটি বেশ দৃষ্টিনন্দন ছিলো।
জসপ্রীত বুমরাহ-

কেন তিনি এই মুহূর্তে ক্রিকেটবিশ্বের সেরা ফাস্ট বোলার তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেলেন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। আগের দিন আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জোড়া উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন ম্যাচের সেরা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও সেই মুকুট উঠলো তাঁরই মাথায়। মাত্র ১২০ রানের পুঁজি রক্ষা করতে নেমে টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) প্রথম সাফল্য এনে দেন তিনিই। বুমরাহ’র বাউন্সের নাগাল পান নি বাবর আজম। স্লিপে সূর্যকুমার যাদবের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ক্রিজে জমে যাওয়া মহম্মদ রিজওয়ানকে দুর্দান্ত ইনস্যুইং-এ বোল্ড করে খেলার মোড় ঘোরান তিনি। নিজের স্পেলের শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ফিরিয়ে দেন ইফতিকার আহমেদকে। তখনই ম্যাচের রাশ পুরোপুরি চলে আসে ভারতের হাতে। ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন বুমরাহ।
হার্দিক পান্ডিয়া-

তালিকায় তৃতীয় নাম হতে পারে হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya)। আইপিএলে (IPL) তাঁর অফ ফর্ম নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে গত কয়েক দিনে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফের একবার নিজেকে ম্যাচ উইনার হিসেবে প্রমাণ করলেন তিনি। ব্যাট হাতে গতকাল মাত্র ৭ রানের বেশী করতে পারেন নি হার্দিক। কিন্তু পুষিয়ে দিলেন বল হাতে। নিউ ইয়র্কের পিচ’কে দারুণ ভাবে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের নাজেহাল করতে দেখা গেলো তাঁকে। হার্দিকের (Hardik Pandya) মোকাবিলা করতে গিয়ে উইকেট হারান ফখর জামান ও শাদাব খান। দুই ক্ষেত্রেই বাউন্সে বাজিমাত করেন ভারতীয় সহ-অধিনায়ক। এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে টপ এজ লাগে ফখরের। তিনি ধরা পড়েন ঋষভ পন্থের হাতে। শাদাবের উইকেটও আসে একই ভাবে। ২৪ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নিয়ে নায়ক তিনি।