IPL 2024: বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে গত রবিবার। ক্রিকেটদুনিয়ার ফোকাস এখন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (IPL) সপ্তদশ মরসুমের দিকে। টুর্নামেন্ট শুরু হতে এখনও বেশ কয়েক মাস দেরী রয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে মার্চের শেষে বা এপ্রিলের শুরুতে সূচনা হতে পারে এবারের মরসুম। কিন্তু আপাতত যাবতীয় আগ্রহ আইপিএলের (IPL) ‘মিনি’ নিলামকে ঘিরে। গত বছর কেরলের কোচি শহরে বসেছিলো মিনি নিলামের আসর। বিশাল অর্থপ্রাপ্তি ঘটেছিলো স্যাম কারান (Sam Curran), বেন স্টোকস, ক্যামেরন গ্রিনদের (Cameron Green)। এবার দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে আইপিএল নিলাম। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর যে ১৯ ডিসেম্বর দুবাইতে সম্মুখসমরে নামতে চলেছে দশ ফ্র্যাঞ্চাইজি।
গত আইপিএল নিলামে অব্যবহৃত অর্থ এবং ক্রিকেটারদের রিলিজ-রিটেনশন তালিকা প্রকাশের পর যে অর্থ হাতে থাকবে দলগুলির, তা ব্যবহার করে তা নিলাম থেকে নতুন ক্রিকেটার সই করাতে পারবে। ২০২৪ মরসুম থেকে প্রতি দলের স্যালারি ক্যাপ ৯৫ কোটি থেকে বাড়িয়ে ১০০ কোটি করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ফলে বাড়তি ৫ কোটি টাকাও যুক্ত হচ্ছে দলগুলির ‘অকশন পার্সে।’ চূড়াণত রিলিজ-রিটেনশন তালিকা প্রকাশের আগে ক্রিকেটার ট্রেডিং-এর সুযোগ দেওয়া হয়েছে দশ ফ্র্যাঞ্চাইজিকেই। ২৬ তারিখ অবধি চালু থাকবে ট্রেডিং উইন্ডো। গতকালই জোড়া ট্রেডিং দেখা গিয়েছে আইপিএলের দুনিয়ায়। রাজস্থান থেকে লক্ষ্ণৌ (LSG) পাড়ি দিয়েছেন দেবদত্ত পাডিক্কাল (Devdutt Padikkal)। উলটো পথে হেঁটেছেন পেসার আবেশ খান (Avesh Khan)।
Read More: IPL 2024: ট্রফি জয় অনিশ্চিত, নিলামের আগেই দুই স্টার প্লেয়ারকে দিল্লি ক্যাপিটালস দেখালো বাইরের পথ !!
রিলিজ তালিকায় ঠাঁই পেতে পারেন বেশ কয়েকজন মহাতারকা-
রিলিজ-রিটেনশন তালিকা সামনে আসার আগে হাতে থাকা অর্থের নিরিখে সবার থেকে এগিয়ে রয়েছে প্রীতি জিন্টার দল পাঞ্জাব কিংস (PBKS)। তাদের হাতে রয়েছে ১২.২০ কোটি টাকা। শিখর ধাওয়ান, ভানুকা রাজাপক্ষের মত তারকাকে ছেড়ে দিলে পাঞ্জাবের অকশন পার্সে অর্থের পরিমাণ বাড়বে তাদের। গত মরসুমে গোটা দলের খোলনলচে বদলেও সাফল্য পায় নি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ (SRH)। তাদের হাতে রয়েছে ৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। তারাও হ্যারি ব্রুক বা মায়াঙ্ক আগরওয়ালের মত কাউকে বাইরের পথ দেখায় কিনা, সেইদিকে থাকছে নজর।
রানার্স আপ গুজরাত টাইটান্স-এর (GT) অকশন পার্সে থাকছে ৪.৫৫ কোটি টাকা। গত মরসুমে ব্যর্থ হয়েছিলো দিল্লী। হাতে থাকা ৪.৪৫ কোটি টাকা তারা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে চাইবে। ইতিমধ্যেই ট্রেডিং উইন্ডোতে সক্রিয় অংশগ্রহণ দেখা গিয়েছে লক্ষ্ণৌ (LSG) দলের। তাদের হাতে রয়েছে ৩.৫৫ কোটি টাকা। দেবদত্ত-আবেশ দল অদলবদল করায় বাড়তি কিছু অর্থ যোগ হয়েছে তাদের পার্সে। রাজস্থানের হাতে ছিলো ৩.৩৫ কোটি। আবেশ খান দলে আসায় তাদের অকশন পার্স আপাতত প্রায় নিঃশেষ। বেশ কয়েকজন তারকাকে রিলিজ করতে হতে পারে তাদের। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB) হাতে রয়েছে ১.৭৫ কোটি টাকা। নতুন কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের নিলাম স্ট্র্যাটেজি কি হয় সেইদিকে তাকিয়ে সকলে।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) হাতে রয়েছে ১.৬৫ কোটি টাকা। শোনা যাচ্ছে আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনদের মত মহাতারকাদের ছেড়ে দিতে পারে তারা। গতবারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইয়ের (CSK) হাতে রয়েছে ১.৫০ কোটি টাকা। ১৬.২৫ কোটিতে নেওয়া বেন স্টোকস’কে তারা বাতিল করেন কিনা, সেই নিয়ে থাকছে কৌতূহল। সবচেয়ে কম পরিমাণ অর্থ রয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (MI) হাতে। আপাতত ৫৫ লক্ষের পুঁজি রয়েছে মুকেশ আম্বানীর দলের। তবে রিলিজ তালিকায় চমকে দিতে পারে তারা। জোফ্রা আর্চারকে বাতিলের দলে রাখতে পারে তারা। একই সাথে অর্জুন তেন্ডুলকর, ডিওয়াল্ড ব্রেভিসদের’ও ছেঁটে ফেলা হতে পারে। শোনা যাচ্ছে অধিনায়ক রোহিত শর্মার বদলে হার্দিক পান্ডিয়াকে ট্রেডিং-এর জন্য গুজরাত ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে আলোচনা চালাচ্ছে মুম্বই।
নিলামের তারকা হতে পারেন রচিন, হেড-
সংবাদমাধ্যম টিভি-১৮’এর তরফে জানানো হয়েছে যে এবার ৫৯০ জন ক্রিকেটারের ভাগ্য নির্ধারিত হতে চলেছে আইপিএল (IPL) নিলামের দিন। এর মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে রয়েছেন ১০ জন। গত বছরের ‘মিনি’ নিলামে ১৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকায় পাঞ্জাব কিংসে (PBKS) যোগ দিয়েছিলেন স্যাম কারান (Sam Curran)। আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নিলাম ফি সেটাই। এবার পুরনো রেকর্ড ভাঙতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিপুল অর্থে আইপিএলের আঙিনায় পা রাখতে পারেন নিউজিল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভুত অলরাউন্ডার রচিন রবীন্দ্র (Rachin Ravindra)। বাম হাতি ব্যাটিং-এর পাশাপাশি বাম হাতি স্পিন বোলিং-এ সাবলীল রচিন। বিশ্বকাপে ৩টি শতরান ও ৫৭৮ রান করেছেন তিনি। রচিনকে নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে জোর লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা।
‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকবেন অস্ট্রেলিয়ার ট্র্যাভিস হেড (Travis Head) এবং দক্ষিণ আফ্রিকার জেরাল্ড ক্যুৎসিয়ে’ও (Gerald Coetzee)। একার কৃতিত্বে ভারতের হাত থেকে বিশ্বকাপ কেড়ে নিয়ে গিয়েছেন হেড। ফাইনালে তাঁর অনবদ্য ১৩৭ রান নজর কেড়েছে ক্রিকেটদুনিয়ার। হাত ভাঙার কারণে বিশ্বকাপের শুরু থেকে খেলতে পারেন নি তিনি। তারপরেও তিনিই হয়েছেন খেতাব জয়ের নায়ক। অন্যদিকে ২৩ বছরের ক্যুৎসিয়ে (Gerald Coetzee) নজর কেড়েছেন তাঁর দুর্ধর্ষ ফাস্ট বোলিং-এর জন্য। নিয়মিত ১৪৫-১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে বোলিং করেছেন। নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন। ২০ উইকেট’ও নিয়েছেন বিশ্বকাপে।