রবিবার টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) আসরে মহারণ। মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান (IND vs PAK)। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ের উত্তাপ ছড়িয়েছে নিউ ইয়র্কেও। নাসাও কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়াম প্রস্তত মহাদ্বৈরথের মঞ্চ হয়ে উঠতে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ভারত হারিয়ে দিয়েছে আয়ারল্যান্ডকে। ২ পয়েন্ট ঝুলিতে থাকায় বাড়তি আত্মবিশ্বাস সঙ্গী হবে রোহিত শর্মাদের (Rohit Sharma)। নিউ ইয়র্কের মাঠে ইতিমধ্যে দুটি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তাঁর। পরিস্থিতি সম্পর্কেও অধিক ওয়াকিবহাল থাকবে ‘মেন ইন ব্লু।’ অন্যদিকে পাকিস্তানের কাজটা পাহাড়ে চলার সামিল। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে অপ্রত্যাশিত ভাবেই তারা হেরে বসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। সুপার এইটের দৌড়ে টিকে থাকতে গেলে জয় ছাড়া আর রাস্তা খোলা নেই পাকিস্তানের কাছে। মরিয়া হয়ে একাদশে রদবদলের পন্থা বেছে নিতে পারেন কোচ গ্যারি কার্স্টেন।
Read More: ভারত-পাক ম্যাচের আগে আহত কোহলি, ছিটকে যাওয়ার মুখে টিম ইন্ডিয়ার সুপারস্টার !!
আজম খানের বদলে একাদশে সাইম-
গত ম্যাচে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে ছিলো পাকিস্তান। রবিবার সেই ভুলত্রুটি শুধরে নিতেই হবে বাবর আজমদের (Babar Azam)। ২০২১-এর স্মৃতি ফেরানোর লক্ষ্যে বড় চাল দিতে পারে তারা। টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) দ্বিতীয় ম্যাচে আজম খানের বদলে সুযোগ দেওয়া হতে পারে সাইম আইয়ুব’কে। কিংবদন্তি উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মঈন খানের পুত্র আজম ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ভালো পারফর্ম করলেও আন্তর্জাতিক আঙিনায় মুখ থুবড়ে পড়েছেন। ১৪ ম্যাচ খেলেছেন দেশের জার্সি গায়ে। ৮.৮ গড়ে মোট রান মাত্র ৮৮। সর্বোচ্চ ৩০। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও তাঁর ভাগ্যে জুটেছে ‘গোল্ডেন ডাক।’ এলবিডব্লু হয়ে প্রথম বলেই ফিরেছেন সাজঘরে।
লাগাতার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন আজম (Azam Khan)। তাঁর ফিটনেস নিয়ে সমালোচনায় মুখর ক্রিকেটমহল। মাঠে তাঁর স্থূলতাই তাঁকে পিছিয়ে দিচ্ছে বলে মত অনেকেরই। পাশাপাশি ডালাসের মাঠে এক দর্শকের সাথেও তাঁকে ঝামেলায় জড়াতে দেখা গিয়েছে। ভারতের মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ছন্দে না থাকা আজম খানকে খেলানোর ঝুঁকি নিতে চান না নবনিযুক্ত কোচ গ্যারি কার্স্টেন। তাঁর বদলে তিনি একাদশে সুযোগ দিতে চলেছেন সাইম আইয়ুব’কে (Saim Ayub)। তরুণ তুর্কি সাইম এর আগে সিপিএলে (CPL) দুরন্ত পারফর্ম করেছেন। ভালো খেলেছেন পিএসএলেও (PSL)। ২২ বর্ষীয় তরুণ ৮৩টি-২০ ম্যাচে ২০৮৫ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১৪২-এর বেশী। ফিটনেস ও ফর্ম-দুই দিক থেকেই এই মুহূর্তে আজমের চেয়ে তাঁকেই এগিয়ে রাখছেন বিশেষজ্ঞরা।
জায়গা হারাতে পারেন বাবর-
যদি আজম খানকে (Azam Khan) সরিয়ে দিয়ে সাইম আইয়ুব’কে (Saim Ayub) প্রথম একাদশে রাখে পাকিস্তান, তাহলে রদবদল দেখা যাবে তাদের ব্যাটিং লাইন-আপেও। ২২ বর্ষীয় তরুণ পাওয়ার প্লে’তে সবচেয়ে কার্যকরী ব্যাটিং করতে সক্ষম। সাধারণত ওপেনার হিসেবেই খেলেন তিনি। টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) ভারতের বিরুদ্ধেও তাঁকে ওপেনিং-এই খেলাতে পারেন কোচ কার্স্টেন। সেক্ষেত্রে তাঁর সাথে দেখা যাবে উইকেটরক্ষক মহম্মদ রিজওয়ানকে। নিজের ওপেনিং স্লট তরুণ সতীর্থকে ছেড়ে দিইয়ে তিনে খেলতে হবে অধিনায়ক বাবর’কে। বাবরের (Babar Azam) স্ট্রাইক রেট নিয়ে বারবারই প্রশ্ন উঠেছে। গত ম্যাচেও তাঁর ৪১ বলে ৪৪ রানের ইনিংস হারের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মন্থর বাবরকে সরিয়ে বিধ্বংসী সাইমকে শুরুতে খেলানো ‘মাস্টারস্ট্রোক’ হতে পারে নিউ ইয়র্কের পিচে।
পাকিস্তানের হয়ে চার নম্বরে খেলতে পারেন উসমান খান (Usman Khan)। সদ্যই সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ছেড়ে তিনি পাক জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন। পিএসএলের সেরা ব্যাটারও নির্বাচিত হয়েছেন মাসখানেক আগে। পাঁচে দেখা যেতে পারে ফখর জামানকে (Fakhar Zaman)। টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর পরিসংখ্যান বেশ ভালো। ছয় নম্বরে নামতে পারেন শাদাব খান (Shadab Khan)। প্রাক্তন সহ-অধিনায়কের ফর্ম নিয়ে বিস্তর কথা হচ্ছে পাক সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাঁর ঝোড়ো ২০ রানের ইনিংসই ভদ্রস্থ স্কোরে পৌঁছে দিয়েছিলো দল’কে। সাতে ‘ফিনিশার’ হিসেবে দেখা যেতে পারে ‘চাচা’ নামে পরিচিত ইফতিকার আহমেদকে (Iftikhar Ahmed)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সুপার ওভারে ব্যাট হাতে দলকে জেতাতে পারেন নি ইফতিকার। চাইবেন রবিবার প্রায়শ্চিত্ত করতে।