IND vs SL: ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা সিরিজের (IND vs SL) প্রথম দুটি ম্যাচ ছিলো বেশ একপেশে। ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যথাক্রমে ৪৩ রান ও ৭ উইকেটের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে সিরিজ পকেটে পুরে নিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। আজ অন্তিম ম্যাচে সূর্যকুমার যাদবদের (Suryakumar Yadav) সামনে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ। পক্ষান্তরে টি-২০ বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর ভারতের বিপক্ষেও খড়কুটোর মত প্রথম দুই ম্যাচে উড়ে গিয়ে বেশ বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া আশালঙ্কারা যে অতি সহজে সূচাগ্র মেদিনী ভারতকে ছেড়ে দিতে প্রস্তুত নয় তা প্রমাণিত হলো আজ। টসে জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নিয়েছিলো লঙ্কাবাহিনী। বৃষ্টিভেজা বাইশ গজে ‘মেন ইন ব্লু’কে বেশ চাপের মুখে ফেললেন তীক্ষনা, হাসারাঙ্গারা। ২০ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১৩৭-এর বেশী এগোতে পারলো না ইনিংস।
Read More: RCB-ম্যাক্সওয়েল সম্পর্কে ফাটল, সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিলেন অজি অলরাউন্ডার !!
মুখ থুবড়ে পড়ে ভারতীয় টপ-অর্ডার-
ওপেনিং কম্বিনেশনে আজ বদল করেছিলো টিম ইন্ডিয়া। পিঠের চোট সারিয়ে একাদশে ফিরেছিলেন শুভমান গিল (Shubman Gill)। তাঁর সাথেই ইনিংসের সূচনা করতে মাঠে নামেন যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal)। তরুণ বাম হাতি ওপেনার সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করেছিলেন। ধুন্ধুমার ইনিংস খেলতে দেখা গিয়েছিলো তাঁকে। কিন্তু আজ বেশীদূর এগোতে পারলেন না। ৯ বলে ১০ রান করেই ফিরতে হলো সাজঘরে। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে তাঁকে আউট করেন মহেশ তীক্ষণা। আজ ঋষভ পন্থকে বাইরে রেখে উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে সঞ্জু স্যামসনকে (Sanju Samson) সুযোগ দিয়েছিলেন কোচ গম্ভীর। ব্যর্থতা পিছু ছাড়লো না তাঁর। গত ম্যাচে ওপেন করতে নেমে করেছিলেন শূন্য। আজ তিনে নেমেও খাতা খোলার আগেই ফিরলেন তিনি। চামিন্দু বিক্রমাসিঙ্ঘের শিকার হন তিনি।
নিয়মরক্ষার ম্যাচে রিঙ্কু সিং-কে (Rinku Singh) ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে তুলে আনা হয়েছিলো। কাজে এলো না ‘গুরুর’ গম্ভীরের ফাটকা। টানা দ্বিতীয় বার ব্যর্থ হলেন উত্তরপ্রদেশের তরুণ। প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ১, দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে নামতে হয় নি তাঁকে। আর আজও ২ বলে ১ রান করেই তীক্ষণার (Maheesh Theekshana) বলে ধরা পড়েন মাথিশা পথিরাণার হাতে। প্রথম দুই টি-২০তে ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। খেলেন বিধ্বংসী ইনিংস। কিন্তু আজ ব্যর্থ তিনিও। পাল্লকেলের বাইশ গজে আজ তিনি করলেন ৯ বলে মাত্র ৮ রান। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে একটা সময় রীতিমত ধুঁকছিলো টিম ইন্ডিয়া।
লড়লেন শুভমান ও রিয়ান, কার্যকরী ক্যামিও সুন্দরের-
তিন ফর্ম্যাটেই শুভমান গিলের (Shubman Gill) উপর আস্থা রাখতে চাইছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তাঁকে টি-২০ ও ওডিআইতে সহ-অধিনায়ক করা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিলো দিনকয়েক আগে। কিন্তু আজ ব্যাট হাতে আরও একবার নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিলেন পাঞ্জাবের ওপেনার। কঠিন উইকেটে এক প্রান্তে যখন পরপর উইকেট পড়ছে, তখন মাথা ঠাণ্ডা রেখে ভারতীয় ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন তিনি। যোগালেন স্থায়িত্ব। প্রথমে জুটি বাঁধেন শিবম দুবের (Shvam Dube) সঙ্গে। পেস বোলিং অলরাউন্ডার ১৪ বলে ১৩ করে রমেশ মেন্ডিসের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরার পর সঙ্গী পান রিয়ান পরাগকে। দুই তরুণের ৫৪ রানের জুটিই লড়াই করার জায়গায় আজ পৌঁছে দিলো ভারতকে। শেষমেশ ৩৭ বলে ৩৯ করে হাসারাঙ্গার বলে স্টাম্পড হন শুভমান।
রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন রিয়ান পরাগ (Riyan Parag)। অনভ্যস্ত সাত নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে নেমেও ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেন তিনি। ১৮ বলে করেন ২৬ রান। স্ট্রাইক রেট ১৪৪.৪৪। ২টি ছক্কা ও ১টি চার মারেন তিনি। হাসারাঙ্গার (Wanindu Hasaranga) দ্বিতীয় শিকার হয়ে তিনি যখন ফেরেন তখন ভারতের স্কোরবোর্ডে ১০৫। এরপর থেকে ১৩৭ অবধি টিম ইন্ডিয়া যে পৌঁছে গেলো তার নেপথ্যে ওয়াশিংটন সুন্দর (Washington Sundar)। গত দুটি ম্যাচে অক্ষর প্যাটেল খেলায় সুযোগ পান নি তামিলনাড়ুর তরুণ। আজ আরও একবার মাঠে নেমে তিনি বুঝিয়ে গেলেন যে রবীন্দ্র জাদেজার আদর্শ বিকল্প হয়ে উঠতে তিনি প্রস্তুত। চাপের মুখে ১টি চার ও ২ ছক্কার সাহায্যে ১৮ বলে তাঁর ২৫ রানের ইনিংস, আজকের ম্যাচের নিরিখে অমূল্য। রবি বিষ্ণোই অপরাজিত রইলেন ৮ রান করে।