লাল বলের ক্রিকেটকে যে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে তা স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারতের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা BCCI। একই কথা শোনা গিয়েছে অধিনায়ক রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) গলাতেও। তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে দীর্ঘতর ফর্ম্যাটগুলির বদলে আইপিএলের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-২০ ক্রিকেটকে অগ্রাধিকার দেওয়ার যে প্রবণতা সাম্প্রতিক কালে লক্ষ্য করা গিয়েছে তা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন ভারত অধিনায়ক। লাল বলের ফর্ম্যাটে খেলার প্রতি তরুণ প্রজন্মের অনীহা যে ভাবিয়েছে ভারতের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থাকেও তার প্রমাণ মিলেছে জয় শাহ (Jay Shah), রজার বিনি’রা টেস্ট ক্রিকেটের জন্য বিশেষ প্রকল্প ঘোষণা করাতেই।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা করে BCCI। মোট ৩০ জনকে রাখা হয়েছে কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায়। তার কিছুদিনের মধ্যেই টেস্ট ক্রিকেটের জন্য বিশেষ প্রকল্প ঘোষণা করে বোর্ড। জানানো হয় দীর্ঘতম ফর্ম্যাটে নিয়মিত খেললে বাড়তি অর্থলাভ করতে পারেন ক্রিকেট তারকারা। বছরে ভারত যদি গড়ে ৯টি টেস্ট খেলে তাহলে নূন্যতম ৫-৬টি ম্যাচে কেউ প্রথম একাদশে থাকলে লাভ করবে ম্যাচ প্রতি ৩০ লক্ষ টাকা। কেউ ৭ বা তার বেশী ম্যাচে প্রথম একাদশে থাকলে লাভ করবে ম্যাচ প্রতি ৪৫ লক্ষ টাকা। ৫০ শতাংশের কম ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকলে কোনো অর্থ না মিললেও ৫-৬ ম্যাচে অতিরিক্ত তালিকায় থাকা ক্রিকেটার পাবেন প্রতি ম্যাচে ১৫ লক্ষ টাকা। ম্যাচের সংখ্যা ৭ বার তার বেশী হলে টাকার অঙ্ক দাঁড়াবে ম্যাচ প্রতি ২২.৫ লক্ষ টাকায়।
Read More: “মাতালের নেশা কেটেছে…” সচিন তেন্ডুলকরকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই ট্রোলের মুখে রবি শাস্ত্রী !!
ঘরোয়া ক্রিকেটেও বাড়ছে বেতন-

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বোর্ড। দিনকয়েক আগে ফর্ম হারানো শ্রেয়স আইয়ার (Shryeas Iyer) ও ঈশান কিষণকে (Ishan Kishan) রঞ্জি ট্রফি খেলার পরামর্শ দিয়েছিলো BCCI। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করায় শাস্তির মুখে পড়েন দুজনেই। খোয়াতে হয় কেন্দ্রীয় চুক্তি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে চায় বোর্ড। ইতিমধ্যেই BCCI-এর পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক তারকাদেরও মরসুমে অন্তত কিছু রঞ্জি ম্যাচে অংশ নিতেই হবে দেশের খেলা অথবা চোট-আঘাত না থাকলে। ক্রিকেটারদের কাছে রঞ্জি ট্রফির মত প্রথম সারির ঘরোয়া প্রতিযোগিতার আকর্ষণ বাড়াতে ম্যাচ ফি বাড়ানোর পথেই হাঁটছে BCCI।
বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী যে ক্রিকেটাররা ৪০টির বেশী রঞ্জি ম্যাচ খেলেছেন তাঁরা দিনপ্রতি পান ৬০০০০ টাকা। যাঁরা ২০ থেকে ৪০টি রঞ্জি ম্যাচ খেলেছেন তাঁরা দিনপ্রতি পান ৫০০০০ টাকা। এছাড়া যাঁরা ২০টির কম রঞ্জি ম্যাচ খেলেছেন তাঁরা দিনপ্রতি পান ৪০০০০ টাকা। ক্রিকবাজে প্রকাশিত এক রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে যে অর্থের পরিমাণ দ্বিগুণ করার ভাবনাচিন্তা চলছে BCCI-এর অন্দরে। অঙ্ক কষে ক্রিকেটবোদ্ধারা দাবী করছেন যে এই নতুন প্রকল্প যদি বাস্তবায়িত করে বোর্ড, তাহলে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একজন রঞ্জি ক্রিকেটারের বার্ষিক বেতন দাঁড়াতে পারে ৭৫ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকার মধ্যে। এই প্রকল্পকে স্বাগতই জানিয়েছে ক্রিকেটমহলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে যথার্থ পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।