TOP 3: টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) আসরে ভারত বনাম পাকিস্তান দ্বৈরথের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। ৫ তারিখ আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টে অভিযান শুরু করেছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। আর পাকিস্তান প্রথম ম্যাচ খেলতে চলেছে ৬ তারিখ ডালাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। আগামী রবিবার অর্থাৎ ৯ তারিখ নিউ ইয়র্কের নাসাও কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সম্মুখসমরে নামবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। উপমহাদেশের দুই হেভিওয়েটকে ঘিরে সরগরম মার্কিন মুলুকের ‘বিগ অ্যাপল’ও। মূলত এই ম্যাচের জন্যই ৩৪০০০ আসনবিশিষ্ট এক নতুন স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হয়েছে। তুমুল চাহিদা রয়েছে টিকিটের। মর্যাদার লড়াইতে প্রতিপক্ষকে পিছনে ফেলতে বদ্ধপরিকর দুই শিবিরই।
রবিবারের মহাম্যাচকে মাথায় রেখে প্রস্তুতিতে মজে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা (Virat Kohli)। ভারত অনুশীলন সারছে নিউ ইয়র্কেই। পরিবেশ, পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার বাড়তি সময় ও সুযোগ থাকছে তাদের সামনে। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) প্রথম ম্যাচটিও টিম ইন্ডিয়া (Team India) খেলবে নিউ ইয়র্কেই। ২০২১ সালে মধ্যপ্রাচ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কুড়ি-বিশের বিশ্বযুদ্ধের মঞ্চে হারতে হয়েছিলো ‘মেন ইন ব্লু’কে। এছাড়া সাতবারের সাক্ষাতে একবারও পড়শি দেশ পরাজিত করতে পারে নি ভারতকে। পাকিস্তানকে হারিয়েই ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ জিতেছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবধান আরও খানিক বাড়িয়ে নিতে চায় রোহিত বাহিনী। লক্ষ্যপূরণে ‘তুরুপের তাস’ হতে পারেন তিন বোলার।
Read More: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বাজি ৩ অলরাউন্ডার, নজর নতুন ওপেনিং জুটির দিকে !!
জসপ্রীত বুমরাহ-
রবিবারের ম্যাচে নিঃসন্দেহে নজর থাকবে জসপ্রীত বুমরাহ’র (Jasprit Bumrah) দিকে। এই মুহূর্তে তিনিই যে তিন ফর্ম্যাট মিলিয়ে বিশ্বের সেরা পেসার সে সম্পর্কে বিশেষ সন্দেহ নেই কারও মনে। চোট সারিয়ে ফেরার পর দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করেছেন তিনি। এশিয়া কাপ (Asia Cup), ওডিআই বিশ্বকাপ (ICC World Cup) হোক বা দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ, বুমরাহ’র বোলিং-এ মোহিত ক্রিকেটজনতা। টি-২০’র জন্যও তাঁর অস্ত্রাগারে যে মজুত রয়েছে আলাদা সব অস্ত্র, তা বুমরাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন আইপিএলে (IPL)। রানের পাহাড়ের মাঝেও তাঁর ইকোনমি মাত্র ৬.৪৮। ২০ উইকেটও নিয়েছেন ১৪ ম্যাচে।
সেই ফর্মের প্রতিফলন বুমরাহ (Jasprit Bumrah) চাইবেন রবিবার নিউ ইয়র্কের মাঠে। ওডিআই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন ম্যাচের সেরা। মহম্মদ রিজওয়ানকে (Mohammad Rizwan) যে বলটিতে বোল্ড করেছিলেন, তাকে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা ডেলিভারির তকমা দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ফিরিয়েছিলেন শাদাব খানকেও (Shadab Khan)। এশিয়া কাপের ম্যাচেও বুমরাহ’র ৫ ওভারে ১৮ রানের বেশী করতে পারেন নি পাকিস্তান। টি-২০ বিশ্বকাপেও প্রতিপক্ষকে রুখে দেওয়ারই লক্ষ্য থাকবে বুমরাহ’র।
হার্দিক পান্ডিয়া-
এই মুহূর্তে উল্লেখযোগ্য ফর্মে নেই টিম ইন্ডিয়ার (Team India) তারকা অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। আইপিএলে (IPL) ব্যাটিং ও বোলিং-দুই বিভাগেই বিশেষ সুবিধা করতে পারেন নি তিনি। কিন্তু কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপে (T20 World Cup) নামার আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁর পারফর্ম্যান্স স্বস্তি যোগাচ্ছে দলকে। ঝোড়ো ইনিংসের পাশাপাশি উইকেটও নিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর পূর্ব পরিসংখ্যান বাবরদের মনে ত্রাসের সঞ্চার করার জন্য যথেষ্ট।
ব্যাট হাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে একাধিক দারুণ পারফর্ম্যান্স রয়েছে হার্দিকের (Hardik Pandya)। বোলিং-এও টিম ইন্ডিয়ার এক্স-ফ্যাক্টর হয়েছেন অনেকবার। ২০২২-এর টি-২০ বিশ্বকাপে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। ২০২৩-এর এশিয়া কাপের ম্যাচে বাবর আজমকে (Babar Azam) নাস্তানাবুদ করেছিলো তাঁর ইনস্যুইং। ২০২৩-এর ওডিআই বিশ্বকাপেও ২ উইকেট জমা পড়েছিলো তাঁর ঝুলিতে। ১৩ ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১৯ উইকেট। বোলিং গড় মাত্র ১৮.২৬। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাইবেন তিনি।
কুলদীপ যাদব-
তালিকায় তৃতীয় নাম হতে পারে কুলদীপ যাদবের (Kuldeep Yadav)। বাম হাতি চায়নাম্যান বোলার এই মুহূর্তে সাদা বলের ক্রিকেটের বিশ্বের সেরা তিন স্পিনারের মধ্যে রয়েছেন। তাঁকে অবিসংবাদী সেরা মানতেও দ্বিধা নেই অনেকের মনেই। এশিয়া কাপের (Asia Cup) সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন মাসখানেক আগে। ওডিআই বিশ্বকাপেও (ICC World Cup) দুরন্ত বোলিং দেখা গিয়েছে তাঁর থেকে। আইপিএলেও চাপের মুখে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে দিল্লী ক্যাপিটালসকে একাধিক ম্যাচে লড়াইয়ের ময়দানে টিকিয়ে রাখতে দেখা গিয়েছে কুলদীপকে। উত্তরপ্রদেশের তারকার উপরেও অনেকাংশে নির্ভর করবে ভারত-পাক ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার সাফল্য।
কুলদীপকে পাকিস্তান ভয় পাচ্ছে ক্রিকেটের এল-ক্লাসিকোতে তাঁর দুর্দান্ত পরিসংখ্যানের জন্য। ২০১৯-এর ওডিআই বিশ্বকাপে এক স্বপ্নের ডেলিভারিতে তিনি ফিরিয়েছিলেন বাবর আজমকে (Babar Azam)। পাক ব্যাটিং নক্ষত্রের বিস্মিত মুখের ছবি এখনও প্রায়শই দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ২০২৩-এর এশিয়া কাপেও কুলদীপ একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে। ভারতের তোলা ৩৫৬-র জবাবে পাকিস্তান গুটিয়ে গিয়েছিলো ১২৮ রানে। ২৫ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) দাপুটে জয় নিশ্চিত করেছিলেন চায়নাম্যান কুলদীপ। আহমেদাবাদে ওডিআই বিশ্বকাপেও নেন ২ উইকেট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৪.১৬ গড়ে কুলদীপের রয়েছে ৬ ম্যাচে ১২ উইকেট। যা চিন্তায় রাখছে বাবর-রিজওয়ানদের।