তিনি ওপেনার, মিডিয়াম পেস বোলার, দরকারে খেলতে পারেন মিডল অর্ডার, এমনকি ফিনিশারের ভূমিকায়। মাঠের বাইরে আবার এম বি এ। মধ্যপ্রদেশের ভেঙ্কটেশ আইয়ার(Venkatesh Iyer) আক্ষরিক অর্থেই একজন বহুমুখী প্রতিভা। কলকাতা নাইট রাইডার্সের অয়ে আইপিএলে দাপিয়ে খেলার সুবাদে সুযোগ এসেছিলো জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলার। সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই মুখ খুলেছেন বাঁ-হাতি ২০২১ আইপিএলের সংযুক্ত আরব আমিরশাহী অংশে দুর্দান্ত পারফর্ম করে মধ্যপ্রদেশের ব্যাটার উল্কার গতিতে উত্থান ঘটান ভারতীয় ক্রিকেটে। মধ্যপ্রদেশের হয়ে বিজয় হাজারে ট্রফিতে সাফল্য’ও তাঁর পক্ষে যায়। দলে অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সাথে তাঁর সম্পর্ক, তাঁর ব্যাটিং পজিশন নিয়ে আদৌ কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিলো কিনা দলের মধ্যে, এইরকম নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে ভেঙ্কটেশের কথায়।
ওপেনিং-এ মিলবে না সুযোগ, জানতেন আইয়ার-
ভারতের সীমিত ওভার ক্রিকেটে দুই নিয়মিত ওপেনার রোহিত শর্মা(Rohit Sharma) এবং কে এল রাহুল(KL Rahul) ছাড়াও রয়েছে শিখর ধাওয়ান, ঈশান কিষণের মত বড় নাম। এছাড়াও পৃথ্বী শ, শুবমান গিলসহ রয়েছেন আরও অনেকে। এই দীর্ঘ তালিকায় তাঁর যে নাম আপাতত আসবে না তা জানতেন বেঙ্কটেশ আইয়ার। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের(KKR) হয়ে ওপেনিং করেন সৌরভ গাঙ্গুলীর ভক্ত আইয়ার(Venkatesh Iyer)। তাঁর ভালো পারফর্ম্যান্স মাথায় রেখে তাঁকে আগামী মরসুমের জন্য ধরেও রেখেছে নাইট’রা। তবে জাতীয় দলে ছবিটা আলাদা। ওপেনারের ভীড়ে আলাদা করে নিজেকে চেনাতে পারা মুশকিল সেখানে। তবে প্রতিভাবান পেস বোলিং অলরাউন্ডার বিশেষ নেই জাতীয় দলে। তাই হার্দিক পান্ডিয়া চোট পেয়ে যখন দলের বাইরে ছিলেন তখন ডাক পড়ে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের। রোহিত শর্মা, রাহুল দ্রাবিড়দের সাথে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো তাঁর? জানাতে গিয়ে আইয়ার বলেন, “ যখন আমি দলে প্রথম সুযোগ পাই, তাকিয়ে দেখি ইতিমধ্যেই সেখানে জনাতিনেক ওপেনার আছে। রোহিত ভাই(শর্মা), কে এল রাহুল আর ঈশান কিষণ। তখন বুঝে গিয়েছিলাম ওপেনের সুযোগ আসবে না। যখন আমি রাহুল স্যার (দ্রাবিড়)-এর সাথে কথা বলি, উনি জানতে চান, ওপেনার হিসেবে আমি কি করে খেলাটাকে দেখি। তারপরেই আমায় জানিয়ে দেওয়া হয় যে দল আমায় ‘ফিনিশার’এর রোলে ভাবছে।” নতুন ভূমিকা নিয়ে চাপে ছিলেন না তিনি। বলেন, “দলে কাউকে নতুন ভূমিকা হলে তাকে সেখানে মানিয়ে নেওয়ার সময় দেওয়া হয়। রোহিত ভাই আর রাহুল স্যার আমায় বলেছিলেন বেশ কয়েকটা ম্যাচে আমায় টানা সু্যোগ দেওয়া হবে দেখার জন্য যে আমি নতুন ভূমিকায় মানিয়ে নিতে পারছি কিনা। কোচ আর অধিনায়ক যদি পাশে থাকছে, কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।”
যথেষ্ঠ বোলিং পান নি তিনি, জানালেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার –
হার্দিক পান্ডিয়ার পরিবর্তে, পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে দলে জায়গা হয়েছিলো তাঁর। খেলেছেন ২ টি একদিনের ম্যাচ এবং ৮ টি টি-২০। ১০ ম্যাচে ব্যাটিং-এর সুযোগ পেলেও বল করেছেন মাত্র ১৪ ওভার। এত কম বোলিং করে খুশি নন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। ক্রিকেটনেক্সট’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “ সত্যি বলতে আমি মনে করি আমায় দিয়ে একটু কম’ই বল করানো হয়েছে।” তবে সেই কারণে কোনো ক্ষোভ না হতাশা নেই ভেঙ্কি’র। বরং বলেছেন, “অধিনায়কের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখতে গেলে, যখন আপনার পাঁচ বোলার ভালো বল করছে, সবসময় ষষ্ঠ বিকল্পের প্রয়োজন হয় না। আমি নিজে রাজ্য দলের অধিনায়কত্ব করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যে ষষ্ঠ বিকল্প থাকা একটা বেশ ভালো জিনিস, প্রয়োজনের সময় কাজে আসে, কিন্তু তাকে সবসময় ব্যবহার করতে হয় না। সেটাই রোহিত ভাই করেছে।” “আপনি যদি আমায় জিজ্ঞাসা করেন, আমি বলবো যে আমি ২০ ওভার ব্যাট করতে চাই, আমার কোটা’র ৪ ওভার বল করতে চাই, কিন্তু সেটা কখনোই সম্ভব নয়।” যোগ করেছেন ভেঙ্কটেশ। হার্দিকের চোট সেরে যাওয়ায় বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরেই রয়েছেন তিনি। বেঙ্গালুরু’তে ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমি’তে চোটের রিহ্যাবের জন্য রয়েছেন এখন। ‘টিম ইন্ডিয়া’তে ফের একবার জায়গা করে নেওয়াই এখন লক্ষ্য তাঁর।