২০১০ সালে ভারতের হয়ে প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন উমেশ যাদব (Umesh Yadav)। বিদর্ভের পেসার গায়ে চাপিয়েছিলেন ওডিআই দলের জার্সি। এর পরের বছর টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। আর ২০১২ তে পান টি-২০ ক্যাপ। ২০ বছর বয়সে প্রথমবার চামড়ার বল হাতে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তার মাত্র তিন বছরের মধ্যেই প্রতিভার জোরে জায়গা করে নিয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়াতে। এরপর যত সময় এগিয়েছে ততই ক্ষুরধার হয়ে উঠেছেন উমেশ (Umesh Yadav)। দেশের হয়ে ৫৭টি টেস্টে নিয়েছেন ১৭০ উইকেট। ৭০টি একদিনের ম্যাচও খেলেছেন তিনি। নিয়েছেন ১০৬টি উইকেট। টি-২০তে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ৯টি ম্যাচে। উইকেটসংখ্যা ১২। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিলিয়ে ঝুলিতে উইকেটের সংখ্যা ৮০০’র কাছাকাছি। বোলার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেও ব্যাট হাতেও যে তিনি কার্যকরী, তার প্রমাণ উমেশ দিয়েছিলেন ২০১৫তে। করেছিলেন ধুন্ধুমার শতরান।
Read More: বাদ রিঙ্কু-সিরাজ, নিজের পছন্দের খেলোয়াড়দের নিয়ে দল সাজাচ্ছে অধিনায়ক সূর্যকুমার, হার্দিকের কপালে ঝুলছে খাড়া !!
অনবদ্য শতরান করেন উমেশ-
নাগপুরের জামথা স্টেডিয়ামে ২০১৫’র রঞ্জি ট্রফিতে মুখোমুখি হয়েছিলো বিদর্ভ ও ওড়িশা। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলো বিদর্ভ। আদিত্য শানওয়ারে, জিতেশ শর্মা ও গণেশ সতীশের কার্যকরী ইনিংস সত্ত্বেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় একটা সময় চাপে পড়ে গিয়েছিলো ‘হোম’ টিম। ওড়িশার হয়ে বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন বসন্ত মোহান্তি। লোয়ার অর্ডারে নেমে ইনিংসের হাল ধরেন উমেশ যাদব (Umesh Yadav)। অক্ষয় ওয়াখাড়ের (Akshay Wakhare) সাথে জুটি বেঁধে বিদর্ভকে লড়াইতে ফিরিয়েছিলেন উমেশ। আক্রমণ থেকে সরেন নি তিনি। মারেন ৭টি চার ও ৭টি ছক্কা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথমবারের জন্য তিন অঙ্কের মাইলস্টোন স্পর্শ করেন তিনি। মাত্র ১১৯ বলে ১২৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে ওড়িশার বোলিং আক্রমণকে ভোঁতা করে দেন উমেশ (Umesh Yadav)। তাঁর শতকের সৌজন্যে ৪৬৭ রান তোলে বিদর্ভ।
নিষ্ফলা পরিণতি ম্যাচের-
আদিত্য শানওয়ারে (Aditya Shanware) ও উমেশ যাদবের (Umesh Yadav) জোড়া শতরানের সুবাদে প্রথম ইনিংসে বিদর্ভ তোলে ৪৬৭ রান। জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে সমস্যায় পড়েছিলো ওড়িশা। অক্ষয় ওয়াখারের আগুনে বোলিং-এ দ্রুত উইকেট হারায় তারা। গোবিন্দ পোদ্দার (Govinda Poddar) লড়াকু ১৪৮ করলেও তাঁকে সাহায্য করতে পারেন নি কেউই। ২৭৪ রানে থেমে যায় ওড়িশার ইনিংস। ব্যাট হাতে রান পেলেও বোলিং ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিলো না উমেশের (Umesh Yadav)। ১৬ ওভার হাত ঘুরিয়ে জোড়া মেডেন দিলেও কোনো উইকেট পান নি তিনি। খরচ করেন ৫৩ রান। ওড়িশাকে ফলো-অনের প্রস্তাব দিয়েছিলো বিদর্ভ। আরও একবার অক্ষয় ওয়াখাড়ে ঝড় তোলেন বল হাতে। তুলে নেন ৫ উইকেট। ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৩০ তোলে ওড়িশা। ম্যাচ অমীমাংসিত থাকলেও প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে ৩ পয়েন্ট পায় বিদর্ভ।
উমেশকে ছেঁটে ফেলেছে টিম ইন্ডিয়া-
ঘরোয়া ক্রিকেট ও আইপিএলে নিয়মিত হলেও এই মুহূর্তে টিম ইন্ডিয়া থেকে ছিটকে গিয়েছেন উমেশ যাদব (Umesh Yadav)। সাদা বলের দুই ফর্ম্যাট থেকে অনেক আগেই সরানো হয়েছে তাঁকে। শেষ ওডিআই খেলেছেন ২০১৮ সালে বিশাখাপত্তনমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। টি-২০তে তাঁকে ভারতের নীল জার্সিতে শেষ দেখা গিয়েছিলো ২০২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে। গত বছর ইংল্যান্ডের ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ব্যর্থ হওয়ার পর লাল বলের ফর্ম্যাট থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডাক পান নি তিনি। সুযোগ মেলে নি ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও। আপাতত বুমরাহ-শামি-সিরাজ ত্রয়ীতেই আস্থা রাখছে দল। সামনে বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট রয়েছে। সেখানেও উমেশের খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ।