TOP 3: পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে (MI) নিয়ে এইবারের আইপিএলেও (IPL) প্রত্যাশা অনেক ছিলো সমর্থকদের। কিন্তু নতুন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার অধীনে একেবারেই আশানুরূপ ফলাফল করতে সক্ষম হয় নি তারা। প্রথম ম্যাচেই গুজরাতের (GT) বিরুদ্ধে হেরেছিলো তারা। পরাজিত হতে হয়ে তার পরের দুই ম্যাচেও। হারের হ্যাট্রিকের পর আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয় নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (MI) পক্ষে। মাঝে তিন ম্যাচ জিতলেও আস্তে আস্তে চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে তারা। ১১ ম্যাচ শেষে আট পরাজয় সহ মুম্বইয়ের পয়েন্ট সংখ্যা ৬। এখান থেকে প্লে-অফে পৌঁছনো এক কথায় অসম্ভব। এহেন হতশ্রী ফলাফল বিশ্লেষণ করতে বসলে ভিলেন হিসেবে উঠে আসছে তিন ক্রিকেটারের নাম।
Read More: LSG vs KKR, Match-54, Dream 11 Prediction in Bengali: যুযুধান লক্ষ্ণৌ ও কলকাতা, একানার ধুন্ধুমার দ্বৈরথে কেমন সাজাবেন ফ্যান্টাসি টিম? জানুন সব তথ্য এক ক্লিকে !!
হার্দিক পান্ডিয়া-
এই তালিকায় প্রথমেই নাম থাকবে হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya)। মরসুম শুরুর আগে বিপুল প্রত্যাশা জাগিয়ে গুজরাত টাইটান্স থেকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ফিরেছিলেন হার্দিক। তাঁর হাতেই অধিনায়কত্ব ভার তুলে দিয়েছিলো ফ্র্যাঞ্চাইজি। কিন্তু মুম্বই জার্সিতে দ্বিতীয় ইনিংস মোটেই সুখকর হয় নি তাঁর। নেতা হিসেবে মেলে ধরতে পারেন নি নিজেকে। তাঁর ফিল্ডিং বদল, বোলার ব্যবহার করার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) জুতোয় পা গলিয়ে সমর্থকদের বিরাগভাজনও হয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে হার্দিক অধিনায়কত্ব লাভ করায় দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে মুম্বই সাজঘর’ও। এই বিভাজনের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে মাঠের পারফর্ম্যান্সেও।
অধিনায়ক হার্দিকের (Hardik Pandya) সাথে সাথে চলতি মরসুমে ক্রিকেটার হার্দিকের পারফর্ম্যান্সের গ্রাফও একেবারে তলানিতে। এখনও অবধি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI) ১১ ম্যাচ খেলেছে। ১১টি ইনিংসে হার্দিকের রান সংখ্যা কেবল ১৯৮। সর্বোচ্চ ৪৬। একটি ম্যাচে ছিলেন অপরাজিত। স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৪৮ হলেও ব্যাটিং গড় আপাতত ১৯.৮। বল হাতেও নিজের সেরা ছন্দের ধারে কাছেও নেই তিনি। এখনও অবধি ১১ ম্যাচে তিনি নিয়েছেন কেবল ৮ উইকেট। ইকোনমি রেট ১১। বোলিং গড় প্রায় ৩৮। এহেন পরিসংখ্যান চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে সমর্থকদের কপালে। সিনিয়র তারকা হার্দিকের হতশ্রী প্রদর্শন মুম্বইয়ের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।
ঈশান কিষণ-
তালিকায় দ্বিতীয় নাম হতে পারে ঈশান কিষণের (Ishan Kishan)। আইপিএল শুরুর আগে থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। দক্ষিণ সফরের মাঝপথে জাতীয় দল ছেড়ে চলে এসেছিলেন ভারতে। পরে বিসিসিআই-এর পক্ষ থেকে তাঁকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে অনুরোধ করার পরেও তা অমান্য করেন ঝাড়খণ্ডের ক্রিকেটার। তিনি শুরু করেন আইপিএল প্রস্তুতি। হার্দিক ও ক্রুণাল পাণ্ডিয়ার সাথে বিশেষ প্রস্তুতির জন্য চলে গিয়েছিলেন বরোদা। বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েন। আইপিএল (IPL) তাঁর কাছে জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হতে পারত। কিন্তু চূড়ান্ত ধারাবাহিকতার অভাব দেখা গিয়েছে তাঁর খেলায়। যা ব্যাকফুটে ঠেলেছে ঈশানকে।
পছন্দের ওপেনিং পজিশনেই খেলার সুযোগ পেয়েছেন ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)। কিন্তু নিজের সেরা ফর্মে দেখা যায় নি তাঁকে। অধিকাংশ ম্যাচেই পাওয়ার প্লে’র মধ্যেই উইকেট হারিয়েছেন তিনি। অহেতুক তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসতেই প্রায়শই দেখা গিয়েছে তাঁকে। যা ঈশান’কে তো সমস্যায় ফেলেছেন, সাথে ডুবিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকেও (MI)। এখনও অবধি ১১ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ২৩.৩৬ গড়ে করেছেন কেবল ২৫৬ রান। ১৫০ স্ট্রাইক রেট রাখতে সক্ষম হলেও অর্ধশতকের সংখ্যা মাত্র ১টি। ইনিংসের গোড়াতে ঈশান নড়বড়ে হওয়ায় একের পর এক ম্যাচে মুম্বই ইনিংসের ভিত মজবুত হয় নি। ফলস্বরূপ হারতে হয়েছে তাদের।
টিম ডেভিড-
তালিকায় তৃতীয় নাম হতে পারে টিম ডেভিডের (Tim David)। অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডারকে কিয়েরণ পোলার্ডের বদলি হিসেবে দেখছে মুম্বই শিবির। লোয়ার অর্ডারে নিয়মিত সুযোগ পেয়েছেন ব্যাট হাতে মাঠে নামার। কিছু ম্যাচে ঝোড়ো ইনিংস খেললেও রান তাড়া করার সময় অধিকাংশ সময়েই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য তিনি এনে দিতে পারেন নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে (MI)। যার ফলে ২ পয়েন্ট হাতছাড়া হয়েছে দলের। এখনও অবধি ১১ ম্যাচ খেলেছেন টিম ডেভিড (Tim David)। তাঁর রান সংখ্যা কেবল ২৩৪। একটি ম্যাচেও অর্ধশতক করতে সক্ষম হন নি। তিন ইনিংসে নট-আউট থাকায় গড় ৩৫-এর কাছাকাছি হলেও চাপের মুখে বারবার নতিস্বীকার করেছেন টিম ডেভিড। যা সমস্যায় ফেলেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে।