TOP 3: রাত পোহালেই নববর্ষ। ২০২৪-কে স্বাগত জানানোর পূর্বে ২০২৩-এর ঘটনা প্রবাহের দিকে ফিরে তাকাচ্ছে ক্রিকেটদুনিয়া। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, এশিয়া কাপ, অ্যাসেজ, বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির মত একঝাঁক দুর্দান্ত প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছে ২০২৩-এ। ভারতের মাটিতে বসেছে জমজমাট ওডিআই বিশ্বকাপের আসর। বিনোদনের কোনো অভাব হয় নি দর্শকদের। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে অনুরাগীদের মন জিতেছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মহম্মদ শামি’রা (Mohammed Shami)। বর্ষশেষে কুর্নিশ আদায় করে নিচ্ছেন তাঁরা। একই সঙ্গে ক্রিকেটজনতার আলোচনায় জায়গা করে নিচ্ছেন এমন তিন ক্রিকেটার, যাঁরা ২০২৩-এ নিজেদের সতীর্থদের কেরিয়ারের পথেই পেতে দিয়েছেন কাঁটার বিছানা।
Read More: TOP 3: তিন ক্রিকেটার যারা ২০২৩ সালে ছন্দে ফিরে কাঁপিয়েছেন বাইশ গজ !!
হার্দিক পান্ডিয়া-রোহিত শর্মা-
এই তালিকায় প্রথমেই থাকবেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya) ও রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) নাম। হিটম্যানের নেতৃত্বেই নিজের আইপিএল কেরিয়ার শুরু করেছিলেন হার্দিক। ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি যোগ দিয়েছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে। কেরিয়ারের গোড়ার দিকে ভালো-খারাপ সব ক্ষেত্রেই হার্দিক নিয়মিত পাশে পেয়েছেন রোহিতকে। আইপিএলের মত বড় মঞ্চে তরুণ অলরাউন্ডারকে নিয়মিত সুযোগ দিয়ে মানিয়ে নিতে সাহায্য করেছিলেন রোহিত। হার্দিকের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পিছনে রোহিতের অবদান নেহাৎ কম নয়।
২০২২ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ছেড়েছিলেন হার্দিক (Hardik Pandya)। বেশী অর্থ ও অধিনায়কত্ব লাভের আশাতেই যোগ দিয়েছিলেন গুজরাত টাইটান্স দলে। দুই বছর গুজরাতে কাটিয়ে ফের তিনি প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলেই। মুম্বইতে ফিরে হার্দিক হাত বাড়িয়েছেন রোহিতের আসনের দিকেই। এক দশক মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক ছিলেন হিটম্যান। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহল সূত্রে খবর প্রত্যাবর্তনের শর্ত হিসেবে অধিনায়কের মুকুট দাবী করেছেন হার্দিক। তাঁর সেই শর্ত মেনেও নিয়েছে মুম্বই কর্তৃপক্ষ। যে রোহিতের হাত ধরে উত্থান হার্দিকের, সেই রোহিত’ই (Rohit Sharma) এখন হার্দিকের কারণে মুম্বই দলে হয়েছেন ব্রাত্য।
শুভমান গিল-ঈশান কিষণ-
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকবেন শুভমান গিল (Shubman Gill) ও ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)। ভারতীয় ক্রিকেটের দুই উঠতি নক্ষত্র মাঠের বাইরে একে অপরের খুব ভালো বন্ধু। কিন্তু বাইশ গজের আঙিনায় শুভমানের কারণেই বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে ঈশান কিষণের (Ishan Kishan) কেরিয়ার। শুভমান ও ঈশান দুজনেই ওপেনার হিসেবে খেলতে পছন্দ করেন। কিন্তু বর্তমানে রোহিত শর্মার সাথে ইনিংসের গোড়াতে শুভমানকেই (Shubman Gill) প্রথম পছন্দ হিসেবে দেখছেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। গত বছর একদিনের ক্রিকেটে ২৯ ম্যাচে ১৫৮৪ রান করেছেন শুভমান। করেছেন ৫টি শতরান ও ৯টি অর্ধশতক। সব ধরণের ক্রিকেট মিলিয়ে ২১৫৪ রান করেছেন তিনি। হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আপাতত তিনিই যে ভারতের ওপেনার হিসেবে থাকবেন, তা এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট।
গতবছরের শেষের দিকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ২১০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)। তার পরেও শুভমান গিলের কারণেই ভারতীয় দলের ওপেনার হিসেবে জায়গা পাকা হয় নি তাঁর। এরপর ঈশানকে পাঁচ নম্বরে খেলিয়ে দেখতে চেয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে ৮২ রানের কার্যকরী ইনিংস ছাড়া বিশেষ সাফল্য পান নি তিনি। রোহিত শর্মার বয়স ৩৭ ছুঁইছুঁই হলেও পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে ভালো ছন্দে আছেন তিনি। টি-২০তে শুভমানের (Shubman Gill) সঙ্গী ওপেনার হিসেবে যশস্বী জয়সওয়াল ও ঋতুরাজ গায়কোয়াড়কে ব্যবহার করছে দল। অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেউ ঈশান কিষণের।
কুলদীপ যাদব-যুজবেন্দ্র চাহাল-
ভারতীয় ক্রিকেটে কুল-চা জুটি নামে একসময় জনপ্রিয় হয়েছিলেন কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav) ও যুজবেন্দ্র চাহাল। অধিনায়ক হিসেবে মহেন্দ্র সিং ধোনি সরে যাওয়ার পর থেকেই ভেঙেছে কুল-চা জুটি। টিম কম্বিনেশনের কারণে দুই রিস্ট স্পিনার খেলানো এখন আর সম্ভব হচ্ছে না টিম ইন্ডিয়ার। অভিজ্ঞতার নিরিখে সিনিয়র হলেও সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়েই পড়েছেন যুজবেন্দ্র চাহাল (Yuzvendra Chahal)। উত্তরপ্রদেশের কুলদীপ যাদব’কে সীমিত ওভারের দুই ফর্ম্যাটেই ব্যবহার করার কথা ভাবছেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। চলতি বছরে ৩৯ ম্যাচে ৬৩ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৩০ একদিনের ম্যাচে নিয়েছেন ৪৯ উইকেট। ৯ টি-২০তে নিয়েছেন ১৪ উইকেট।
কুলদীপ (Kuldeep Yadav) যখন বাইশ গজে ফুল ফোটাচ্ছেন, তখন বাদের খাতায় নাম লিখিয়েছেন হরিয়ানার চাহাল। ২০২৩ সালে একদিনের ক্রিকেট ও টি-২০ মিলিয়ে মাত্র ১১ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এর মধ্যে পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচের সংখ্যা মাত্র ২। মোট আন্তর্জাতিক উইকেট সংখ্যা ১২। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মত বড় প্রতিযোগিতায় ভাবা হয় নি চাহালের নাম। টি-২০তে ভারতের সফলতম বোলার হলেও অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কুড়ি-বিশের খেলাতেও ছিলেন না তিনি। কুলদীপের সাফল্যই ‘পথের কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে চাহালের (Yuzvendra Chahal) সামনে।