TOP 3: টিম ইন্ডিয়ার ফোকাসে এখন টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। এগারো বছর আইসিসি আয়োজিত কোনো টুর্নামেন্টে সেরার শিরোপা জেতে নি দল। কুড়ি-বিশের বিশ্বখেতাব হাতের মুঠোয় ধরার সুযোগ আসে নি ১৭ বছর। জোড়া আক্ষেপ একবারেই কাটাতে চায় ভারতীয় দল। ২০২২ সালে সেমিফাইনালে পৌঁছেও হারতে হয়েছিলো ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তারপর ২০২৩-এ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) ও ওডিআই বিশ্বকাপের (ICC World Cup) ফাইনালেও স্বপ্ন ভেঙেছে ভারতের। এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত হতে চলা টুর্নামেন্টকে ঘিরেই নতুন করে আশার আলো দেখছেন সমর্থকেরা। ৫ জুন থেকে অভিযান শুরু করছে ‘মেন ইন ব্লু।’ ইতিমধ্যে প্রস্তুতি সারতে নিউ ইয়র্কে পা রেখেছে দল। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid) নোটবুকে সম্ভবত লেখা হয়ে গিয়েছে প্রথম এগারোর নাম। সেখানে জায়গা হয় নি তিন তারকার।
Read More: T20 World Cup 2024, IND vs BAN Warm Up Match: ভেস্তে যেতে চলেছে ভারত-বাংলাদেশের ওয়ার্ম আপ ম্যাচ, ভিলেন হতে প্রস্তুত বৃষ্টি !!
যুজবেন্দ্র চাহাল-
টিম ইন্ডিয়ার (Team India) হয়ে টি-২০ ক্রিকেটে সফলতম বোলার যুজবেন্দ্র চাহাল (Yuzvendra Chahal)। ৮০ ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ৯৬ উইকেট। রয়েছেন ১০০ উইকেটের মাইলস্টোনের সামনে। তবে এখনও পর্যন্ত টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) একটি ম্যাচেও মাঠে নামার সুযোগ হয় নি তাঁর। ২০২১ সালে স্কোয়াডেই ছিলেন না। ২০২২-এর টুর্নামেন্টে স্কোয়াডে থাকলেও তাঁর বদলে রবিচন্দ্রণ অশ্বিনকে (Ravidhandran Ashwin) ব্যবহার করেছিলেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। গত বছরের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর থেকে ভারতীয় দলের হয়ে খেলেন নি হরিয়ানার লেগস্পিনার। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ না খেললেও আইপিএলের পারফর্ম্যান্সের ভিত্তিতে চাহালকে টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) দলে রাখা হয়েছে। কিন্তু মাঠে নামা সম্ভবত এবারও হচ্ছে না তাঁর।
চাহালের (Yuzvendra Chahal) থেকে কোচ দ্রাবিড় (Rahul Dravid) অগ্রাধিকার দিতে পারেন কুলদীপ যাদবকে (Kuldeep Yadav)। তিনি বাম হাতি লেগস্পিনার, যা বাড়তি সুবিধা দেয় কুলদীপকে (Kuldeep Yadav)। এছাড়াও সাম্প্রতিক ম্যাচগুলিতে চাহালকে বেহিসেবি রান খরচ করতে দেখা গিয়েছে। আইপিএলে (IPL) ১৫ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিলেও তিনি রান খরচ করেছেন ৯.৪১ ইকোনমি রেটে। অন্যদিকে কুলদীপ (Kuldeep Yadav) এবারের আইপিএলে ১১ ম্যাচ খেলে ১৬ উইকেট নিয়েছেন। ইকোনমি রেট’ও তাঁর অপেক্ষাকৃত কম-৮.৬৫। এছাড়াও গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ওয়ান ডে ও টি-২০ ম্যাচে দারুণ পারফর্ম’ও করেছিলেন কুলদীপ, যা এগিয়ে রাখছে তাঁকে।
সঞ্জু স্যামসন-
টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে এটাই সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) প্রথম বড় টুর্নামেন্ট। কেরলের ক্রিকেটার ২০১৫ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। কিন্তু নিজেকে মেলে ধরার সম্পূর্ণ সুযোগ কখনও পান নি তিনি। মাঝেমধ্যে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলেও টানা খেলে যেতে পারেন নি। এবার আইপিএলে (IPL) রাহস্থান রয়্যালস জার্সিতে ৫৩১ রান করার পর তাঁকে বাদ দেওয়ার আর সুযোগ ছিলো না অজিত আগরকারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটির কাছে। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে ঈশান কিষণ, কে এল রাহুলদের পিছনে ফেলে স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন সঞ্জু (Sanju Samson)। কিন্তু ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant) সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি পিছিয়েই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সড়ক দুর্ঘটিনার রেশ কাটিয়ে এবারের আইপিএলে কামব্যাক করেছেন ঋষভ (Rishabh Pant)। ব্যাট হাতে ভালো খেলেছেন। উইকেটের পিছনেও সাবলীল লেগেছে ঋষভকে। টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) সঞ্জুর বদলে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে সম্ভবত তাঁকেই দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ঋষভের (Rishabh Pant) পক্ষে যাচ্ছে তাঁর বাম হাতি হওয়া। যা ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে বৈচিত্র যোগ করবে। একই সাথে মিডল অর্ডারে পাঁচ বা ছয়ে ব্যাটিং করতে সাবলীল ঋষভ, পক্ষান্তরে সঞ্জুর সাফল্যের সিংহভাগ এসেছে টপ-অর্ডারে খেলে। টিম কম্বিনেশনের জন্য’ও তাঁকে বসিয়ে ঋষভকে খেলানো হতে পারে।
শিবম দুবে-
তালিকায় তৃতীয় নাম হতে পারে শিবম দুবের (Shivam Dube)। মুম্বইয়ের পেস বোলিং অলরাউন্ডার গত বছরের এশিয়ান গেমস দিয়ে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। আইপিএলে (IPL) চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) হয়ে দারুণ খেলার পর তাঁকে জাতীয় দল থেকে দূরে রাখতে পারেন নি নির্বাচকেরা। নতুন বছরের গোড়ায় আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে জোড়া অর্ধশতক করে সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কারও জিতেছেন তিনি। স্পিনের বিরুদ্ধে তাঁর বড় শট খেলার দক্ষতার জন্য শিবমকে টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) দলেও জায়গা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁকে প্রথম দলে নয়, বরং ব্যাক-আপ হিসেবেই দেখছে ভারতীয় শিবির।
শিবম সাধারণত নিজের সেরাটা ব্যাট হাতে দিতে পারেন চার নম্বরে খেলে। কিন্তু মূলপর্বের ম্যাচগুলিতে সেখানে খেলার সম্ভাবনা সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav)। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) বিকল্প হতে পারতেন শিবম (Shivam Dube)। কিন্তু দলের সহ-অধিনায়ককে বাইরে রেখে সম্ভবত মাঠে নামবেন না কোচ দ্রাবিড়। হার্দিকের (Hardik Pandya) ফর্ম নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। কিন্তু তাঁর অভিজ্ঞতা ও বড় ম্যাচে জ্বলে ওঠার প্রবণতাকে মাথায় রেখে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ হিসেবে বরোদার ক্রিকেটারকেই ব্যবহার করতে চাইবে টিম ইন্ডিয়া। ফলে সুযোগ পাবেন না শিবম দুবে। টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) সময় কাটবে রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই।