Team India: ২০২৩-এর শেষটা ভালো হয় নি ভারতীয় দলের। নভেম্বরে বিশ্বকাপ হারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিলো দল। সেখানে টি-২০ ও একদিনের ক্রিকেটে সাফল্য এলেও বক্সিং ডে টেস্টে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে মাত্র তিন দিনের মধ্যে টেস্ট হেরে বসেছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। হারতে হয়েছিলো ইনিংস ও ৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে। প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছিলো দলের পারফর্ম্যান্স নিয়ে। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত স্লো ওভার রেটের জন্য শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিলো গোটা দলকে। ১০ শতাংশ ম্যাচ ফি’র সাথে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) পয়েন্ট তালিকা থেকেও কাটা গিয়েছিলো দুই পয়েন্ট।
সেঞ্চুরিয়নের ব্যর্থতা অবশ্য নতুন বছরের শুরুতেই ঢেকে ফেলেছে ভারতীয় দল। কেপ টাউনের নিউল্যান্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পেস ব্যাটারির দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের সুবাদে স্বাগতিক দেশকে রীতিমত উড়িয়ে দিয়েছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। টেস্টের ইতিহাসে ক্ষুদ্রতম ম্যাচে মাত্র দেড় দিনেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিধ্বস্ত করে ৭ উইকেটে টেস্ট ম্যাচ জিতেছে তারা। প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সিরিজ জয়ের প্রত্যাশা ছিলো ভারতের। তা না হলেও প্রাপ্তির ভাঁড়ার পূর্ণ হলো অনেকখানি। বল হাতে নজর কাড়লেন মহম্মদ সিরাজ, জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah), মুকেশ কুমার’রা। রানের মুখ দেখলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। টেস্ট ক্রিকেটে একরকম পুনর্জীবন পেলেন কে এল রাহুল (KL Rahul)। ব্যাটিং পজিশন বদলাতেই মিললো সাফল্য।
Read More: IND vs AFG: আফগানিস্তান সিরিজে ইশান-শ্রেয়াসের সুযোগ না পাওয়ার আসল কারণ এল সামনে, জানলে চোখ উঠবে কপালে !!
মিডল অর্ডারে খেলে সফল হলেন রাহুল-
গত কয়েকটা মাস কঠিন পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিলো কে এল রাহুল’কে (KL Rahul)। ব্যাট হাতে চেনা ছন্দের ধারেপাশেও ছিলেন না তিনি। আইপিএল চলাকালীন চোট’ও পেয়েছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডে অস্ত্রোপচারের পর বেঙ্গালুরুরু ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে (NCA) দীর্ঘ সময় রিহ্যাব করার পর টিম ইন্ডিয়াতে (Team India) ফিরেছেন তিনি। কেরিয়ারের অধিকাংশ সময়েই ওপেনার হিসেবে খেলেছিলেন কে এল রাহুল। কিন্তু চোট সারিয়ে ফেরার পর তাঁর স্থান হয়েছে মিডল অর্ডারে। পাঁচ নম্বরে খেলতে নেমে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে (ICC World Cup 2023) ভালো পারফর্ম করেছিলেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপে শতরান করেছিলেন। বিশ্বকাপেও ৭৫ গড় সহ ৪৫২ রান করেন তিনি। সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটের পর টেস্টের আসরেও ওপেনিং থেকে মিডল অর্ডারে নেমে সাফল্য পেলেন তিনি।
টেস্টে ওপেন করতে নেমে কে এল রাহুলের (KL Rahul) শেষ দশ ইনিংসে রান সংখ্যা ছিলো যথাক্রমে ৮,১২,১০,২২,২৩,১০,২,২০,১৭ এবং ১। ব্যাটিং গড় ছিলো মাত্র ১২.৫০। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির শেষ দুই টেস্ট থেকে বাদ’ও পড়েন তিনি। হারিয়েছিলেন সহ-অধিনায়ক তকমা’ও। ২০২৩-এর শেষে এসে ছন্দ খুঁজে নিলেন তিনি। সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কের কঠিন উইকেটে ভারতের হয়ে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিনি। এক প্রান্তে যখন পরপর উইকেট হারাচ্ছিলো দল, তখন অন্যপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করেন তিনি। রাহুলের ১০৭ বলে ১০১ রানের ইনিংসের সুবাদেই ২৪৫ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পেরেছিলো দল। সেই ম্যাচটি হারলেও মিডল অর্ডারে রাহুলের (KL Rahul) জমাট পারফর্ম্যান্স মন ভরিয়েছিলো ক্রিকেটজনতার। ওপেনিং নয়, মধ্যক্রমেই নিজের সেরাটা দিতে পারবেন কর্ণাটকের ক্রিকেটার, সেঞ্চুরিয়নের পারফর্ম্যান্সের পর মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।