সতেরো বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয় টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) জিতলো ভারতীয় দল (Team India)। গত শনিবার বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে তৈরি হলো ইতিহাস। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে টিম ইন্ডিয়া জয় ছিনিয়ে নিলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। টসে জিতে প্রথম ব্যাটিং করে ভারত। প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে তারা স্কোরবোর্ডে যোগ করে ১৭৬ রান। তাড়া করতে নেমে ক্যুইন্টন ডি কক ও হেনরিখ ক্লাসেন তাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন জয়ের দিকে। চাপের মুহূর্তে জ্বলে ওঠেন বোলাররা। পরপর উইকেট নিয়ে ম্যাচের রাশ আবার তুলে দেন ‘মেন ইন ব্লু’র হাতে। অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে ট্রফি জিতে নেয় ভারত। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এই জয়ে আবেগের বিস্ফোরণ ভারতীয় সাজঘরে। সাফল্যের সোনালী আলো গায়ে মেখে ইতিমধ্যে আংশিক অবসর নিয়েছেন কোহলি, রোহিত, জাদেজারা। শীঘ্রই সরতে পারেন ঋষভ পন্থ’ও (Rishabh Pant)।
Read More: “এই স্মৃতিটা রয়ে যাবে…” দ্রাবিড়ের চোখে জল, বিশ্বকাপ জিতেই কোচের দায়িত্ব ছাড়লেন ‘দ্য ওয়াল’ !!
সরতে হতে পারে ঋষভ পন্থ’কে-
টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) পর থেকে এক নতুন যুগ শুরু হতে চলেছে ভারতীয় দলে। শীঘ্রই নতুন কোচ হিসেবে সম্ভবত দায়িত্ব নিতে চলেছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। তাঁর আমলে সম্ভবত টিম ইন্ডিয়াতে নিয়মিত তকমা ঘুচতে চলেছে ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant)। চোট সারিয়ে মাঠে ফেরার পর তিনিই তিন ফর্ম্যাটে নিয়মিত হবেন বলে মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সদ্যসমাপ্ত টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup) সেরা ছন্দে দেখা যায় নি তাঁকে। একমাত্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪২ রান ছাড়া বিশেষ উল্লেখযোগ্য কোনো ইনিংসও খেলেন নি। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের মত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে যথাক্রমে ০ ও ৪ রান। ‘নো-ননসেন্স’ নীতিতে গম্ভীর ছন্দ হারানো ঋষভকে খুব বেশী সুযোগ দেবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই কারণেই অনেকেই বলছে অকালে শেষ হয়ে যেতে পারে তাঁর কেরিয়ার।
গম্ভীরের পছন্দের তালিকায় কে এল রাহুল-
উইকেটরক্ষক-ব্যাটার পজিশন নিয়ে এমনিতেই রয়েছে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতা। ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant) সাথে দৌড়ে রয়েছেন ধ্রুব জুড়েল, ঈশান কিষণ’রা। এছাড়াও রয়েছেন কে এল রাহুল। গৌতম গম্ভীরের অত্যন্ত পছন্দের ক্রিকেটার তিনি। যখন লক্ষ্য সুপারজায়ান্টসের মেন্টর ছিলেন গম্ভীর (Gautam Gambhir), তখন অধিনায়ক হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন কর্ণাটকের ক্রিকেটারকেই। বর্তমানে ওডিআই ক্রিকেটে উইকেটের পিছনে দাঁড়ালেও টি-২০ ও টেস্টে নিয়মিত উইকেটকিপিং করেন না রাহুল। কিন্তু বরাবর ব্যতিক্রমী স্ট্র্যাটেজিতে বিশ্বাসী গম্ভীরকে রাহুলকে (KL Rahul) দিয়েই বাকি দুই ফর্ম্যাটেও উইকেটরক্ষা করাতে পারেন। সেক্ষেত্রে পিচের কন্ডিশন অনুযায়ী একজন অতিরিক্ত ব্যাটার বা বোলার ব্যাবহার করার সুযোগ পাবেন তিনি। এই সুযোগ হয়ত ছাড়তে চাইবেন না ‘গুরু গম্ভীর।’ ফলে বাইরেই থাকতে হবে ঋষভকে।
গম্ভীর জমানায় সুযোগ পাবেন অনেক নতুন মুখ-
তারুণ্যকে বরাবরই প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পরেও সেই নীতিতেই আস্থা রাখতে পারেন। টি-২০ দল থেকে ইতিমধ্যেই সিনিয়রদের সরে যাওয়ার হিড়িক পড়েছে। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা (Rohit Sharma), রবীন্দ্র জাদেজারা অবসর ঘোষণা করে দিয়েছেন। ২০২৬-এর টি-২০ বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে আগামী দুই বছরে একঝাঁক নতুন মুখকে সুযোগ দিতে পারেন গম্ভীর। তাঁদের থেকেই বেছে নিতে পারেন পরবর্তী টুর্নামেন্টের স্কোয়াড। অভিষেক শর্মা, রিয়ান পরাগ, তুষার দেশপাণ্ডে’রা (Tushar Deshpande) ইতিমধ্যেই ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলের। গম্ভীর জমানায় নিয়মিত হতে পারেন তাঁরা। এছাড়া নজর থাকবে হর্ষিত রাণা (Harshit Rana), বৈভব আরোরা, অঙ্গকৃষ রঘুবংশীদের দিকে। আইপিএলে এই তরুণদের সাথে দারুণ কাজ করেছেন গম্ভীর। চাইবেন জাতীয় দলেও তাঁদের প্রতিষ্ঠা দিতে।