২০০৭ সালে প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) জিতেছিলো টিম ইন্ডিয়া। এরপর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে দ্বিতীয় সাফল্যের জন্য। শেষমেশ ক্যালেন্ডারের হিসেবে সতেরোটা বছর কাটার পর ঈপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলো ‘মেন ইন ব্লু।’ ২০১৪তে ফাইনালে পৌঁছেও ট্রফি স্পর্শ করার সৌভাগ্য হয় নি। ২০১৬ ও ২০২২ সালে আশা জাগিয়ে শুরু করলেও থামতে হয়েছিলো সেমিফাইনালে। ২০২৪ সালে সব প্রতিকূলতাকে জয় করে শেষমেশ অন্তিম বাধাটুকুও পেরিয়ে গেলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma), বিরাট কোহলিরা (Virat Kohli)। বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালের বাইশ গজে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলো ভারত। নির্ধারিত ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে যোগ করে ১৭৬ রান। রুদ্ধশ্বাস লড়াইতে একটা সময় পিছিয়ে পড়লেও শেষমেশ স্নায়ুর চাপ ধরে রেখে ৭ রানে জয় এনে দেন বোলাররা।
Read More: IND vs ZIM: বিরাট রদবদল ভারতীয় দলে, ‘ওয়াইল্ড কার্ড’ এন্ট্রি গৌতম গম্ভীরের পছন্দের তারকার !!
ভারতের জয়ের অন্যতম নায়ক হার্দিক-
এবারের টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) জয়ের নেপথ্যে যাঁদের অবদান সবচেয়ে বেশী অনস্বীকার্য তাঁদের মধ্যে সামনের সারিতেই থাকবেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। চোট, অফ ফর্মে জর্জরিত ছিলেন তিনি। আইপিএল ভালো কাটে নি। পড়তে হয়েছিলো সমালোচনার মুখে। নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করার জন্য যে তিনি বেছে নিলেন টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) মঞ্চকে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপরাজিত অর্ধশতক বা অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ক্যামিও ভারতকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছে। বল হাতেও পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বড় ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। এমনকি ফাইনালেও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা হেনরিখ ক্লাসেনকে (Heinrich Klaasen) ফেরান তিনিই। শেষ ওভারে চাপের মুখে তুলে নেন আরও ২ উইকেট। গোটা টুর্নামেন্টে ১১ উইকেট ও ১৪৪ রান করে ভারতের এক্স-ফ্যাক্টর তিনিই।
ট্রফি জিতে আনন্দাশ্রু হার্দিকের-
গত ওডিআই বিশ্বকাপ চলাকালীন গোড়ালিতে চোট পান হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। দীর্ঘ রিহ্যাবের পর মাঠে ফিরেছিলেন আইপিএলে (IPL)। কিন্তু রোহিত শর্মা’কে সরিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তাঁকে অধিনায়ক করায় সমর্থকদের রোষানলে পড়েন তিনি। মাঠে কটাক্ষ, কটূক্তির বন্যার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। মুখ বুজে সহ্য করে গিয়েছেন হার্দিক। টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) জেতার পর এতদিনের জমে থাকা অভিমান আগ্নেয়গিরির লাভার মত ফেটে বেরোলো যেন। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “আমি অনেক সহ্য করেছি। যখন কান্না পেয়েছে, কাঁদিনি। লোকজন’কে দেখাতে চাই নি ভেতরের কষ্ট’টা। আমার কঠিন সময়ে যাঁরা খুশি হচ্ছিলেন, (কেঁদে) তাঁদের আরও আনন্দ দিতে চাই নি। সেটা আমি কখনও দেবোও না। দেখুন ঈশ্বরের কি অশেষ করুণা, একটা অসামান্য সুযোগ আমার সামনে এনে দিলেন।”
হার্দিকের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে উঠছে প্রশ্ন-
মুম্বই সমর্থকদের কটাক্ষ, কটূক্তির পাশাপাশি গত এপ্রিল-মে মাস জুড়ে হার্দিককে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও নিরন্তর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। গুঞ্জন শোনা গিয়েছিলো যে স্ত্রী নাতাশা স্ট্যাঙ্কোভিচের (Natasa Stankovic) সাথে ডিভোর্স হতে চলেছে তাঁর। সার্বিয়ান মডেল ও অভিনেত্রী ইন্সটাগ্রামে নিজের নামের পাশ থেকে পান্ডিয়া পদবী সরিয়ে ফেলতেই এই জল্পনা শুরু হয় ক্রিকেটমহলে। টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) কারণে দিনকয়েক সেই আলোচনা অবশ্য খানিক ঝিমিয়ে পড়েছিলো, কিন্তু ট্রফি জয়ের পরেই ফের শুরু হয়েছে গুঞ্জন। প্রত্যেক ক্রিকেটারের পরিবারের সদস্যরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁদের। কিন্তু ব্যতিক্রম নাতাশা। তাঁর ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে ট্রফি হাতে হার্দিকের কোনো ছবিই চোখে পড়ে নি। তাহলে কি সম্পর্কের ভাঙন রোধ অসম্ভব? ডিভোর্স কি হচ্ছেই? প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে সকলে।