IND vs PAK: আরও একবার টিম ইন্ডিয়ার (Team India) বিরুদ্ধে পর্যুদস্ত পাকিস্তান (PAK)। ২০২১ সালে দুবাইরের মাঠে একবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে হারাতে সক্ষম হয়েছিলো ‘মেন ইন গ্রিন।’ এর আগে ও পরে সাদা বলের বিশ্বকাপে (World Cup) দুই ফর্ম্যাটেই যেখানেই মুখোমুখি হয়েছে দুই দল-জিতেছে ভারতই। নিউ ইয়র্কের নাসাও কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরুটা ভালোই করেছিলো পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাটিং করে ভারত থেমে গিয়েছিলো ১১৯ রানের মধ্যেই। ব্যাটিং ব্যর্থতা অবশ্য বোলিং দিয়ে ঢেকে ফেললো ‘মেন ইন ব্লু।’ নজর কাড়েন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah) ও হার্দিক পান্ডিয়া। আমেরিকার বিরুদ্ধে হেরে টি-২০ বিশ্বকাপে এমনিতেই চাপে ছিলো পাকিস্তান। ভারতের বিরুদ্ধে পরাজয় বিদায়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিলো তাদের।
শেষ কয়েকটি সাক্ষাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দাপট দেখিয়েছে টিম ইন্ডিয়াই (Team India)। ক্রমাগত হারতে হারতে দেওয়ালে পিঠ থেকে যাওয়া পাক শিবির বদলা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে আগামী বছরে। তাও আবার নিজেদের দেশের মাটিতেই। ২০২৩-এর ওডিআই বিশ্বকাপে (ICC World Cup) গ্রুপ পর্বে শীর্ষে ছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (ICC Champions Trophy) যোগ্যতা অর্জন করতে কোনো রকম সমস্যা হয় নি তাদের। আয়োজক হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আঙিনাতেই পড়শি দেশকে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন বাবর-রিজওয়ানরা (Mohammad Rizwan)। সাম্প্রতিক টুর্নামেন্টগুলিতে পাক দলের পারফর্ম্যান্স বিশেষ আশাপ্রদ নয়। আগামী বছরের মধ্যে ফর্মে ফেরাও ‘উইশলিস্টে’ থাকবে তাদের।
Read More: T20 World Cup: “ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো…” আমেরিকার বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয় ভারতের, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে নেটমাধ্যম !!
ভারতকে যেতেই হবে পড়শি দেশে-
গত বছরের এশিয়া কাপ (Asia Cup 2023) আয়োজিত হওয়ার কথা ছিলো পাকিস্তানে। কিন্তু পড়শি দেশে যেতে রাজী হয় নি টিম ইন্ডিয়া (Team India)। কোনো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ম্যাচ আয়োজনের দাবিতে অনড় ছিলো তারা। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ার পরেও ভেজে নি চিঁড়ে। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (ACC) সভায় নিজেদের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়ে নি ভারতীয় শিবির। একটা সময় ভারত-পাক কূটনৈতিক লড়াইয়ের কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো টুর্নামেন্টই। শেষমেশ প্রাক্তন পিসিবি প্রধান নাজম শেঠির (Najam Sethi) রাখা হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাবে সিলমোহর পড়ে। মাত্র ৪টি ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব পায় পাকিস্তান। ভারতের সবকটি ম্যাচসহ টুর্নামেন্টের নক-আউট পর্বের সম্পূর্ণটাই সরে যায় শ্রীলঙ্কায়।
ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসি’র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (Champions Trophy 2025) আয়োজিত হতে চলেছে পাকিস্তানে। মহসীন নকভির (Mohsin Naqvi) নেতৃত্বাধীন পিসিবির নতুন কর্মকর্তারা চাইছেন হাইব্রিড মডেল নয়, বরং সম্পূর্ণ টুর্নামেন্ট পাকিস্তানের মাটিতে আয়োজন করতে। ইতিমধ্যেই ভারতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে অবস্থানের কোনো রকম পরিবর্তনের ভাবনা নেই। ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে পাকিস্তানে যাবেন না কোহলি-রোহিতরা (Rohit Sharma)। বিসিসিআই-এর তরফে যে বাধা আসবে তা ভালোভাবেই জানে পাক বোর্ড। ইতিমধ্যেই তাই আইসিসি’র কাছে তদ্বির শুরু করেছে তারা। এসিসি’র মিটিং-এ ভারতের দাবীর কাছে মাথানত করলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন ঘিরে পিছু হটতে চায় না তারা।
IND vs PAK ম্যাচের ভেন্যু স্থির-
২০০৮-এর পর থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দল পা রাখে নি পাকিস্তানে। দুই দেশের মধ্যে শেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ (IND vs PAK) হয়েছে ২০১২-১৩ সালে। তারপর থেকে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যার জন্য নিয়মিত একে অপরের বিরুদ্ধে খেলে না দুই প্রতিবেশী। গত এশিয়া কাপে (Asia Cup 2023) শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডি ও কলম্বোতে সরে গিয়েছিলো ভারত বনাম পাকিস্তান (IND vs PAK) ম্যাচ। সব ঠিক থাকলে আগামী বছর প্রায় দেড় দশকের বিরতির পর পাকিস্তানের মাঠে দেখা যাবে ভারতের নীল জার্সি। ইতিমধ্যেই এই মেগা ম্যাচের মঞ্চ অবধি প্রস্তুত করে ফেলেছে পিসিবি। সূত্রের খবর যে ক্রিকেটের এল-ক্লাসিকোর জন্য লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামকে বেছে নেওয়া হয়েছে। জনপ্রিয় ক্রিকেট সম্পর্কীত ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ জানাচ্ছে ৭ থেকে ৮টি ম্যাচ খেলা হতে পারে লাহোরে।
পাকিস্তানের মাটিতে ২৭টি একদিনের ম্যাচ এখনও পর্যন্ত খেলেছে ভারত। হেড টু হেড পরিসংখ্যানে এগিয়ে রয়েছে ‘মেন ইন গ্রিন’ই। তারা জিতেছে ১৪টি ম্যাচ। দু’টি খেলার কোনো ফলাফল পাওয়া যায় নি। ২০২৫ সালেও এই পরিসংখ্যান আস্থা যোগাচ্ছে পাকিস্তানকে। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে একবারও ভারতকে হারাতে না পারলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইতিপূর্বে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছে তারা। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের ওভালে টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) হারিয়েই ট্রফি জিতেছিলো সরফরাজ খানের দল। দেশের মাটিতেও সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তির লক্ষ্যে তারা। তবে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত আইসিসি’র সিদ্ধান্তের উপরেই নির্ভর করছে সবকিছু। তারা পাকিস্তানের আবেদনে সাড়া দেবে নাকি শেষমেশ প্রভাবশালী বিসিসিআই-এর দাবীই মেনে নেবে তা জানতেই মুখিয়ে ক্রিকেটজনতা।