ভারতীয় দল এই মুহূর্তে ব্যস্ত টি-২০ বিশ্বকাপে (T20 World Cup)। জসপ্রীত বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya), আর্শদীপ সিং-দের দুর্দান্ত বোলিং পারফর্ম্যান্সের সুবাদে তিন ম্যাচ জিতে টুর্নামেন্টের সুপার এইট পর্বে পা রেখেছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। আগামী ২০ তারিখ থেকে শেষ আটের লড়াই শুরু হচ্ছে তাদের। প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে ২২ তারিখ ভারত মুখোমুখি হতে চলেছে পড়াশি বাংলাদেশের। প্রস্তুতি ম্যাচে টাইগার্সদের ইতিমধ্যেই হারিয়েছে ‘মেন ইন ব্লু।’
তারপর ২৪ তারিখ রয়েছে মহারণ-অস্ট্রেলিয়ার (AUS) বিপক্ষে মাঠে নামবে দল। বোলিং ছন্দে থাকলেও চিন্তা বাড়াচ্ছে ব্যাটিং। কোহলি (Virat Kohli), রোহিত’রা (Rohit Sharma) বিশেষ রান পান নি গ্রুপ পর্বে। শান্ত থেকেছে শিবম দুবে (Shivam Dube), রবীন্দ্র জাদেজার (Ravindra Jadeja) ব্যাট’ও। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে টানা তিন ম্যাচে বড় রান করে সিরিজ সেরা ক্রিকেটার হয়েছিলেন ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)। তবে এই মুহূর্তে দলে নেই তিনি। সুপার এইট পর্বে তাঁর অভাব অনুভূত হতে পারে ভারতের।
Read More: আফগানিস্তান ম্যাচের আগেই অবসর নিলেন এই খেলোয়াড়, সিদ্ধান্তে হতবাক ক্রিকেটবিশ্ব !!
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন ঈশান কিষণ-
গত বছরের ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মাঝপথে ঈশান কিষণ (Ishan Kishan) ভারতীয় বোর্ডের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ দেখিয়ে বিশ্রাম চান। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে তাঁকে বিরতি নিতে বাধা দেয় নি বোর্ড। কিন্তু দেশে ফেরার কিছুদিনের মধ্যেই ঈশানকে (Ishan Kishan) দেখা যায় দুবাইরে বর্ষবরণের পার্টিতে যোগ দিতে। এরপর তিনি অমিতাভ বচ্চন সঞ্চালিত একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে যোগ দেন বোর্ডকে না জানিয়েই। ক্রিকেট কর্মকর্তাদের তরফে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া দেন নি ঝাড়খণ্ডের তরুণ প্রতিভা। এরপর ভারতীয় দলে ফেরার জন্য তাঁকে রঞ্জিতে নিজেকে প্রমাণ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন জয় শাহ’রা। তাতেও রাজী হন নি ঈশান। জড়িয়েছিলেন বিতর্কে।
রঞ্জি না খেলে আইপিএলের প্রস্তুতি সারতে ঝাড়খণ্ড থেকে বরোদা উড়ে গিয়েছিলেন ঈশান। অনুশীলন শুরু করেন হার্দিক (Hardik Pandya) ও ক্রুনাল পাণ্ডিয়ার সাথে। বিসিসিআই-এর নির্দেশ অমান্য করায় কড়া শাস্তির মুখে পড়েছেন তিনি। গত বছজর কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সি-গ্রুপে ছিলেন তিনি। কিন্তু এবার তাঁকে ছেঁটে ফেলেছে বোর্ড। ঈশানের ভাগ্যাকাশে অন্ধকার ঘনিয়েছে আইপিএলের সুবাদেও। তিনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলেন। সেখানে এবার নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিলো রোহিত শর্মা ও হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) মধ্যে। রোহিতকে সরিয়ে হার্দিককে (Rohit Sharma) অধিনায়ক করা মানতে পারেন নি অনেকে। দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছিলো দল। জানা গিয়েছে যে হার্দিক (Hardik Pandya) শিবিরের অন্যতম মুখ ছিলেন ঈশান। সেই কারণেই জাতীয় দলের নেতা রোহিত চাইছেন না ঈশান ফিরুন টিম ইন্ডিয়াতে।
বাদ পড়েছেন শ্রেয়স আইয়ার’ও-
ঈশান কিষণের (Ishan Kishan) মতই জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে শ্রেয়স আইয়ারকে (Shreyas Iyer)। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের মাঝপথে ফর্ম হারিয়েছিলেন তিনি। তাঁকেও বিসিসিআই-এর তরফে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিলো ছন্দে ফিরতে রঞ্জি ট্রফি খেলার। কিন্তু গড়িমসি করছিলেন তিনি। চোটের অজুহাত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এনসিএ-র চিকিৎসকরা ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার পরেও মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি না খেলায় বোর্ডের রোষানলে পড়েন শ্রেয়স (Shreyas Iyer)। ড্যামেজ কন্ট্রোলে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল পরে খেললেও ততক্ষণে দেরী হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। কেন্দ্রীয় চুক্তির বি-গ্রেডে ছিলেন তিনি। বাদ দেওয়া হয় তাঁকে।
যদিও আইপিএল দিয়ে কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন শ্রেয়স আইয়ার। তাঁর অধিনায়কত্বেই এবার ট্রফি জিতেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়ার বিষয়টি যে তিনি ভালো চোখে দেখছেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন শ্রেয়স। এক ভিডিওতে তিনি জানিয়ে দেন, “আমি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলেছিলাম। তারপর খানিক বিশ্রাম নিয়ে নিজের শরীরের উপর কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিছু জায়গায় শক্তি বাড়াতে চেয়েছিলাম। কিছু যোগাযোগের ভুলে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যা আমার পক্ষে যায় নি। কিন্তু দিনের শেষে আমার হাতে ব্যাট সবসময়ই থাকবে। আমি কেমন পারফর্ম করবো, কি ট্রফি জিতবো, সেটাও আমারই হাতে রয়েছে।”