IPL 2024: আগামী ১৯ ডিসেম্বর দুবাইতে বসতে চলেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (IPL) সপ্তদশতম মরসুমের ‘মিনি’ নিলাম। ইতিমধ্যেই এই নিলামকে কেন্দ্র করে চড়তে শুরু করেছে উত্তেজনার পারদ। গতকাল দশ ফ্র্যাঞ্চাইজির রিলিজ ও রিটেনশন তালিকা প্রকাশের শেষ দিন ছিলো। সেইমত সবক’টি দলই জানিয়ে দিলো কাদের তারা আগামী মরসুমের জন্য ধরে রাখতে চায়, আর কাদের তারা চায় বাতিল করতে। ক্রিকেটারদের ‘রিলিজ’ করার পর যে অর্থ হাতে থাকবে দলগুলোর, তা ব্যবহার করে তারা আগামী নিলাম থেকে প্রয়োজনীয় ক্রিকেটার সংগ্রহ করতে চায় মার্চ বা এপ্রিলে মরসুম শুরু হওয়ার আগে।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) রিলিজ-রিটেনশন তালিকায় বেশ চমক দিয়েছে। তারা মোট ১১ জন ক্রিকেটারকে ছেড়ে দিয়েছে। বাংলার অলরাউন্ডার শাহবাজ আহমেদকে (Shahbaz Ahmed) ট্রেডিং পদ্ধতিতে পাঠিয়েছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ শিবিরে। বদলে নিয়েছে মায়াঙ্ক ডাগার’কে। এছাড়াও কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স থেকে ইতিমধ্যেই ট্রেডিং পদ্ধতিতে বেঙ্গালুরু শিবিরে যোগ দিয়েছেন ক্যামেরন গ্রিন (Cameron Green)। যে ১১ জন’কে তারা বাতিল করেছে, তার মধ্যে এমন ৩ ম্যাচ উইনারের নাম’ও সামিল রয়েছে, যাঁরা নিজেদের দিনে একাই ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখেন। তাঁদের বাদ দিয়ে আদতে দলকে ক্ষতির সম্মুখীনই করেছেন কর্তারা।
Read More: IPL 2024: রোহিত শর্মার উপরেই গুরু দায়িত্ব দিয়ে আসন্ন আইপিএলে নামতে চলেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, ঘরে ফিরলেন পান্ডিয়া !!
ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা-
শ্রীলঙ্কার টি-২০ সুপারস্টার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (Wanindu Hasaranga) ২০২২ সালে ১০.৭৫ কোটি টাকার বিনিময়ে দলে সামিল করেছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। ২০২২-এ প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছিলো বেঙ্গালুরু। শেষমেশ রাজস্থানের বিরুদ্ধে হেরে ফাইনাল থেকে এক ধাপ আগে যাত্রা শেষ হয় তাদের। সেই সাফল্যের অন্যতম কাণ্ডারী হয়েছিলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (Wanindu Hasaranga)। ১৬ ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় মরসুমটা অবশ্য আশানুরূপ যায় নি তাঁর। তিনি দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন দেরীতে। আট ম্যাচ খেলে ৯টির বেশী উইকেট পান নি।
প্রথম মরসুমে যেখানে তাঁর বোলিং গড় ১৭’র নীচে ছিলো, তা দ্বিতীয় মরসুমে প্রায় ২৯ ছুঁয়েছে। এক মরসুমের ব্যর্থতার পর তাঁকে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবে নি বেঙ্গালুরু (RCB)। ছেঁটে ফেলেছে স্কোয়াড থেকে। বর্তমানে চোটের কারণে মাঠ থেকে দূরে রয়েছেন হাসারাঙ্গা। কিন্তু আইপিএলের আগে চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার কথা। সেরা ছন্দের হাসারাঙ্গা কতটা ভয়ঙ্কর তার প্রমাণ তিনি এই বছরই দিয়েছেন লঙ্কা প্রিমিয়ার লীগে। ব্যাটে-বলে ঝড় তুলেছিলেন। হাসারাঙ্গার দক্ষতার কথা মাথায় রেখে তাঁকে আরও একটা সুযোগ দিয়ে দেখা উচিৎ ছিলো বেঙ্গালুরুর (RCB)।
জশ হ্যাজেলউড-
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) ২০২২-এর মেগা নিলামে অস্ট্রেলীয় পেসার জশ হ্যাজেলউডকে (Josh Hazlewood) দলে সামিল করেছিলো ৭ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। প্রথম মরসুমে সাদা বল হাতে অনবদ্য পারফর্ম করেন হ্যাজেলউড। মাত্র ১২ ম্যাচে খেলেই তুলে নেন ২০ উইকেট। দ্বিতীয় মরসুমে চেনা ছন্দে দেখা যায় নি তাঁকেও। পায়ের চোটের কারণে প্রায় গোটা মরসুমেই মাঠের বাইরে বসে কাটাতে হয়েছে তাঁকে। ৩টি ম্যাচ খেলে নিতে পেরেছেন ৩টি উইকেট।
ষোড়শ আইপিএলে সফল না হওয়ায় আগামী মরসুমের স্কোয়াড থেকে তাঁকে ছেঁটে ফেলেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স (RCB)। এই সিদ্ধান্তও কতদূর সঠিক তা উঠছে প্রশ্নচিহ্ন। চোট-আঘাত এবং অফ ফর্ম বর্তমানে ঝেড়ে ফেলেছেন তিনি। সদ্যই ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জিতেছেন একদিনের বিশ্বকাপ। নিয়েছেন ১৬ উইকেট’ও। বেঙ্গালুরুর প্রথম একাদশে সুযোগ পেলে মহম্মদ সিরাজের সাথে পাওয়ার প্লে’তে তাঁর বোলিং জুটি ঘাতক হয়ে উঠতে পারত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
হর্ষল প্যাটেল-
মহম্মদ সিরাজ ছাড়া দলের প্রায় সকল প্রধান বোলারকেই এবার রিলিজ করে দিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ছাঁটাইয়ের তালিকায় রয়েছেন হর্ষল প্যাটেল’ও (Harshal Patel)। লম্বা সময় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু জার্সিতে খেলেছেন হর্ষল। এর আগে তাঁকে একবার ছেড়ে দিলেও ১০.৭৫ টাকার বিশাল মূল্যে দলে ফিরিয়েছিলো বিরাট-দু প্লেসিদের ফ্র্যাঞ্চাইজি। বেঙ্গালুরু জার্সিতে ধারাবাহিক পারফর্ম’ও করেছেন তিনি।
২০২১ সালে ১৫ ম্যাচে ৩২ উইকেট নিয়ে এক আইপিএল মরসুমে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছিলেন তিনি। জিতেছিলেন পার্পল ক্যাপ। ১৫’র নীচে ছিলো বোলিং গড়। ২০২২ মরসুমে ২১ গড়ে ১৯ উইকেট নিয়েছিলেন। গত মরসুমটা ভালো যায় নি হর্ষলের। ১৪ উইকেট পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু ইকোনমি রেট এবং বোলিং গড় দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৯.৬৬ এবং ৩২.৪৩। যার কারণে বেঙ্গালুরু ছেড়ে দিয়েছে তাঁকে। বিশেষজ্ঞদের মত ডেথ ওভার স্পেশ্যালিস্ট হর্ষলের (Harshal Patel) পাশে থাকা প্রয়োজন ছিলো বেঙ্গালুরুর।