IPL 2024: এগিয়ে আসছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (IPL) নতুন মরসুম। আগামী ২২ মার্চ থেকে শুরু ব্যাট-বলের দ্বৈরথ। এইবার সকলের নজর থাকবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) দিকে। দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা প্রায় এক দশক ধরে রয়েছে ট্রফিহীন। ব্যর্থতার ধারাবাহিক চিত্র বদলাতে এবার প্রাক্তন অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরকে (Gautam Gambhir) মেন্টর পদে নিয়োগ করেছে কলকাতা। গত ১৯ ডিসেম্বরের মিনি নিলামেও বিপুল অর্থ খরচ করতে দেখা গিয়েছে বেগুনি-সোনালী শিবিরকে। তার প্রভাব দলের পারফর্ম্যান্সে কতদূর পড়ে তা নিয়ে রয়েছে আগ্রহ। আইপিএলের প্রথম পর্বের যে সূচি প্রকাশিত হয়েছে তা অনুযায়ী ২২ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিলের মধ্যে ৩টি ম্যাচ রয়েছে কলকাতার। তৃতীয় খেতাবের লক্ষ্য এগোতে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই সেরা ছন্দ খুঁজে নিতে চান খেলোয়াড়রা। আসন্ন মরসুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) তুরুপের তাস পারে এই তিন ক্রিকেটারের হাতে।
Read More: “ভুলে যেও না তোমাদের বাড়িতেও মা-বোন…”, নেটিজেনদের ওপর রেগে আগুন ধনশ্রী, দিলেন কড়া জবাব !!
শ্রেয়স আইয়ার-
গত মরসুমে পিঠের বালজিং ডিস্কের সমস্যার কারণে আইপিএল (IPL) খেলতেই পারেন নি শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)। থাকতে হয়েছিলো মাঠের বাইরে। অস্ত্রোপচারও করাতে হয়ে লন্ডনে। এই মরসুমে মাঠে নামতে মুখিয়ে থাকবেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে বিতর্কের কেন্দ্রে জায়গা করে নিয়েছেন শ্রেয়স। অফ ফর্মের কারণে বাদ পড়েছিলেন টেস্ট সিরিজ থেকে। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে রাজী না হওয়ায় তাঁকে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই। জয় শাহ, রজার বিনিদের জবাব দেওয়ার তাগিদ থাকবে শ্রেয়সের। সামনেই রয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। তার আগে জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হিসেবেও আইপিএল-কে ব্যবহার করতে চাইবেন তিনি।
ছড়িয়েছিলো তাঁর চোটের জল্পনাও। যদিও বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে তেমন কিছু পান নি। রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল খেলেছেন শ্রেয়স (Shreyas Iyer)। আইপিএলের প্রস্তুতি সারতে পা রেখেছেন কলকাতাতেও। গত মরসুমে মাঠের বাইরে থাকা সত্ত্বেও শ্রেয়সের উপর আস্থা হারায় নি নাইট রাইডার্স। তাঁর হাতেই ফেরানো হয়েছে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। সেই আস্থার প্রতিদান দিতেও বদ্ধপরিকর থাকবেন মুম্বইয়ের ক্রিকেটার। মেন্টর গৌতম গম্ভীরের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দলকে খেতাব জেতানোর উদ্দেশ্যে নিজের সেরাটুকু দেওয়ার চেষ্টা করবেন ডান হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটার।
মিচেল স্টার্ক-
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকতে পারেন মিচেল স্টার্ক (Mitchell Starc)। ২০১৫ সালে শেষবার আইপিএলে (IPL) অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তার প্রায় এক দশক পর ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ লীগে ফিরতে চলেছেন তিনি। মাঝে ২০১৮ সালের নিলামে নাম দিয়েছিলেন। ৯ কোটির বেশী মূল্যে অজি বাম হাতি পেসারকে দলে নিয়েছিলো কলকাতা নাইট রাইডার্স। কিন্তু সেই যাত্রা আর খেলা হয় নি তাঁর। চোটের কারণে শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার করে নেন। ২০২৪ আইপিএলের নিলামে ফের একবার নাইট কর্তৃপক্ষ আস্থা রেখেছেন স্টার্কের উপর। পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় বেগুনি-সোনালী শিবিরে নাম লিখিয়েছেন তিনি। বিশাল প্রাইস ট্যাগের প্রতি সুবিচার করাই লক্ষ্য থাকবে তাঁর।
এছাড়াও আইপিএলে (IPL) কলকাতার হয়ে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেওয়ার আরও দুটি কারণ রয়েছে স্টার্কের (Mitchell Starc) কাছে। প্রথমত নাইট রাইডার্সের পেস বোলিং বিভাগ বেশ অনভিজ্ঞ। লকি ফার্গুসন, উমেশ যাদবদের এই বছর ছেড়ে দিয়েছে দল। রয়েছেন বৈভব আরোরা, চেতন সাকারিয়াদের মত তরুণ তুর্কিরা। তাঁদের ‘নেতা’ হিসেবে দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে স্টার্ককে। এছাড়া সামনেই রয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ। গত কয়েক মাসে বিশেষ টি-২০ ক্রিকেট খেলেন নি স্টার্ক। দুই মাসের আইপিএলে কলকাতার (KKR) বেগুনি-সোনালী জার্সিতে ভালো পারফর্ম্যান্স করে কুড়ি-বিশের বিশ্বযুদ্ধের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তোলার চ্যালেঞ্জ থাকবে তাঁর সামনে।
রিঙ্কু সিং-
নাইট রাইডার্স’কে দশ বছর পর ট্রফি জেতাতে মরিয়া লড়াই করতে দেখা যেতে পারে রিঙ্কু সিং-কে (Rinku Singh)। উত্তরপ্রদেশের ক্রিকেটার বেশ কয়েক বছর রয়েছেন কেকেআর সাজঘরে। হয়ে উঠেছেন ‘ঘরের ছেলে।’ গত মরসুমে দল ভালো পারফর্ম করতে পারে নি। দশ দলের লীগ তালিকায় শেষ করেছিলো সপ্তম স্থানে। কিন্তু আলাদা করে নজর কেড়ে নিয়েছিলো রিঙ্কুর পারফর্ম্যান্স। প্রায় ৬০ ব্যাটিং গড়ে ৪৭৪ রান করেছিলেন তিনি। মেরেছিলেন ২৯ ছক্কা। নাইট শিবিরে নীতিশ রানা, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, আন্দ্রে রাসেলদের পিছনে ফেলে হয়েছিলেন দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। গুজরাতের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে পাঁচ ছক্কা মেরে জিতিয়েছিলেন দল’কে
২০২৩ আইপিএলের পর বিস্তর বদল এসেছে রিঙ্কুর (Rinku Singh) কেরিয়ারে। ভারতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয়েছে। খেলেছেন টি-২০ ও একদিনের ক্রিকেট। জিতেছেন এশিয়ান গেমসের স্বর্ণপদক। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া’র মত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অসামান্য সব ইনিংস এসেছে রিঙ্কুর ব্যাট থেকে। ফিনিশার হিসেবে এবারও কলকাতা নাইট রাইডার্সের বড় ভরসা রিঙ্কু। পাঁচ বা ছয় নম্বরে ব্যাট হাতে মাঠে নেমে দলের ত্রাতা হয়ে আসন্ন মরসুমেও উঠতে পারেন তিনি।