IPL 2024: ২০২২ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI) থেকে গুজরাত টাইটান্সে (GT) গিয়ে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। পরবর্তী দুই বছরে তিনি একবার দলকে ট্রফি দিয়েছেন, একবার করেছেন রানার্স-আপ। ২০২৪ আইপিএলের (IPL) আগে তাই যখন মুম্বই সিদ্ধান্ত নেয় হার্দিককে দলে ফেরানোর, তখন তাঁকে আগামীর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার আগে দুইবার ভাবেন নি নীতা আম্বানিরা (Nita Ambani)। কিন্তু সিদ্ধান্ত ফিরেছে ব্যুমেরাং হয়ে। গত মরসুমে প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জন করলেও এই বছর নতুন নেতা হার্দিকের অধীনে প্রথম দল হিসেবে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছে মুম্বই।
২০১৩ থেকে এক দশক দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। এনে দিয়েছেন পাঁচটি ট্রফি। যেভাবে আচমকা তাঁকে অপসারিত করা হয় হার্দিককে নেতা করার জন্য তা যথেষ্ট অপমানজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্রিকেটারদের অনেকেও নেতা পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে খুশি নন বলেই জানা গিয়েছে সংবাদমাধ্যম সূত্রে। হার্দিকের (Hardik Pandya) আচার-আচরণ, স্ট্র্যাটেজি নির্মাণ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে সাজঘরের অন্দরে। আইপিএল শুরুর দিনকয়েকের মধ্যে শোনা গিয়েছিলো দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে সাজঘরে। একদিনে রোহিত, সূর্য, বুমরাহ, তিলক বর্মার মত খেলোয়াড়রা। অন্যদিকে হার্দিক, ঈশান কিষণের মত তারকা। বিভেদ থাকলেও দ্বন্দ্বের খবর আসে নি এতদিন। এবার সামনে এলো তাও।
Read More:IPL 2024: দূরত্ব ভুলে কাছাকাছি বিরাট-সৌরভ, রবিবারের চিন্নাস্বামী দেখলো দুর্দান্ত মুহূর্ত !!
তিলক বর্মার সাথে দুর্ব্যবহার হার্দিকের-
গত ২৭ এপ্রিল অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দিল্লী ক্যাপিটালসের (DC) বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI)। জেক ফ্রেজার ম্যাকগার্কের (Jake Fraser McGurk) ব্যাটিং বিক্রমে শুরুতেই পিছু হটতে হয় মুম্বইকে। এরপর ঝড় তোলেন শে হোপ (Shai Hope) এবং ট্রিস্টান স্টাবসও (Tristan Stubbs)। নির্ধারিত ২০ ওভারে দিল্লী স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলে ২৫৭ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারালেও তারপর তিলক বর্মার (Tilak Varma) ব্যাটে লড়াইতে ফেরে মুম্বই। ৩২ বলে ৬৩ করেন তিনি। হার্দিক নিজেও ২৪ বলে ৪৬ করেন সেই ম্যাচে। ধুন্ধুমার ব্যাটিং করেন টিম ডেভিড’ও। তিনি ১৭ বলে ৩৭ করলেও ২৪৭ রানেই আটকে যায় মুম্বই। হারতে হয় ১০ রানে।
এই ম্যাচের পর সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় অধিনায়ক হিসেবে নিজে কোনো দায় নিতে চান নি হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। জানান রণনীতিতে কোনো রকম গলদ ছিলো না। বরং হারের জন্য আকারে-ইঙ্গিতে দায়ী করেন তরুণ তিলক বর্মাকেই। জানান, “বাম হাতি ব্যাটারদের অক্ষর প্যাটেলের বিরুদ্ধে আরও বেশী চড়াও হওয়া প্রয়োজন ছিলো।” ইশারা যে তিলকের (Tilak Varma) দিকেই তা বুঝতে অসুবিধা হয় নি কারও। সিনিয়র ক্রিকেটাররা জুনিয়রদের আগলে রাখেন, এমনটা দেখতেই অভ্যস্ত ক্রিকেটদুনিয়া। কিন্তু যেভাবে হার্দিক দায় ঠেলছেন, তা ভালোভাবে নেয় নি মুম্বই সাজঘরের একটা অংশ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে রীতিমত উত্তপ্ত বাদানুবাদ চলে এই নিয়ে। ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তারা, রোহিত শর্মাদের মত তারকাদের মধ্যস্থতা করতে হয় পরিস্থিতি শান্ত করতে।
হার্দিক পান্ডিয়ার পারফর্ম্যান্স হতাশাজনক-
মরসুম শুরুর আগে অনেক আশা নিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI) ফিরিয়েছিলো হার্দিক পান্ডিয়াকে (Hardik Pandya)। রোহিত শর্মার মত কিংবদন্তিকে সরিয়ে তুলে দেওয়া হয়েছিলো নেতার দায়িত্ব। কিন্তু বাইশ গজের যুদ্ধে বারবার ধরাশায়ী হয়েছেন তারকা অলরাউন্ডার। তাঁর অধীনে দল ১৩ ম্যাচের মধ্যে হেরেছে ৯টিতে। এখনও অবধি ৮ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে লীগ তালিকার নয় নম্বরে। ধুঁকতে থাকা দলের সাথে সাযুজ্য রেখেছে অধিনায়কের পারফর্ম্যান্স। তিনি ব্যাট হাতে ১৩ ম্যাচে করেছেন মাত্র ২০০। গড় ১৮.১৮। বোলিং পরিসংখ্যানও আহামরি নয়। নিয়েছেন ১১ উইকেট। গড় ৩২.৭৬, ইকোনমি রেট ১০.৫৯।