IPL 2024: গতকাল চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) ও দিল্লী ক্যাপিটালস (DC)। দুই শিবিরের কাছেই মহা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো এই খেলা। বেঙ্গালুরুকে আইপিএলের (IPL) প্লে-অফের দৌড়ে টিকে থাকতে গেলে জিততেই হত ম্যাচ। অন্য দিকে প্লে-অফের দৌড়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এবং নিজেদের নেট রান-রেট উপরের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য জয়ই একমাত্র রাস্তা ছিলো দিল্লীর (DC) কাছে। অধিনায়ক ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant) স্লো ওভার রেটের বিধি ভাঙার পর এমনিতেই পিছিয়ে ছিলো ক্যাপিটালস শিবির। গতকাল মাঠের মোকাবিলায় বেঙ্গালুরুর সাথে এঁটে উঠতে পারলো না তারা।
খেলা শুরুর আগে টসে জিতেছিলেন দিল্লীর স্ট্যান্ড-ইন অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল (Axar Patel)। তিনি প্রথমে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিং-এর আমন্ত্রণ জানান। রজত পতিদারের ঝোড়ো অর্ধশতক, কোহলি (Virat Kohli), ক্যামেরন গ্রিনদের কার্যকরী ইনিংস নির্ধারিত ২০ ওভারে তাদের পৌঁছে দেয় ১৮৭ রানে। বেঙ্গালুরুর পরিসংখ্যান মাথায় রেখে অনেকেই ভেবেছিলেন যে যথেষ্ট হবে না এই রান। কিন্তু গতকাল নজর কাড়লেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের (RCB) বোলাররা। তারা দিল্লীকে রুখে দেন ১৪০ রানেই। ৪৭ রানে জয় পান বিরাট কোহলি, ফাফ দু প্লেসিরা। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে যখন লীগ তালিকার পাঁচ নম্বরে উঠে এলো বেঙ্গালুরু, দিল্লী শিবিরে তখন অন্ধকার। গতকালের চিন্নাস্বামী কেবল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের জয়ই দেখলো না, সাথে বিভেদ ভুলে কাছাকাছি আসতে দেখলো টিম ইন্ডিয়ার দুই প্রাক্তন অধিনায়ককেও।
Read More: “ট্রফি জয় নিশ্চিত…” দিল্লির বিরুদ্ধে একটানা ৫ ম্যাচ জিতে সমাজ মাধ্যমে ট্রেন্ডিং RCB !!
সৌরভের সাথে করমর্দন কোহলির-
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) বনাম বিরাট কোহলি (Virat Kohli), ভারতীয় ক্রিকেটের দুই কিংবদন্তির সম্পর্কের শৈত্য সেই ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে রয়েছে সংবাদমাধ্যমের চর্চায়। ২০২১-এর টি-২০ বিশ্বকাপের পর যখন কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটে নেতৃত্ব ছাড়তে চান কোহলি, তখন বোর্ড প্রেসিডেন্ট ছিলেন সৌরভ (Sourav Ganguly)। সাদা বলের ক্রিকেটে দুইজন নেতা চাইছিলেন না তিনি। তাই সৌরভের বোর্ডে সেই সময় টি-২০’র পাশাপাশি ওয়ান ডে অধিনায়কত্ব থেকেও সরিয়ে দেয় কোহলিকে। বিবাদের সূত্রপাত সেখান থেকেই। এরপর সাংবাদিক সম্মেলন করে কোহলি (Virat Kohli) জানান তাঁকে কোনোরকম বার্তা না দিয়েই সরানো হয়েছে ওডিআই নেতৃত্ব থেকে। ২০২২-এর গোড়ায় টেস্ট নেতৃত্ব’ও ছেড়ে দেন তিনি।
এরপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। ২০২২-এর অক্টোবরে মেয়াদ ফুরানোর পর বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ার ছাড়েন সৌরভ। ডায়রেক্টর হিসেবে যোগ দেন দিল্লী ক্যাপিটালস (DC) দলে। অফ ফর্ম কাটিয়ে ছন্দে ফেরেন কোহলিও (Virat Kohli)। কিন্তু দুজনের মাঝে সম্পর্ক আর জোড়া লাগে নি। গত মরসুমে দিল্লী বনাম বেঙ্গালুরু ম্যাচ চলাকালীন বেশ রাগত ভাবেই সৌরভের (Sourav Ganguly) দিকে তাকাতে দেখা গিয়েছিলো কোহলিকে। ম্যাচ শেষে হাতও মেলান নি দুজনে। এড়িয়ে যান একে অপরকে। ফিরতি একে অপরকে অভিবাদন জানালেও তার মধ্যে স্পষ্ট ছিলো জড়তা। তবে এই বছর দেখা গেলো ভিন্ন ছবি। খেলা শেষে হাত মেলালেন কোহলি ও সৌরভ। দিল্লী ডায়রেক্টরের মুখের হাসি জানান দিচ্ছিলো জটিলতা কেটেছে অনেকটাই।
বিবাদ মেটাতে বদ্ধপরিকর বিরাট-
গত কয়েক মাসে ক্রিকেট মাঠে একাধিক বড় বিতর্কে জড়িয়েছিলেন কোহলি (Virat Kohli)। আইপিএলেই (IPL) গত বছর লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের নবীন উল হক (Naveen-ul-Haq) ও গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) সাথে তীব্র বিবাদে জড়িয়েছিলেন কোহলি। সেই বাগ্বিতণ্ডার রেশ মাঠ পেরিয়ে গড়িয়েছিলো সোশ্যাল মিডিয়াতেও। পোস্ট-পাল্টা পোস্ট ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিলো নেটদুনিয়ায়। আফগান পেসার নবীনের সাথে অবশ্য আইপিএলের (IPL) মাসখানেক পরেই ঝামেলা মিটিয়ে নেন কোহলি। বিশ্বকাপ চলাকালীন দিল্লীর মাঠে ভারত বনাম আফগানিস্তান ম্যাচে তরুণ পেসারের কাঁধে স্নেহের হাত রাখেন বিরাট (Virat Kohli)। দুজনকে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলতে দেখেন দর্শকেরা।
গম্ভীরের (Gautam Gambhir) সাথেও দূরত্ব এই বছর মুছে ফেললেন বিরাট কোহলি। লক্ষ্ণৌ ছেড়ে চলতি আইপিএলে গৌতম গম্ভীর যোগ দিয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে। বেঙ্গালুরু বনাম কলকাতা ম্যাচ চলাকালীন স্ট্র্যাটেজিক টাইম-আউটে মাঠে নেমেছিলেন ‘মেন্টর’ গম্ভীর। সেই সময় ব্যাটিং করছিলেন বিরাট (Virat Kohli)। তাঁর কাঁধে হাত দিয়ে কথা বলতে দেখা যায় নাইট মেন্টরকে। পরিবার, সদ্যজাত পুত্রেরও খোঁজ নেন গৌতম গম্ভীর। ইডেন গার্ডেন্সে দুই দলের অনুশীলন চলাকালীনও আলাপচারিতায় মাততে দেখা যায় দুজনকে। নবীন-গম্ভীরের পর সৌরভের সাথেও দুরত্ব কমিয়ে আনায় কোহলিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনুরাগীরা।