CT 2025: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) নিয়ে এই মুহূর্তে সরগরম ক্রিকেটদুনিয়া। আইসিসি’র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পঞ্চাশ ওভারের এই টুর্নামেন্ট আয়োজিত হওয়ার কথা আগামী বছর। ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে। সে দেশের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা পিসিবি’কে আইসিসি’কে জানিয়েছে যে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চের মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চায় তারা। চেয়ারম্যান মহসীন নকভি সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজে টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) ফাইনাল চলাকালীন প্রস্তাবিত গ্রুপ বিন্যাস ও খসড়া সূচিও জমা করেছেন ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার কাছে। ভারতকে রাখা হয়েছে গ্রুপ-এ’তে। ‘মেন ইন ব্লু’র জন্য বেশ কিছু বিশেষ সুবিধাও থাকবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। তবুও পড়শি দেশে পা রাখা নিয়ে আপত্তি বিসিসিআই-এর। এই দড়ি টানাটানির কারণেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি। কোথাকার জল গড়ায় কতদূর, সেদিকেই নজর সকলের।
Read More: গৌতম গম্ভীরের কারণেই দলে সুযোগ পাবেন না KL রাহুল, শীঘ্রই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটকে করবেন আলবিদা !!
ICC-র বৈঠকে আক্রমণাত্মক PCB-
বর্তমানে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে চলছে আইসিসি’র বৈঠক। অ্যাসোসিয়েট দেশগুলির নতুন ডায়রেক্টর বেছে নেওয়ার বিষয়টি রয়েছে অ্যাজেন্ডায়। একইসাথে আলোচনা হতে পারে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) নিয়েও। ইতিমধ্যেই যে বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছে পাকিস্তান তাতে সায় দিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। ভেন্যু নিয়ে সরকারী ঘোষনা কেবল বাকি এখনও। মনে করা হচ্ছে এই বিষয়টি নিয়ে জোর টক্কর চলতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। বিসিসিআই ইতিমধ্যেই হাইব্রিড মডেলের দাবী রেখেছে আইসিসি’র কাছে। টিম ইন্ডিয়া (Team India) নিজেদের ম্যাচগুলি যে শ্রীলঙ্কা বা মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মাঠে খেলতে চায়, তা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে।
পক্ষান্তরে পাকিস্তান এই দাবীতে সায় জানাতে নারাজ। গত বছর এশিয়া কাপ (Asia Cup 2023) আয়োজনের সময় ভারতের দাবীর সামনে নতিস্বীকার করেছিলো পিসিবি। রাজী হয়েছিলো হাইব্রিড মডেলে। এর ফলে কেবলমাত্র ৪টি ম্যাচই দেশে আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছিলো তাঁরা। এবার সেই প্রস্তাবে আর সায় দিতে চান না পাক বোর্ডের কর্মকর্তারা। পিসিবি চেয়ারম্যান মহসীন নকভি (Mohsin Naqvi) সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, “আমরাই আয়োজক। ভারতকে পাকিস্তানে নিয়ে আসার দায়িত্ব আইসিসি’র। আমাদের নয়।” এর মধ্যেই পাকিস্তানে যাওয়া নিয়ে আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের মত দেশ। তারা সমর্থন পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ারও। যার ফলে পায়ের তলার মাটি শক্ত হয়েছে নকভিদের।
ভারতের সামনে রাস্তা আপাতত কঠিন-
নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তান না যাওয়া নিয়ে অনড় অবস্থানে ভারতের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই। কোহলি-রোহিতদের পাকিস্তানে পাঠাতে রাজী নয় কেন্দ্রীয় সরকারও। গত বছরই এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। স্পষ্ট বলেছিলেন যে পাকিস্তানে যাবে না টিম ইন্ডিয়া (Team India)। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে এখনও সেই নীতি থেকে বিন্দুমাত্র সরে দাঁড়ায় নি তারা। ভারত ছাড়াও আফগানিস্তান সম্ভবত নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তান যাওয়া নিয়ে আপত্তি তুলতে পারে আইসিসি’র বৈঠকে। যা বিসিসিআই-কে অক্সিজেন যোগাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতের হাইব্রিড মডেলের দাবীকে করবে জোরালো।
ভারত সর্বতভাবে পাকিস্তান যাওয়া এড়ানোর চেষ্টা করলেও সেই প্রচেষ্টা কতদূর সফল হবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। ইতিমধ্যেই একাধিক বিদেশী দল পাকিস্তানে সিরিজ খেলে গিয়েছে গত কয়েক বছরে। নিরাপত্তাবেষ্টনী নিয়ে কোনোরকম অভিযোগ শোনা যায় নি তাদের তরফ থেকে। যা ভারতের দাবীকে খানিক ব্যাকফুটে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এছাড়াও আইসিসি’তে ভারতীয় ক্রিকেট সংস্থার ক্ষমতার দম্ভ নিয়ে প্রায়শই সরব হতে শোনা যায় অন্যান্য ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থাগুলিতে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) নিয়ে বিসিসিআই-এর প্রস্তাবে সিলমোহর দিলে কার্যত সেই অভিযোগে মান্যতা দিয়ে বসবে আইসিসি। বিতর্ক এড়াতে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারে তারা। এখনও অবধি যা খবর তাতে দুটি বিকল্প দেওয়া হতে পারে টিম ইন্ডিয়াকে। হয় পাক সফর করতে হবে কোহলিদের, না হলে হয়ত বাদই দেওয়া হবে টিম ইন্ডিয়াকে। সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা বা নেদারল্যান্ডসকে দেখা যেতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে।