IND vs SL: টি-২০ সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে (IND vs SL) সহজ জয় পেয়েছিলো ভারত। তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতে হোয়াইটওয়াশ করেছিলো প্রতিপক্ষকে। স্বাভাবিক কারণেই ৫০ ওভারের ফর্ম্যাটেও ফেভারট হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বেছে নিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়াকেই (Team India)। কিন্তু দুই ফর্ম্যাটের মধ্যে যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে তা গত দুটি ম্যাচে টের পেয়ে গিয়েছেন ভারতের তারকা ক্রিকেটাররা। শুক্রবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ২৩১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ভারত জিততে পারে নি। টাই হয় খেলাটি। রবিবারে ২৪১ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো সামনে। কোহলি (Virat Kohli), শ্রেয়স, শুভমানরা থেমে গেলেন ২০৮ রানেই। এই সিরিজের আগে গত পাঁচটি ওডিআই ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছিলো ভারত। গতকালের পরাজয় তাই খানিক চমকে দিয়েছে তাদের। এই অকস্মাৎ ব্যর্থতার নেপথ্যে ক্রিকেটারদের ভুলচুক নাকি নয়া কোচ গম্ভীরের ‘মিসক্যালকুলেশন’, সেই নিয়ে চলছে চর্চা।
Read More: শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের হলো ঘোষণা, ১৪ সদস্যের স্কোয়াডের নেতৃত্বে এই অলরাউন্ডার !!
ভরাডুবি ব্যাটিং-এর, আঙুল উঠছে বিরাটদের দিকে-
কেবল গতকালের ওয়ান ডে ম্যাচটি নয়, গত শুক্রবারের খেলাতেও ভিলেন ছিলো ভারতের ব্যাটিং বিভাগই। দুটি ম্যাচেই রান পেয়েছেন একমাত্র রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে পরবর্তী ব্যাটারদের জন্য ভালো মঞ্চ প্রস্তুত করে দেওয়ার যে চেষ্টা গত বছরের বিশ্বকাপ (ICC World Cup) থেকে তিনি করে আসছেন, তা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও (IND vs SL) করতে সফল তিনি। প্রথম ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৫৮ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে করেছেন ৬৪। দুই ক্ষেত্রেই স্ট্রাইক রেট ছিলো ১০০’র বেশী। কিন্তু বাকিদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। যেভাবে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন কঠিন পরিস্থিতিতে, তা তারকাসুলভ মোটেই নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আতসকাঁচের তলায় বিরাট কোহলি (Virat Kohli), শ্রেয়স আইয়ার, কে এল রাহুল’রা।
টি-২০ বিশ্বকাপের পর বিশ্রামে ছিলেন বিরাট। প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন শ্রীলঙ্কা সিরিজে। দুটি ম্যাচ খেলে ফেললেন চেনা ছন্দে দেখা যায় নি তাঁকে। রবিবার ভাণ্ডেরসের বলে এলবিডব্লু হয়েছিলেন। শুক্রবারও একইভাবে আউট হয়েছিলেন হাসারাঙ্গার বলে। সিনিয়র তারকার স্পিনের বিরুদ্ধে দুর্বলতা নিয়ে সরব হয়েছেন বোদ্ধারা। এছাড়াও দুটি ম্যাচেই যেভাবে শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন তারও সমালোচনা চলছে ক্রিকেটমহলে। মিডল অর্ডারের অন্যতম স্তম্ভ কে এল রাহুল (KL Rahul)। গতকাল দ্বিতীয় বলে বোল্ড হন তিনি। ছন্দে থাকা স্পিনারের বিরুদ্ধে তাঁর আরও সতর্ক থাকা উচিৎ ছিলো বলে মনে করছেন সমর্থকেরা। সমালোচনা এড়াতে পারেন নি শিবম দুবে, শুভমান গিলরাও। রোহিতের পাশাপাশি ক্লিনচিট পাচ্ছেন একমাত্র অক্ষর প্যাটেল।
দায় এড়াতে পারেন না গৌতম গম্ভীর’ও-
সদ্যই কোচিং-এর দায়িত্ব পেয়েছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। দলে নতুনত্ব আনতে গিয়ে আদতে টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) তিনি পিছনে দিকে ঠেলে দিচ্ছেন কিনা তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। দলে বোলিং বিকল্প বাড়ানোর স্বার্থে ইতিমধ্যেই সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav), রিঙ্কু সিং-দের হাত ঘোরাতে দেখা গিয়েছে গম্ভীর জমানায়। গতকাল ২ ওভার বোলিং করেন রোহিত শর্মা’ও (Rojit Sharma)। এই পদক্ষেপকে স্বাগতই জানিয়েছেন সকলে। আগের প্রজন্মে শচীন, সৌরভ, শেহওয়াগ থেকে যুবরাজ, রায়না’রা প্রায়শই বোলিং করতেন, ফলে ভারসাম্য ভালো হত একাদশের। সেই ট্রেন্ড ফিরলে তা দলের পক্ষে যাবে বলেই মত সকলের। কিন্তু গম্ভীরের ব্যাটিং অর্ডার নির্বাচনের ভিত্তি ঠিক কি তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা।
দুটি ম্যাচেই চেনা চার ও পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে দেখা যায় নি শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) ও কে এল রাহুল’কে। তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে ছয় ও সাত নম্বরে। মিডল অর্ডারে খেলে অভ্যস্ত দুই তারকাকে এভাবে লোয়ার মিডল অর্ডারে ফিনিশারের ভূমিকায় পাঠিয়ে দিলে আদৌ তাঁদের থেকে সেরাটা বের করে আনা যাবে? নিশ্চিত নন ক্রিকেটজনতা। শ্রেয়স ও রাহুলের (KL Rahul) বিকল্প হিসেবে যাঁরা চার বা পাঁচে খেলেছেন তাঁদের নিয়েও থাকছে প্রশ্ন। প্রথম ম্যাচে ওয়াশিংটনকে (Washington Sundar) চারে পাঠিয়ে ফাটকা খেলতে চেয়েছিলেন গম্ভীর। কাজে আসে নি তা। রবিবার চারে পাঠানো হয় শিবম দুবে’কে (Shivam Dube)। ০ করে পরবর্তী ব্যাটারদের উপর চাপ বাড়ান তিনি। এতরকমের পারমুটেশন-কম্বিনেশনের বদলে সঠিক ব্যাটিং অর্ডার ব্যবহার করুন গম্ভীর, উঠতে শুরু করেছে দাবী।