IND vs SL: টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) জয়ের পর রোহিত শর্মা সরে দাঁড়ানোয় ভারতের অধিনায়ক পদে তৈরি হয়েছিলো শূন্যতা। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেছিলেন যে দায়িত্ব পাবেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। কিন্তু উলটো পথে হেঁটে বিসিসিআই অধিনায়কত্বের ব্যাটন তুলে দেয় সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav) হাতে। ক্যাপ্টেন হিসেবে আইপিএল জিতেছেন হার্দিক, তাও কেন তিনি ভারতের নেতৃত্ব পেলেন না সেই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিলো শ্রীলঙ্কা সফরের আগে। কিন্তু যাবতীয় প্রশ্নের জবাব সম্ভবত শ্রীলঙ্কা সিরিজেই (IND vs SL) দিয়ে দিলেন সূর্য (Suryakumar Yadav)। প্রথম দুটি ম্যাচে ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। আজ রান না পেলেও কেবল মহজাস্ত্রের জোরেই প্রায় হেরে বসা ম্যাচ জিতিয়ে আনলেন টিম ইন্ডিয়াকে। শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করেই টি-২০ সিরিজে দাঁড়ি টানলো ‘মেন ইন ব্লু।’
Read More: “কঠিন পিচে সবাই শেষ…” শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটিং প্রদর্শনের পর সমাজ মাধ্যমে শুরু হলো চর্চা !!
ব্যাটিং ব্যর্থতায় চাপে পড়ে ভারত-
ওপেনিং জুটিতে আজ বদল এনেছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। যশস্বী জয়সওয়ালের (Yashasvi Jailswal) সাথে মাঠে নেমেছিলেন শুভমান গিল। সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লে’তে ৭৪ রান তুলেছিলেন দু’জনে। কিন্তু আজ এগোতে পারলেন না বেশীদূর। দ্বিতীয় ওভারেই মহেশ তীক্ষণার বলে লেগ বিফোর হন যশস্বী জয়সওয়াল। তিনে নেমে ফের ব্যর্থ সঞ্জু স্যামসন’ও (Sanju Samson)। গত ম্যাচে করেছিলেন শূন্য। আজও খাতা খুলতে পারলেন না তিনি। ফেরেন চামিন্দু বিক্রমাসিঙ্ঘের বলে। রিঙ্কু সিং-কে (Rinku Singh) চার নম্বরে পাঠানোর পরিকল্পনাও কাজে আসে নি আজ। বছর ছাব্বিশের তরুণ করেন মাত্র ১। তীক্ষণার বলে ক্যাচ তালুবন্দী করেন মাথিশা পথিরানা। অধিনায়ক সূর্যকুমারও (Suryakumar Yadav)) আজ দাগ কাটতে অসফল। ৯ বলে ৮ করে আসিথা ফার্নান্দোর শিকার হন তিনি।
৩০ রানের মাথায় ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিলো ভারত। ডুবতে থাকা তরীর হাল ধরেন শুভমান গিল (Shubman Gill)। শিবম দুবে ১৪ বলে ১৩ করে ফিরে গেলেও সঙ্গী হিসেবে পান রিয়ান পরাগকে। দুজনের ৫৪ রানের জুটি লড়াইতে রেখেছিলো টিম ইন্ডিয়াকে। ভারতের সহ-অধিনায়ক কঠিন পরিস্থিতিতে করে যান ৩৭ বলে ৩৯ রান। মারেন ২টি বাউন্ডারি। রানের গতি বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন রিয়ান (Riyan Parag)। অনভ্যস্ত সাত নম্বর পজিশনে নেমেও ১৮ বলে ২৬ করেন তিনি। মারেন ২টি ছক্কা ও ১টি চার। ব্যাট হাতে লড়লেন ওয়াশিংটন সুন্দর’ও (Washington Sundar)। ১৮ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে তিনি করেন ২৫। শুভমান, রিয়ান ও ওয়াশিংটনের মিলিত প্রচেষ্টায় নির্ধারিত ২০ ওভারে ‘মেন ইন ব্লু’ তোলে ১৩৭ রান।
সূর্যের মগজাস্ত্রের ধারে ছিন্নভিন্ন শ্রীলঙ্কা-
১৩৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলো শ্রীলঙ্কা। ওপেনিং জুটিতেই পাথুম নিশাঙ্কা (Pathum Nissanka) ও কুশল মেন্ডিস তুলে দেন ৫৮ রান। নবম ওভারে রবি বিষ্ণোইয়ের বলে নিশাঙ্কা ফেরার পরেও চালকের আসনে ছিলো শ্রীলঙ্কাই। কুশল মেন্ডিস (Kusal Mendis) ও কুশল পেরেরার (Kusal Perera) জুটি নিশ্চিত জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো দলকে। ৬২ রানের জুটি গড়েন দুজনে। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে কুশল মেন্ডিস (৪৩) যখন আউট হন, তখন শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ২৭ রান। হাতে ৮ উইকেট। এরপর যেন হারাকিরি শুরু করেন ব্যাটাররা। ওয়াশিংটনের ওভারেই ফেরেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (Wanindu Hasaranga)। খলিল আহমেদ এক ওভারে ১২ রান খরচ করে বসায় ফের ম্যাচের রাশ হাতছাড়া হয়েছিলো ভারতের।
এরপর সাহসী সিদ্ধান্ত নেন সূর্য (Suryakumar Yadav)। ১৯তম ওভারে বল তুলে দেন রিঙ্কু সিং-এর (Rinku Singh) হাতে। ২ উইকেট তুলে বাজিমাত করেন তিনি। ফেরান ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা কুশল পেরেরা’কে (Kusal Perera)। শেষ ওভারে নিজে বল করেন অধিনায়ক। জোড়া উইকেট তুলে নেন তিনিও। মাত্র ২৭ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারাও থামে ১৩৭ রানেই। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। আরও একবার স্পিনে আস্থা রেখেছিলেন ভারত অধিনায়ক। ওয়াশিংটন সুন্দরকে (Washington Sundar) বোলিং-এর দায়িত্ব দেন তিনি। হুড়মুড়িয়ে ভাঙে শ্রীলঙ্কা। ২ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। ৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে বিশেষ বেগ পেতে হয় নি টিম ইন্ডিয়াকে (Team India)।