গত ৯ জুলাই এক ট্যুইটবার্তায় ভারতীয় দলের নতুন কোচ হিসেবে গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) নাম ঘোষণা করেছিলেন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ। রাহুল দ্রাবিড়ের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা সামনে আসার পর কোচ নির্বাচন নিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে যে নাটক চলেছিলো, তার অবসান ঘটে গম্ভীরের নামে সিলমোহর পড়ার সঙ্গে সঙ্গে। আইপিএলে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস (LSG) ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) মেন্টর হিসেবে এর আগে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। ভারতের মত তারকাখচিত দলের ভার আদৌ সামলাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনেকেই চিন্তায় ছিলেন। বিশেষ করে বিরাট কোহলির সাথে ইগোর লড়াই কতদূর সমস্যায় ফেলতে পারে তাঁকে, তা নিয়ে ছিলো প্রশ্ন। তবে আজ সাংবাদিক সম্মেলনে আশাবাদীই শোনালো গম্ভীরকে (Gautam Gambhir)।
Read More: “আমি ভাগ্যবান…” দায়িত্ব পেয়ে খুশি গম্ভীর, প্রশংসায় ভরালেন জয় শাহ ও BCCI-কে !!
অতীতে ঝামেলায় জড়িয়েছেন গম্ভীর-কোহলি-
মাঠে এবং মাঠের বাইরে ক্রিকেটদুনিয়ার দুই সুপারস্টারের লড়াই নতুন নয়। প্রথমবার দুজনে ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন ২০১৩ সালে। তখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) অধিনায়ক গম্ভীর (Gautam Gambhir), আর বেঙ্গালুরুর দায়িত্বে বিরাট (Virat Kohli)। আউট হয়ে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন কোহলি, তখন তাঁকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলেছিলেন গম্ভীর। ঘুরে দাঁড়িয়ে পালটা দেন বিরাটও। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চলে কথা কাটাকাটি। আইপিএলের (IPL) আসরে বচসার পুনরাবৃত্তি দেখা গিয়েছিলো গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে। গোটা মরসুমের অন্যতম চর্চিত ঘটনা হয়ে উঠেছিলো লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস মেন্টর গম্ভীর (Gautam Gambhir) ও বেঙ্গালুরু ক্রিকেটার বিরাটের ঝামেলার বিষয়টি।
একানা স্টেডিয়ামে ম্যাচ চলাকালীন লক্ষ্ণৌ দলের আফগান পেসার নবীন উল হকের (Naveen ul Haq) সাথে বচসা হয়েছিলো কোহলির। খেলা শেষে সেই নিয়ে তাঁর কাছে জবাবদিহি চান মেন্টর গম্ভীর। এরপরে কথার লড়াই চলে বেশ খানিকক্ষণ। কোহলি ও গম্ভীর, দুজনেরই ম্যাচ ফি’র ১০০ শতাংশ জরিমানা করেছিলেন বিসিসিআই। কেবল মাঠের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি দ্বৈরথ। পরে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেন কোহলি (Virat Kohli), গম্ভীর। বিরাটকে খোঁচা দিয়ে পোস্ট করে ভাইরাল হয়েছিলেন আফগানিস্তানের নবীনি উল হক’ও। ২০২৪-এ যদিও পুরনো ঝামেলা ভুলে কাছাকাছি আসতে দেখা গিয়েছিলো কোহলি-গম্ভীরকে (Gautam Gambhir)। আইপিএল ম্যাচ চলাকালীন হাল্কা মেজাজে আলাপচারিতাও সারেন দু’জনে।
দলের স্বার্থে পুরনো দ্বন্দ্ব ভুলছেন দু’জনে-
গম্ভীরের নাম কোচ হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পরেই ক্রিকেটমহলে আলোচনা শুরু হয়েছিলো তাঁর সাথে বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে। পূর্বের ঝামেলার প্রভাব কি আদৌ পড়বে ভারতীয় সাজঘরের উপর নাকি দূরত্ব ভুলে দেশের স্বার্থে একসাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেবেন দুজনে? মূলত এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছিলেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজ সূত্রে জানা যায় যে টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর কোহলির কাছে নাকি গম্ভীরের সাথে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে খোঁজখবরও নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু জয় শাহ রজার বিনিদের আশ্বস্ত করেন ক্রিকেট তারকা। জানিয়ে দেন ‘গুরু’ গম্ভীরের সাথে কাজ করার ব্যপারে তাঁর কোনো আপত্তি নেই। নতুন কোচের আর্জিতেই ছুটিতে কাটছাঁট করে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতেও রাজী হন তিনি।
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন গম্ভীর’ও (Gautam Gambhir)। যাবতীয় বিতর্ক যে সংবাদমাধ্যমের মনগড়া তা স্পষ্ট করে দেন তিনি। বলেন, “আমাদের সম্পর্ক টিআরপি’র জন্য নয়। এই মুহূর্তে আমরা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছি। এই মুহূর্তে আমরা ১৪০ কোটি ভারতীয়ের প্রতিনিধিত্ব করছি। মাঠের বাইরে আমাদের দুর্দান্ত সম্পর্ক। তবে সেটা সর্বসাধারণের জন্য নয়। ম্যাচ চলাকালীন আমি কতবার ওর সাথে কথা বললাম, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ও পেশাদার। একজন বিশ্বমানের অ্যাথলিট। আমি আশা রাখছি যে ও তেমনটাই থাকবে।” এছাড়াও গম্ভীরের সংযোজন, “ক্রিকেটারদের সাথে আমার দুর্দান্ত সম্পর্ক। জানি কাজটা কঠিন, কিন্তু আমি মুখিয়ে আছি করার জন্য। সচিব জয় শাহের সাথে কাজের অভিজ্ঞতাও মধুর।”