TOP 3: নতুন কোচের সন্ধানে ভারতীয় দল (Team India)। টি-২০ বিশ্বকাপের পরেই দায়িত্ব ছাড়তে চলেছেন রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। রোহিত-কোহলিদের প্রশিক্ষক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। ক্রিকেটমহলের আলোচনায় রিকি পন্টিং, স্টিফেন ফ্লেমিং-দের মত বিদেশী কোচদের নাম ভাসলেও টিম ইন্ডিয়ার সমর্থকদের সিংহভাগ চাইছেন গম্ভীরকে। ক্রিকেটার হিসেবে বরাবর আগ্রাসী মানসিকতার ছিলেন গম্ভীর। ব্যক্তিগত মাইলস্টোনের আগে রাখতেন দলীয় সাফল্যকে। খেলা ছাড়ার পরেও তাঁর হার না মানা মনোভাবে চিড় ধরে নি একটুও। এর আগে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের মেন্টর হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। এই মরসুমে দারুণভাবে সামলেছেন নাইট রাইডার্সের দায়িত্ব। দেশের জার্সিতেও সফল হবেন তিনি। মত অনেকের। যদি সত্যিই শেষমেশ কোচের পদে বসেন তিনি, তাহলে ’দি এন্ড’ হতে পারে এই তিন তারকার কেরিয়ার।
Read More: “এরকম কোনো কাজই করি ….”, রোহিত শর্মার করা পোস্টের পালটা জবাব স্টার স্পোর্টসের, ঠান্ডা যুদ্ধে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া !!
বিরাট কোহলি-
কোচের আসনে গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir) বসলে দরজা বন্ধ হতে পারে বিরাট কোহলির (Virat Kohli) জন্য। দিল্লীর দুই তারকার মধ্যে সম্পর্কের সমীকরণ যে সহজ নয় তা জানেন সকলে। ২০১৩ সালে গম্ভীর যখন কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) অধিনায়ক, তখন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু অধিনায়ক কোহলির সাথে মাঠেই ঝামেলা হয় তাঁর। দুজনে জড়িয়েছিলেন উত্তপ্ত বাদানুবাদে। ২০২৩ সালে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা যায়। গম্ভীর তখন লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের কোচ, কোহলি (Virat Kohli) তখনও খেলছেন বেঙ্গালুরুর হয়েই। এই বিতর্কের রেশ গড়িয়েছিলো বহু দূর।
২০২৪ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর হয়েছেন গম্ভীর। চিন্নাস্বামী ও ইডেনে হেসে কথা বলতে দেখা গিয়েছে কোহলি ও গম্ভীরকে (Gautam Gambhir)। কিন্তু তাতে সম্পর্কের বরফ কতদূর গলেছে সেই বিষয়ে নিশ্চিত নন কেউই। জাতীয় দলের কোচ হিসেবে গম্ভীর নিযুক্ত হলে যে কোনো মুহূর্তে ইগোর সমস্যা দেখা যেতে পারে দুজনের মধ্যে। সেক্ষেত্রে বিরাটকে বাদ দিতেও সম্ভবত দুইবার ভাববেন না ‘নো ননসেন্সে’ বিশ্বাসী গম্ভীর। টি-২০তে কোহলির স্ট্রাইক রেট নিয়েও বিস্তর জলঘোলা হচ্ছে। কোচের পদে বসে গম্ভীরের প্রথম পদক্ষেপই হতে পারে অপেক্ষাকৃত মন্থর টি-২০ থেকে বাদ দিয়ে অভিষেক শর্মা’র মত কোনো তরুণকে সুযোগ দেওয়া।
হার্দিক পান্ডিয়া-
ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir) নিযুক্ত হলে তা খারাপ খবর হতে পারে হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya) জন্যও। তাঁর ফিটনেস সমস্যা ভুগিয়েছে তাঁকে ইতিপূর্বে। মাঝেমধ্যেই চোটের জন্য কোনো না কোনো সিরিজে খেলতে পারেন নি তিনি। নিয়েছেন দীর্ঘ বিরতি। অভিযোগ উঠেছে যে আইপিএলের জন্য প্রস্তুত হতেই নাকি দেশের জার্সিতে খেলা থেকে বিরত থেকেছেন হার্দিক। নিয়মশৃঙ্খলায় বিশ্বাসী গম্ভীরের কাছে এহেন কার্যকলাপ অপছন্দের হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। এই মুহূর্তে জাতীয় দলে পান্ডিয়া অটোমেটিক চয়েজ। সাদা বলের ক্রিকেটের দুই ফর্ম্যাটেই নিয়মিত খেলে চলেছেন তিনি। ভবিষ্যতের নেতা হিসেবেও দেখছেন হার্দিককে অনেকে। কিন্তু নিয়মানুবর্তিতার সাথে আপস না করে তাঁকে বাদ দিতে পারেন গম্ভীর।
এছাড়াও হার্দিকের (Hardik Pandya) বিরুদ্ধে যেতে পারে তাঁর সাম্প্রতিক ফর্ম। ব্যাট হাতে ২০২৩-এর এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৮৭ করেছিলেন তিনি। এরপর একটিও কার্যকরী ইনিংস আসে নি তাঁর থেকে। ছয় বা সাতে নেমে যে দ্রতু গতিতে রান করা প্রয়োজন, তা করে দেখাতে পারেন নি তিনি। সম্প্রতি আইপিএলেও (IPL) তিনি ১৮ গড়ে ব্যাট করেছেন। ১৪ ম্যাচে করেছেন কেবল ২১৬ রান। নিয়েছেন ১১ উইকেট। ইকোনমিও ছিলো ১১-এর আশেপাশে। যা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করতে পারেন গম্ভীর। এছাড়াও ইতিপূর্বে টেস্ট খেলতে অনীহা দেখিয়েছেন হার্দিক। যা অপছন্দের হতে পারে গম্ভীরের (Gautam Gambhir) কাছে। তিনি হার্দিকের বদলে সুযোগের অপেক্ষায় থাকা শিবম দুবে, ভেঙ্কটেশ আইয়ার বা শশাঙ্ক সিং-কে বেছে নিতে পারেন।
মহম্মদ সিরাজ-
গম্ভীরের বাদের তালিকায় নাম লেখাতে পারেন মহম্মদ সিরাজ’ও (Mohammed Siraj)। গত এক-দেড় বছরে টেস্ট ও ওডিআই স্কোয়াডে নিয়মিত তিনি। দুই দীর্ঘতর ফর্ম্যাটে তাঁর পারফর্ম্যান্স’ও ভালোই। ৫০ ওভারের খেলায় আইসিসি র্যাঙ্কিং-এ শীর্ষস্থান দখল করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এশিয়া কাপের ফাইনালে একাই ভেঙেছেন শ্রীলঙ্কাকে। ওডিআই বিশ্বকাপেও তিনি দুরন্ত বোলিং করেছেন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্টের লাল বল হাতে নজর কেড়েছেন। কিন্তু টি-২০তে সেই পর্যায়ে নিজের পারফর্ম্যান্সকে উন্নীত করতে পারেন নি হায়দ্রাবাদের ক্রিকেটার। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক ম্যাচে ৪ উইকেট ছাড়া কোনো উল্লেখযোগ্য পারফর্ম্যান্স নেই তাঁর।
আইপিএলেও (IPL) ২০২৩ সালে কেবল নজর কেড়েছিলেন সিরাজ (Mohammed Siraj)। ২০২৪ সালের টুর্নামেন্টে ফের মুখ থুবড়ে পড়েছেন তিনি। পাওয়ার-প্লে ও ডেথ ওভারে রান রুখতে গিয়ে হিমশিম খেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। নিয়মিত উইকেটও এনে দিতে পারেন নি দলকে। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি তাঁর ওভার আগে শেষ করিয়ে দিয়ে শেষ ওভারটি তুলে দিয়েছিলেন অনভিজ্ঞ যশ দয়ালের হাতে। আহামরি পরিসংখ্যান না থাকলেও টি-২০ বিশ্বকাপের দলে জায়গা পেয়েছেন তিনি। গম্ভীর (Gautam Gambhir) কোচ হয়ে এলে এই টি-২০ বিশ্বকাপই, ভারতের কুড়ি-বিশের দলের জন্য তাঁর শেষ টুর্নামেন্ট হতে পারে। তাঁর বদলে যশ দয়াল বা হর্ষিত রাণা’র মত তরুণদের জায়গা দেবেন গম্ভীর।