দু’বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে আইপিএল ২০১৭-র ফাইনালে ব্যাট হাতে যেমন পারফরম্যান্সের আশা করা গিয়েছিল, এদিনের ম্যাচে তা দেখা যায়নি। সে দলে একাধিক বিশ্বমানের ক্রিকেটার রয়েছেন। রয়েছে অন্যতম সেরা ওপেনিং জুটি্ও। রোহিত শর্মার মতো একজন বিশ্বস্ত ব্যাটসম্যান দলে ছিল। তা সত্ত্বেও আইপিএল দশের ফাইনালে ব্যাট হাতে সেই দাপট দেখাতে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। যেভাবে তারা ব্যাট হাতে ইনিংস শুরু করেছিল তাতে অবাক গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। এবং সেই সুযোগে ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ রাইজিং পুণে সুপার জায়েন্টও ট্যুইটারে প্রতিপক্ষ দলকে খোঁচা দিতে মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মার একটি ব্যাঙ্গার্থক ছবি পোস্ট করে। যে ছবিতে দেখা যাচ্ছে ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে রোহিতের চোখ থেকে জল বেরিয়ে আসছে। পাশাপাশি ক্যাপশনে লেখা ছিল, “একই রং, কিন্তু তাতে ধরেছে নতুন জং।” পরবর্তী সময়ে ফাইনালে মুম্বই মেল ধীরে ধীরে ট্র্যাকে ফিরতে দেখে রাইজিং পুণে সুপার জায়েন্ট কর্তৃপক্ষ নিজে থেকেই ওই অপমানজনক ট্যুইট ওয়াল থেকে সরিয়ে নেয়।
এদিনের ম্যাচে পুণে বোলারদের অসাধারণ বোলিংয়ের জেরে ব্যাট হাতে সেভাবে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি মুম্বই ব্যাটসম্যানরা। দলগত ৭ রানের মাথায় ইনিংসের তৃতীয় ওভারে শুরুতে উনাদকাতের বলে শার্দুল ঠাকুরের হাতে মাত্র ৪ রান করে আউট হন পার্থিক প্যাটেল। সেই ওভারেরই চার নম্বর বলে উনাদকাতের কাছে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ৩ রানে সাজঘরে ফেরেন লেন্ডল সিমন্স। এরপর মুম্বইয়ের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা এবং আম্বাতি রায়াডু জুটি ক্রিজে টিকে থেকে তৃতীয় উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৩৩ রান যোগ করেন। ১২ রানের মাথায় পুণে অধিনায়ক স্মিথের থ্রোতে রায়াডু রান আউট হওয়ায় মুম্বইয়ের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের কোটা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। এদিনের ম্যাচে সবচেয়ে বড় চমক ছিল করণ শর্মার রান আউটটা। শার্দুল ঠাকুরের বলে শট নিতে গিয়ে প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন করণ। যদিও সেই ক্যাচটা ফস্কে যায়। এর মাঝে রান নেবেন কি নেবেন না, তা ভাবতে গিয়েই সেই ড্যানিয়েল ক্রিশ্চিয়ানেরই ছোড়া বল ধরে করণকে ১ রানের মাথায় রান আউট করে দেন শার্দুল।
একটা সময় মনে হয়েছিল, এভাবে কম রানের বিনিময়ে ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারাতে থাকলে টিম মুম্বই আদৌ ১০০ রানের গন্ডি টপকাতে পারবে কি না। যদিও ঠিক সে জায়গায় ব্যাট চওড়া করে একের এক বড় শট খেলে মুম্বইয়ের স্কোর বোর্ডে ঝড় তোলেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। তাঁর ৩৮ বলের মারকাটারি ৪৭ রানের ইনিংসের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ১২৯ রান তুলতে সক্ষম হয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (১২৯/৮)। একমাত্র ক্রুনাল ছাড়া দলের বাকিরা পুণের বোলারদের সামনে সেভাবে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। যার ফলে ইনিংস শেষে নিজেদের স্কোর বোর্ডে বিশাল কোনও স্কোর খাড়া করতে ব্যর্থ হয় টিম মুম্বই। সঠিক সময়ে ক্রুনাল যদি ওই ইনিংসটা না খেলে দিতে পারতেন, তাহলে দলের স্কোর বোর্ডে ১০০ রান জমা হওয়া তো দূরের কথা, নির্ধারিত ২০ ওভার খেলার মতো কোনও মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যানকে খুঁজে পাওয়া যেত না। প্রতিপক্ষ রাইজিং পুণে সুপার জায়েন্টকে আইপিএল দশের ফাইনাল জেতার জন্য ১৩০ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় তারা। আগেই পরিস্কার হয়ে যায়, হায়দরাবাদের ওই উইকেটে ১৩০ রান তোলা খুবই কঠিন কাজ হবে ধোনিদের কাছে।
বাস্তবে অবশ্য সেটাই ঘটলো। ম্যাচ জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছেও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে ফাইনালে মাত্র ১ রানে হার স্বীকার করে আইপিএল দশের শিরোপা জয়ের রাস্তা থেকে ছিটকে গেল স্মিথের রাইজিং পুণে সুপার জায়েন্ট।
জনৈক ট্যুইটার ব্যবহারকারি ফিক্সিং’র অভিযোগ ছুঁড়ে দিলেন আইপিএলের দিকে!