TOP 3: ২০২২-এর গোড়ায় তিন ফর্ম্যাটে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) অধিনায়কত্ব হাতে পেয়েছিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। বিরাট কোহলি সরে দাঁড়ানোর পর তাঁকেই যোগ্যতম বলে মনে করেছিলেন তৎকালীন বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই একটাই মন্ত্র দলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছিলেন হিটম্যান-ব্যক্তিস্বার্থকে দূরে রেখে বড় মঞ্চে দল হিসেবে খেলে ট্রফি জিততে হবে। ২০২৩-এর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও ওডিআই বিশ্বকাপে খেতাবের খুব কাছে গিয়ে ফিরতে হয়েছিলো খালি হাতে। অবশেষে ঈপ্সিত লক্ষ্যে টিম ইন্ডিয়া (Team India) পৌঁছে গেলো গতকাল। জিতলো টি-২০ বিশ্বকাপ। ভারতকে সাফল্যের স্বাদ চাখিয়ে ক্ষুদ্রতম ফর্ম্যাটকে বিদায় জানালেন রোহিত। আংশিক অবসরের মুহূর্তে চিনে নেওয়া যাক তিন তারকাকে, যাঁদের উত্থান অনেকটাই রোহিতের হাত ধরে।
শুভমান গিল-
টিম ইন্ডিয়ার (Team India) আগামীর মহাতারকা বলা হচ্ছে শুভমান গিল’কে (Shubman Gill)। ২০১৮ সালেই পাঞ্জাবের তরুণ তাঁর প্রতিভার ছাপ রেখেছিলেন বাইশ গজের দুনিয়ায়। অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপজয়ী টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় তাঁর। কিন্তু জাতীয় দলে নিয়মিত হয়ে উঠতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিলো তাঁকে। রোহিত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর শুভমানকে নিয়মিত জায়গা দিতে থাকেন সাদা বলের ক্রিকেটে। তাঁর প্রতিভার কথা মাথায় রেখে অভিজ্ঞ শিখর ধাওয়ানকে ছেঁটে ফেলতেও দ্বিধা করেন নি হিটম্যান। অধিনায়কের আস্থার হাত কাঁধে পেয়ে নিজের ব্যাটিং-এর ধারও অনেকখানি বাড়িয়ে ফেলেন শুভমান। কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে ওডিআই দ্বিশতক করেছেন। এশিয়া কাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন ইতিমধ্যেই। বড় দাদার মত পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছেন রোহিত শর্মা।
মহম্মদ সিরাজ-
হায়দ্রাবাদের মহম্মদ সিরাজের (Mohammed Siraj) উত্থানের পিছনেও রোহিত শর্মা’র বড় অবদান রয়েছে। একটা সময় সাদা বলের ক্রিকেটে সিরাজকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। রান খরচের প্রবণতা তাঁর কেরিয়ারে উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হয়েছিলো। কিন্তু কঠিন সময় অধিনায়ক রোহিতই পাশে দাঁড়ান তাঁর। নিয়মিত জায়গা দেন ওডিআই ফর্ম্যাটে। অধিনায়কের আস্থা আর নিজের কঠোর পরিশ্রমের জেরে ধীরে ধীরে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলারে পরিণত হয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই আইসিসি র্যাঙ্কিং-এ শীর্ষস্থানে পৌঁছনোর স্বাদও পেয়েছেন। এশিয়া কাপের ফাইনালে রোহিত শর্মা’র (Rohit Sharma) ভারতের তুরুপের তাস হয়ে উঠতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। ১৫ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট নিয়ে সেদিক একাই ভেঙেছিলেন শ্রীলঙ্কাকে। রোহিতের নেতৃত্বে ৫০টি ম্যাচ খেলেছেন সিরাজ। নিয়েছে ৮৬ উইকেট।
যশস্বী জয়সওয়াল-
মুম্বইয়ের তরুণ বাম হাতি যশস্বী জয়সওয়ালকেও (Yashasvi Jaiswal) আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পায়ের তলার শক্ত মাটি যুগিয়েছেন রোহিত’ই। ২০২৩-এর আইপিএলে অনবদ্য পারফর্ম্যান্স করেছিলেন যশস্বী। এরপর তাঁকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে টেস্ট খেলানোর মত চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত নিয়ে চমকে দিয়েছিলেন হিটম্যান। অভিষেক ম্যাচেই ১৭৪ রান করে অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা দেন তরুণ তুর্কি। শুভমান গিল’কে তিন নম্বরে ঠেলে দিয়ে নিজের ওপেনিং জুটি হিসেবে যশস্বীকে বেছে নিয়েছেন রোহিত। তাঁর ছত্রছায়ায় তিনি যে অনেক কিছু শিখছেন তা স্পষ্ট করেছেন খোদ তরুণ ওপেনারই। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ৭০০’র বেশী রান প্রমাণ দিচ্ছে যে রত্ন বাছতে ভুল হয় নি রোহিতের। লম্বা রেসের ঘোড়া হতে চলেছেন যশস্বী। এই বছরে বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মত কঠিন টেস্ট সিরিজ রয়েছে। সেখানেও যে অধিনায়ককে পাশে পাবেন তিনি, তা বলাই বাহুল্য।