TOP 3: গত কয়েক বছর ধরেই ক্রিকেটমহলের অন্যতম চর্চিত তরুণ তুর্কি অসমের রিয়ান পরাগ (Riyan Parag)। রাজস্থান রয়্যালসের (RR) হয়ে আইপিএলে (IPL) লাগাতার সুযোগ পেলেও বেশ কিছু মরসুম বিশেষ ভালো পারফর্ম্যান্স ছিলো না তাঁর। তা সত্ত্বেও তাঁর নানান মন্তব্য জন্ম দিয়েছিলো বিতর্কের। ‘দাম্ভিক’ তকমা পেয়েছিলেন তিনি। কেরিয়ারের অন্ধকার সময় কাটিয়ে অবশেষে ২০২৪-এর আইপিএলে (IPL) আলোর বৃত্তে পা দেন রিয়ান (Riyan Parag)। ৫৭৩ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। হন টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তড়িঘড়িই তাঁকে টিম ইন্ডিয়াতেও (Team India) সুযোগ দেন নির্বাচকেরা। আইপিএল আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যে এক নয়, সেই ধারণা শুরুতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে রিয়ানের (Riyan Parag) কাছে।
জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৩ ম্যাচ খেলে রিয়ান পরাগ (Riyan Parag) করেছেন মাত্র ২৪। ব্যর্থতার পর বিশেষজ্ঞরা ভেবেছিলেন যে তাঁকে আপাতত ফেরত পাঠানো হবে ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিসরে। ঘষেমেজে আরও পরিণত হয়ে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হবে বছর ২২-এর ক্রিকেটারকে। কিন্তু সেই রাস্তা বেছে নেন নি নির্বাচকেরা। তাঁদের আস্থা অটুট রয়েছে রিয়ানের উপর। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-২০ ও ওডিআই, দুই সিরিজেই স্কোয়াডে রাখা হয়েছে তাঁকে। দল ঘোষণার পর এই নিয়ে চলছে বিস্তর চর্চা। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন এখনি রিয়ান (Riyan Parag) প্রস্তুত নন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য। বদলে সুযোগের যোগ্য দাবীদার এই তিন তরুণ।
Read More: আবার শুরু হচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, জয় শাহের কাছে প্রস্তাব রাখলো PCB !!
ঋতুরাজ গায়কোয়াড়-
এই তালিকায় প্রথমেই নাম থাকবে ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের (Ruturaj Gaikwad)। মহারাষ্ট্রের ক্রিকেটার দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা দেখিয়ে এসেছেন ব্যাট হাতে। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-২০ ম্যাচে করেছেন শতরান। আইপিএলেও অসামান্য পারফর্ম করেছেন। সদ্যই জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সুযোগ পেয়েছিলেন টি-২০ সিরিজে। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ৭৭ রানের একটি চমৎকার ইনিংস। এছাড়াও আরও একটি কার্যকরী ৪৯ রানের ইনিংসও খেলেছেন তিনি। টি-২০ কেরিয়ারে ২৩ ম্যাচে প্রায় ৪০ গড়ে তাঁর সংগ্রহে ৬৩৩ রান। স্ট্রাইক রেট ১৪৪-এর আশেপাশে। ঋতুরাজের (Ruturaj Gaikwad) সাম্প্রতিক ফর্ম বিচার করে প্রাক্তনী কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত অবধি বলেছেন, “সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ও অটোমেটিক চয়েজ হওয়া উচিৎ।” কিন্তু উলটো পথে হেঁটেছে ভারতীয় শিবির। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওডিআই ও টি-২০, কোনো স্কোয়াডেই ডাক পান নি তিনি।
তিলক বর্মা-
এই তালিকায় দ্বিতীয় নাম হতে পারে তিলক বর্মা’র (Tilak Varma)। গত বছর ভারতীয় দলের মিড্ল অর্ডারে জায়গা করে নিয়েছিলেন হায়দ্রাবাদের বাম হাতি ব্যাটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক সিরিজেই নজর কেড়েছিলেন ঝোড়ো অর্ধশতক করে। জায়গা করে নিয়েছিলেন এশিয়ান গেমসের স্কোয়াডেও। জেতেন সোনা। এরপর আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তানের বিপক্ষেও টি-২০ খেলেছেন তিনি। ২০২৪-এর আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (MI) জার্সি গায়ে বেশ কিছু চমকপ্রদ ইনিংস দেখা গিয়েছিলো তরুণ তুর্কির ব্যাট থেকে। অনেকেই ‘ফিনিশার’ হিসেবে টিম ইন্ডিয়ার ভবিষ্যৎ বলে মনে করছিলেন তিলক’কে (Tilak Varma)। কিন্তু বর্তমানে যেন ভারতীয় শিবিরের রেডার থেকে সম্পূর্ণ হারিয়েই গিয়েছেন তিনি। টি-২০ বিশ্বকাপের দলে ডাক পান নি। জায়গা দেওয়া হয় নি জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধেও। শ্রীলঙ্কা সফরেও ডাক এলো না তাঁর জন্য।
অভিষেক শর্মা-
সদ্যসমাপ্ত জিম্বাবুয়ে সফরেই ভারতের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিলো অভিষেক শর্মা’র (Abhishek Sharma)। পাঞ্জাবের বাম হাতি ওপেনার কেরিয়ারের প্রথম ম্যাচে রান না পেলেও প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচে। করেন ধুন্ধুমার শতরান। মাত্র ৪৭ বলে ১০০ রান করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের জার্সিতে অনবদ্য পারফর্ম করার পর তাঁর মেন্টর কিংবদন্তি যুবরাজ সিং জানিয়েছিলেন যে ছয় মাসের মধ্যে ভারতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবেন অভিষেক (Abhishek Sharma)। গুরুর আস্থার মর্যাদা রেখেছিলো অভিষেকের ব্যাট। কিন্তু এরপরেই তাঁকে ওপেনিং থেকে তিনে ঠেলে দেওয়া হয়। জিম্বাবুয়ে সফরের পর সবাইকে চমকে দিয়ে স্কোয়াড থেকেই মুছে ফেলা হয়েছে তাঁকে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওডিআই ও টি-২০, দুই সিরিজেই দেখা যাবে না তাঁকে।