Ms Dhoni
Ms Dhoni

TOP 3: ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক বললেই শতকরা আশি বা নব্বই জন ক্রিকেট অনুরাগীর মানসপটে ভেসে ওঠে মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) মুখ। যে গুটিকয় ক্রিকেটার বাইশ গজের বাইরে বেরিয়ে ভারতীয় জনতার হৃদয়ের আসনে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম ঝাড়খণ্ডের ‘মাহি।’ লম্বা চুলের তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে দর্শকদের মন জিতেছিলেন তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঝোড়ো ১৪৮ হোক বা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ১৮৩-ধোনিম্যানিয়ায় ক্রিকেটপ্রেমীদের আচ্ছন্ন করেছেন তিনি। যত সময় এগিয়েছে, ব্যাট হাতে বিশ্বজয়ের পাশাপাশি অধিনায়ক হিসেবেও বিশ্ব ক্রিকেটের মসনদে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। জিতেছেন একের পর এক খেতাব।

একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে আইসিসি আয়োজিত তিনখানি সীমিত ওভারের টুর্নামেন্ট জয়ের নজির রয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni) । আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও সফলতম অধিনায়ক তিনিই। জিতেছেন পাঁচটি আইপিএল, দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ২০-২০ ট্রফি। নেতা হিসেবে ধোনিকে অনন্য বানিয়েছে তাঁর হার না মানা মানসিকতা, এবং বরফ শীতল মস্তিষ্ক। প্রচণ্ড চাপের মুখেও ভেঙে না পড়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি। যা অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয় জয়ের সম্ভাবনা। অধিনায়ক হিসেবে প্রায় দেড় দশকের লম্বা কেরিয়ারে আকাশছোঁয়া সাফল্য যেমন পেয়েছেন, তেমনই মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni) এড়াতে পারেন নি কিছু বিতর্কও। তেমনই তিন বিতর্কের সন্ধান রইলো এই প্রতিবেদনে।

Read More: WC 2023: স্বপ্ন ভগ্ন হলো সিকান্দার রাজাদের, স্কটল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল জিম্বাবুয়ে !!

আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক জুড়েছিলেন অগ্নিশর্মা ধোনি-

MS Dhoni vs Rajasthan Royals, IPL 2019 | Image: Getty Images
MS Dhoni vs Rajasthan Royals, IPL 2019 | Image: Getty Images

২০১৯ সালে আইপিএল মরসুমের ২৫তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো চেন্নাই সুপার কিংস (CSK) এবং রাজস্থান রয়্যালস (RR)। একটি নো-বলের ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিলো মাঠের পরিস্থিতি। হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে একটি অতিরিক্ত রান বা একটি অতিরিক্ত বলের গুরুত্ব বেড়ে দাঁড়িয়েছিলো অনেকখানি। যে অসহ্য স্নায়ুর চাপ তৈরি হয়েছিলো ম্যাচকে ঘিরে, তাতে প্রভাবিত হতে দেখা যায় আপাতশান্ত চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকেও (MS Dhoni)। মাঠে উপস্থিত লেগ-আম্পায়ার কোমরের উপরে থাকা একটি বলকে নো-বল না ঘোষণা করায় বিতর্কের সূত্রপাত। তৃতীয় আম্পায়ার অবশ্য বলটিকে ‘নো’ ঘোষণা করেন। তবে তৃতীয় আম্পায়ারের হস্তক্ষেপও ধোনির (MS Dhoni) রাগকে স্তিমিত করতে পারে নি সেইদিন।

‘ক্যাপ্টেন কুল’ তকমা ঝেড়ে গেলে সরাসরি ডাগ-আউট থেকে মাঠে ঢুকে পড়েন ধোনি (MS Dhoni)। জবাবদিহি চান আম্পায়ারের থেকে। সতীর্থরাই পরে চেন্নাই অধিনায়ককে মাঠ থেকে বের করে আনেন। ম্যাচে ১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করছিলো চেন্নাই। শেষ বলে ছক্কা মেরে তাদের জেতান নিউজিল্যান্ডের স্পিনার মিচেল স্যান্টনার (Mitchell Santner)। রাজস্থানের বিরুদ্ধে ধোনির আচরণ নিন্দিত হয় ক্রিকেটমহলে। তাঁর মত সিনিয়র ক্রিকেটারের কাছে থেকে এমনটা কাম্য নয় বলেই মন্তব্য করেন বিশেষজ্ঞরা। আইপিএল কর্তৃপক্ষের তরফে ধোনিকে (MS Dhoni) ম্যাচ ফি’র ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছিলো সেই আচরণের জন্য।

শেহবাগের সাথে মনোমালিন্যের খবর এসেছিলো সামনে-

MS Dhoni and Virender Sehwag | Image: Twitter
MS Dhoni and Virender Sehwag | Image: Twitter

২০০৯ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ চলাকালীন ভারতীয় ড্রেসিংরুমের কোন্দল চলে এসেছিলো প্রকাশ্যে। ধোনির (MS Dhoni) সুখের সংসারে যে ফাটল ধরেছে বোঝা গিয়েছিলো তা। ঘটনার সূত্রপাত তারকা ওপেনার বীরেন্দ্র শেহবাগের চোটের ব্যাপারে অধিনায়ক ধোনির এক মন্তব্যকে ঘিরে। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে যা বলার তা কেবল বলবে বিসিসিআই।” শেহবাগের (Virender Sehwag) চোটের ব্যাপারে সম্যক ধারণা থাকা সত্ত্বেও ধোনির উদাসীন মন্তব্যে বিতর্কের গন্ধ পেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। ভারতীয় সাজঘরে সংঘাতের খবর ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত।

বিষয়টি নিয়ে ধোনি কোনো মন্তব্য করতে না চাওয়ায় ধোনি (MS Dhoni) এবং শেহবাগের (Virender Sehwag) মধ্যে ইগোর লড়াই দেখেছিলেন সাংবাদিকেরা। ঘরে-বাইরে তুমুল আলোড়োন পড়ে গিয়েছিলো এই খবর সামনে আসার পর। বাধ্য হয়েই বাংলাদেশ ম্যাচের আগে দলের সকল সদস্য এক যোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে তাঁরা দাবী করেন সাজঘরে কোনো রকম সমস্যা বা দ্বৈরথ নেই ক্রিকেটারদের মধ্যে। সবকিছু ঠিকই রয়েছে। বরং সংবাদমাধ্যমকে ভুয়ো খবর ছড়ানোর জন্য দোষী সাব্যস্ত করেন ক্রিকেটাররা। তবে ২০০৭-এর চ্যাম্পিয়ন দল ভারত ২০০৯ সালে সুপার এইট পর্বে তিন ম্যাচের তিনটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হেরে বিদায় নেওয়ায় জোরালো হয়েছিলো সংঘাতের তত্ত্ব।

স্পট-ফিক্সিং বিতর্কে জড়ায় ধোনির চেন্নাই দল-

MS Dhoni and CSK | Image: Getty Images
MS Dhoni and CSK | Image: Getty Images

মহেন্দ্র সিং ধোনির (MS Dhoni)  ক্রিকেট কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় বিতর্ক নিঃসন্দেহে আইপিএলের স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে তাঁর দল চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) জড়িয়ে যাওয়া। ২০০৮ থেকে চেন্নাই ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে জড়িত তিনি। দিল্লী পুলিশের তদন্তে আইপিএলের অন্দরে স্পট-ফিক্সিং-এর কথা যখন সামনে এসেছিলো, তখন তাতে জড়িয়ে গিয়েছিলও চেন্নাই সুপার কিংসের নাম। বুকিদের সাথে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে বিদ্ধ হয়ে কড়া জেরার মুখে পড়তে হয় চেন্নাই সুপার কিংস মালিক নেন শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মইয়াপ্পনকে (Gurunath Meiyappan)। দলের অধিনায়ক হিসেবে তদন্তকারীদের জেরার মুখে পড়তে হয়েছিলো ধোনিকেও। তদন্তের সাথে জড়িত এক আইনজীবী ধোনিকে (MS Dhoni)  ‘অসৎ’ বলেছিলেন সেই সময়। তবে স্পট-ফিক্সিং-এর সাথে তাঁর কোনোরকম যোগাযোগ পাওয়া অবশ্য যায় নি।

রাজস্থান রয়্যালস ফ্র্যাঞ্চাইজির তিন খেলোয়াড়-শান্তাকুমারন শ্রীশন্থ (S Sreeasanth), অজিত চান্ডিলা (Ajit Chandila) এবং অঙ্কিত চৌহান, এই স্পট ফিক্সিং মামলায় ধরা পড়েন। তাঁদের নির্বাসিত করে বিসিসিআই। জেল-হাজতও হয়েছিলো। ধোনির বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকলেও অভিযুক্ত হয়েছিলো চেন্নাই দল। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের আইপিএলে নির্বাসিত করা হয়েছিলো তাদের। একই শাস্তি জুটেছিলো রাজস্থান রয়্যালসের (RR) ভাগ্যে। যে দুই বছর সিএসকে (CSK) আইপিএলে অংশ নিতে পারে নি, সেই দুই মরসুম মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)  রাইজিং পুণে সুপার জায়ান্টসের (RPSG) হয়ে মাঠে নামেন।

Also Read: গদি হারাতে চলেছেন জয় শাহ, তার কাছের বন্ধুই হবেন বিসিসিআইয়ের নতুন বস !!

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *