গত ৯ জুলাই টিম ইন্ডিয়ার (Team India) নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। রাহুল দ্রাবিড়ের উত্তরসূরি হিসেবে কাজটা সহজ নয় তাঁর জন্য। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে জয় দিয়েই শুরুটা হয়েছে তাঁর কোচিং কেরিয়ারের। কিন্তু এরপর ওডিআই সিরিজে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়। ২৭ বছর পর লঙ্কানদের বিপক্ষে কোনো দ্বিপাক্ষিক ওডিআই সিরিজ হারে ভারত (Team India)। সমালোচনার মুখে পড়েন নতুন কোচ। গম্ভীরের অলরাউন্ডার-নির্ভর স্ট্র্যাটেজি ও ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা ভোট পায় নি বিশেষজ্ঞদের। একইসাথে রিয়ান পরাগ, হর্ষিত রাণাদের মত অনভিজ্ঞ তরুণদের দ্রুত সামনে এগিয়ে দেওয়ার প্রবণতার জন্যও সমালোচিত হতে হয় গম্ভীরকে। নিজের মতবাদ থেকে এখনি তিনি যে সরছেন না, তা বোঝা গেলো বাংলাদেশ সিরিজের দল সামনে আসার পরেই।
Read More: IPL 2025: নিলামের আগেই চমক দিচ্ছে চেন্নাই, ছিনিয়ে নিচ্ছে RCB-র সেরা অস্ত্র’কে !!
যশ দয়ালের নির্বাচনে বিস্মিত ক্রিকেটদুনিয়া-
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চেন্নাই টেস্টের যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন নির্বাচকেরা তাতে জায়গা পেয়েছেন যশ দয়াল (Yash Dayal)। উত্তরপ্রদেশের বাম হাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলারের প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ নেই কারও, কিন্তু এখনি জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামার জন্য তিনি আদৌ কি তৈরি? এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে গতকাল থেকে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৪টি মাত্র ম্যাচ খেলেছেন যশ, লিস্ট-এ ম্যাচের সংখ্যা মাত্র ২০।
আইপিএলেও এখনও অবধি কেবল তিন মরসুমই কাটিয়েছেন তিনি। উল্লেখযোগ্য পারফর্ম্যান্স’ও তেমন নেই। সাম্প্রতিক ফর্মের নিরিখেও তাঁর থেকে এগিয়ে থাকবেন একঝাঁক ফাস্ট বোলার। দলীপ ট্রফির ম্যাচে আহামরি ছিলো না পারফর্ম্যান্স। তার আগে আইপিএলেও তেমন দাগ কাটতে পারেন নি। আচমকা আবেশ খান, মুকেশ কুমারদের পিছনে ফেলে তিনি সটান টিম ইন্ডিয়াতে (Team India) কি করে পৌঁছে গেলেন তা বোধগম্য হচ্ছে না ক্রিকেটদুনিয়ার।
এই সমস্যায় আগেও ভুগেছে টিম ইন্ডিয়া-
আইপিএল (IPL) বা ঘরোয়া ক্রিকেটে এক বা দুই মরসুমে ভালো পারফর্ম্যান্স করার পরেই যে সকল তারকারা ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে, তাঁদের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছেন অনেকেই। এই তালিকার সাম্প্রতিকতম তিনটি নাম হতে পারেন উমরান মালিক (Umran Malik), পৃথ্বী শ ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার। ভারতীয় দলে এক্সপ্রেস পেসারের অভাব দীর্ঘ সময়ের। নিয়মিত ১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিবেগে বোলিং করতে বড় একটা দেখা যায় না কাউকে। সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পারতেন জম্মু-কাশ্মীরের উমরান মালিক। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে তাঁর বলের গতিবেগ ছুঁয়ে ফেলেছিলো ১৫৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা’র কাঁটা। তড়িঘড়ি টি-২০ ও ওডিআই খেলানো হয় তাঁকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে পারেন নি উমরান। এখন টিম ইন্ডিয়া (Team India) থেকে অনেক দূরে তিনি।
প্রতিভার অপচয় দেখা গিয়েছে পৃথ্বী শ-এর (Prithvi Shaw) ক্ষেত্রেও। ২০১৮ সালে অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন মুম্বইয়ের তরুণ। একটা সময় তাঁকে দ্বিতীয় শচীন তেন্ডুলকর বলে অভিহিত করছিলো সংবাদমাধ্যম। দেশের হয়ে যখন প্রথম মাঠে নামেন তিনি, তখনও আঠারো বছর বয়স তাঁর। অভিষেক টেস্টে শতরান’ও করেছিলেন। কিন্তু বেশীদিন লাইমলাইটে থাকা হয় নি তাঁর। চোট-আঘাত ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অচিরেই ছিটকে যান টিম ইন্ডিয়া(Team India) থেকে। ২০২১-এর পর আর ভারতের জার্সি গায়ে মাঠে নামাই হয় নি তাঁর। ২০২১-এর আইপিএলে নজর কেড়েছিলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। হার্দিক পান্ডিয়ার বিকল্প হিসেবে কিছু ওডিআই ও টি-২০তে খেলানো হয় তাঁকেও। মধ্যপ্রদেশের অলরাউন্ডার’কে নিয়ে খেলা ফাটকাও কাজে আসে নি। তিনিও এই মুহূর্তে নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বৃত্তে।