২০১১-এর বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার সাফল্যে বড়সড় ভূমিকা ছিলো বীরেন্দ্র শেহবাগের (Virender Sehwag)। অধিকাংশ ম্যাচেই তিনি ইনিংস শুরু করতেন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মীরপুরে উদ্বোধনী ম্যাচে করেছিলেন ১৭৫। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা বা পাকিস্তানের বিপক্ষেও ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন ডান হাতি ওপেনার। তবে বিশ্বকাপ স্বপ্ন নাকি অধরাই থাকতে পারত তাঁর। ২০০৭-০৮ মরসুমে দল থেকে বাদ পড়ার পর ভেবেছিলেন ওয়ান ডে ক্রিকেট থেকেই সরে দাঁড়াবেন। অধিনায়ক ধোনি’ও সেই সময় ভরসা রাখেন নি তাঁর উপর। তবে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া শেহবাগকে (Virender Sehwag) সঠিক দিশা দেখিয়েছিলেন তাঁর ‘মেন্টর’ শচীন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar), অকপটে জানিয়েছেন ‘নজফগড়ের নবাব।’ সম্প্রতি পদ্মজিত শেহরাওয়াত’কে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানেই কেরিয়ারের নানা অজানা তথ্য ফাঁস করেছেন কিংবদন্তি তারকা।
Read More: দলের কোহিনূরকে হারাচ্ছে KKR, সঞ্জুকে দলে আনতে নেওয়া হলো চরম সিদ্ধান্ত !!
শচীনের পরামর্শে প্রত্যাবর্তন শেহবাগের-

স্মৃতি রোমন্থন করতে বসে শেহবাগ (Virender Sehwag) জানিয়েছেন, “২০০৭-০৮ মরসুমে অস্ট্রেলিয়াতে আমি ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম তিনটি (পাঁচটি) ম্যাচ খেলেছিলাম। তারপর মহেন্দ্র সিং ধোনি আমায় বাদ দেন। আমি ভেবেছিলাম যদি আমার পক্ষে প্রথম একাদশের অংশ হওয়া সম্ভব না নয় তাহলে ওয়ান ডে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়ার কোনো অর্থ নেই। তখনই আমি (শচীন) তেন্ডুলকরের কাছে গিয়ে বলি ,’আমি ওয়ান ডে থেকে অবসরের কথা ভাবছি। উনি আমায় বলেন, ‘না, আমারও ১৯৯৯-২০০০ এ এমনই একটা সময় কেটেছিলো, যখন আমার মনে হয়েছিলো যে আমার ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। কিন্তু সেটা পরে কেটেও যায়। তুমি একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছ ঠিকই। কিন্তু এটা কেটে যাবে। আবেগপ্রবণ হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিও না। নিজেকে কিছুটা সময় আর ১-২টো সিরিজ দাও। তারপর সিদ্ধান্ত নিও’।”
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কমনওয়েলথ ব্যাঙ্ক’ ত্রিদেশীয় সিরিজে ৫টি ম্যাচ খেলেছিলেন শেহবাগ (Virender Sehwag)। ১৬.২০ গড়ে করেন ৮১ রান। ব্যর্থতা সত্ত্বেও কেরিয়ারে ইতি টানেন নি। বরং দলে ফেরার লড়াই চালিয়ে যান। শেষমেশ ছয় মাস পর সুযোগ মিলেছিলো কিটপ্লাই কাপে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৩ ইনিংসে ১৫০ রান করেন তিনি। দু’টি ম্যাচে পেরিয়েছিলেন অর্ধশতকের গণ্ডীও। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি তাঁকে। পাঁচ বছর খেলা চালিয়ে গিয়েছেন দাপটের সাথে। ২০১৩’র জানুয়ারিতে ইডেনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি ইতি টানেন ওয়ান ডে কেরিয়ারে। ‘ক্রিকেট ঈশ্বরের’ পরামর্শে যে লাভই হয়েছিলো তা মেনে নিয়েছেন শেহবাগ (Virender Sehwag)। তিনি বলেন, “ঐ সিরিজের পরে আমি মাঠে নামি এবং পরবর্তী সিরিজে অনেক রানও করি। পরে ২০১১-র বিশ্বকাপ খেলেছি এবং জিতেওছি।”
পুত্রের সাফল্যে খুশি কিংবদন্তি-

ক্রিকেটের আঙিনায় পা রেখেছেন বীরেন্দ্র শেহবাগের (Virender Sehwag) দুই পুত্র আর্যবীর (Aryavir Sehwag) ও বেদান্ত’ও। জ্যেষ্ঠ পুত্র আর্যবীর ইতিমধ্যে দিল্লীর বয়সভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলোয় দুর্দান্ত খেলে নিজের পরিচিতিও তৈরি করেছেন। এই মরসুমে দিল্লী প্রিমিয়ার লীগ টুর্নামেন্টেও দল পেয়েছেন তিনি। বিখ্যাত পিতার সন্তান হওয়া কতটা চাপের? শেহবাগের (Virender Sehwag) কাছে প্রশ্ন ছিলো পদ্মজিত শেহরাওয়াতের। চাঁচাছোলা উত্তরই দিয়েছেন প্রাক্তন টিম ইন্ডিয়া ওপেনার। বলেন, “চাপ দেওয়ার জিনিস, নেওয়ার নয়। আমি ওকে বলেছি যে ও যদি ক্রিকেটার হতে চায় তাহলে যেভাবে ইচ্ছা খেলতে পারে। এখনও তো সবকিছু ঠিকঠাকই রয়েছে। আশা রাখছি ও যাতে ভারতের হয়ে বা রঞ্জি ট্রফি খেলে। ও কঠিন পরিশ্রম করছে। মাত্র তো ১৫ বছর বয়স। ও ভবিষ্যতে অনেক কিছু শিখবে।”