“দেখিয়ে দেবো আমি কে…” ফের একবার হুঙ্কার সরফরাজ খানের ! এখনও রয়েছেন জাতীয় দলের ডাকের অপেক্ষায় !! 1

গত কয়েকমাসে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিসরে সবচেয়ে বেশী যে নামটি আলোচিত হয়েছে তা সরফরাজ খানের। রঞ্জি ট্রফিতে একের পর এক নয়া রেকর্ড গড়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন মুম্বইয়ের তরুণ ব্যাটার। জাতীয় দলের দরজায় ক্রমাগত কড়া নেড়ে চলেছেন তিনি। এখনও কেনো ভারতের হয়ে টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি? সেই প্রশ্ন তুলেছেন দেশের ক্রিকেট অনুরাগী জনতা। সংবাদমাধ্যমের স্টুডিও হোক বা সমাজমধ্যমের দেওয়াল সব জায়গাতেই সরফরাজের (Sarfaraz Khan) জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়া নিয়ে আলোচনা। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন স্বয়ং সরফরাজও। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ভারতীয় দলের অংশ হতে না পেরে হতাশা গোপন করেন নি তিনি। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দুটি টেস্টেও দলে রাখা হয় নি তাঁকে। সরফরাজের সমর্থনে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে ক্রিকেটমহলের অনেককে। এমনকি জাতীয় দলের ক্রিকেটার রবিচন্দ্রণ অশ্বিনও (Ravichandran Ashwin) সরফরাজের সমর্থনে গলা ফাটিয়েছেন। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিওতে তিনি জানান, “সরফরাজ নির্বাচকদের দরজায় শুধু টোকা দেয় নি। বরং দরজাটাই জ্বালিয়ে দিয়েছে।” চলতি মরসুমেও রানের মধ্যে রয়েছেন তিনি। এখনও প্রতীক্ষা করছেন জাতীয় দলের ডাক আসার। এর মধ্যেই আকাশ চোপড়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের কেরিয়ার সম্পর্কে নানা অজানা তথ্য তুলে ধরলেন মুম্বই ক্রিকেটের নতুন তারকা।

একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম, বলছেন সরফরাজ-

Sarfaraz Khan | image: twitter
Sarfaraz Khan has been brilliant for Mumbai in red ball cricket

লাল বলের ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য পরিসংখ্যান তাঁর। কিন্তু কেরিয়ারের শুরুতে তাঁকে নাকি ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফর্ম্যাটে খেলার যোগ্যই মনে করা হত না। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন সরফরাজ (Sarfaraz Khan) নিজেই। আকাশ চোপড়াকে (Aakash Chopra) দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “২০১৪ সালে অনূর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ থেকে ফিরে যখন ১ বা ২ বছর আইপিএলে খেলেছিলাম, তখন অনেকেই আমায় সাদা বলের খেলোয়াড় বলে দাগিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। লাল বলের বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়ার ক্ষমতা নেই আমার, এমনটাও শুনেছিলাম।” তবে এতে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে নি তাঁর। সেই কথাও কথোপকথনে উঠে এসেছে। সরফরাজ (Sarfaraz Khan) বলেন, “আমি জানতাম আমি পারবো। প্রচুর পরিশ্রম করেছি। আমি কেবল একটা সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। জানতাম যদি ৪ বা ৫টা রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই আমি দেখিয়ে দেবো আমার দক্ষতা কতখানি।” সরফরাজের কেরিয়ারের দিকে নজর দিলে অবশ্য বোঝা যায় যে বিন্দুমাত্র অত্যুক্তি করেন নি তিনি। ৩৭ ম্যাচে ৩৫০৫ রান করেছেন সরফরাজ (Sarfaraz Khan)। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার নতুন সংজ্ঞা লেখা সরফরাজ (Sarfaraz Khan)  প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ব্যাটিং গড়ের দিক থেকে বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। এক নম্বরে রয়েছেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। আর তিনে আরেক ভারতীয় কিংবদন্তী বিজয় মার্চেন্ট।

ক্রিকেট খুব কঠিন নয় সরফরাজ খানের কাছে-

Sarfaraz Khan | image: twitter
Sarfaraz Khan thinks cricket is not as hard as people make it out to be

লাল বলের খেলাকে একজন ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ পরীক্ষা বলে মনে করা হয়। তাঁর ধৈর্য্য, অধ্যবসায়, দক্ষতা সবকিছুর চূড়ান্ত পরীক্ষা হয় দীর্ঘতম ফর্ম্যাটে। তবে বিষয়টা ততটাও কঠিন নয় বলেই জানিয়েছেন সরফরাজ খান (Sarfaraz Khan)। সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “মুম্বইয়ের জার্সিতে আমার প্রথম শতরানটাই ট্রিপল সেঞ্চুরিতে পরিণত হলো। তারপরই আমি বুঝলাম লোকজন যতটা বলেন, ততটাও কঠিন নয় (লাল বলের ক্রিকেট)। ছোটোবেলা থেকেই ব্যাট হাতে তুলে নেওয়ার ইচ্ছে ছিলো। মুম্বই লেখা জার্সি ও হেলমেট পরে ক্রিকেট খেলাও স্বপ্ন ছিলো। সেই স্বপ্নপূরণের স্বাদ কখনো ভুলবো না। সেই অনুভূতিটা কখনো মন থেকে মুছে যাবে না।”

ডিভিলিয়ার্সের থেকে তারিফ পেয়েছিলেন সরফরাজ-

Sarfaraz Khan | image: twitter
Ab De Villiers praised Sarfaraz Khan when the Mumbai youngster was at RCB

আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দলের সদস্য ছিলেন সরফরাজ খান (Sarfaraz Khan)। ক্রিস গেইল (Chris Gayle), বিরাট কোহলি (Virat kohli), এবি ডিভিলিয়ার্সের মত তারকাদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয়েছিলো তাঁর। সরফরাজের প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন প্রোটিয়া কিংবদন্তী ডিভিলিয়ার্সও (AB De Villiers)। তরুণ বয়সে সরফরাজের প্রতিভার ধারেকাছেও তিনি ছিলেন না বলেন নিজমুখেই নাকি স্বীকার করে নিয়েছিলেন ডিভিলিয়ার্স। সাক্ষাৎকারে উঠে আসে সেই প্রসঙ্গও। সরফরাজ জানান, “আমি কখনও ওঁকে (ডিভিলিয়ার্স) অনুশীলন করতেই দেখতাম না। একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘আপনি অনুশীলন করেন না কেনো?’ উত্তরে ডিলিলিয়ার্স আমায় বলেছিলেন ‘আমি যখন তোমার বয়সী ছিলাম, তখন প্রচুর অনুশীলন করতাম।’ তোমার মত এত প্রতিভাবান ছিলাম না আমি।” তরুণ ব্যাটারকে পরামর্শও দেন এবিডি। বলেন, “কেবল খেলতে থাকো।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *