২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক কেরিয়ার শুরু হয়েছিলো সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson)। হারারের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন প্রথম টি-২০ ম্যাচ। এরপর কেটে গিয়েছে আট বছরের বেশী সময়। এর মধ্যে তিনি খেলেছেন মাত্র ২৪টি টি-২০। অনেক পরে কেরিয়ার শুরু করেও শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer), ঈশান কিষণ’রা (Ishan Kishan) জাতীয় দলে অনেক নিয়মিত। কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটে অভিষেকের পর অনেকগুলো দিন সঞ্জুকে (Sanju Samson) অপেক্ষা করতে হয়েছে পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে দেশের জার্সি গায়ে চাপানোর জন্য। শেষমেশ ২০২১ সালে মেলে সুযোগ। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মাঠে নামেন কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। এরপর ওডিআই দলেও লাগাতার তাঁকে সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবেন নি নির্বাচকেরা। গত দুই বছরে ভারতের হয়ে তিনি খেলেছেন মাত্র ১৩টি ম্যাচই।
পারফর্ম করতে ব্যর্থ হয়েছেন সঞ্জু (Sanju Samson), এমনটা সম্ভবত তাঁর অতি বড় নিন্দুক’ও বলতে পারবেন না। কুডি-বিশের খেলায় অনভ্যস্ত পাঁচ বা ছয় নম্বরে খেলে ২১ ইনিংসে প্রায় ২০ গড় ও ১৩৪ স্ট্রাইক রেটে ৩৭৪ করেছেন তিনি। অন্যদিকে একদিনের খেলায় প্রায় ৫৬ গড়ে ১২ ইনিংসে করেছেন ৩৯০ রান। কেন তিনি বারবার জাতীয় দলের রেডার থেকে ছিটকে যান সেই রহস্য আজও ভেদ করতে পারেন নি ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। এর আগে যখন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচক চেতন শর্মার স্টিং অপারেশনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিলো, তখন জানা গিয়েছিলো যে বোর্ডের অন্দরে উইকেটরক্ষক ব্যাটারদের ‘পেকিং অর্ডারে’ অনেক পিছিয়ে সঞ্জু। চেতন ও তাঁর সঙ্গীরা সরে গিয়েছেন অনেক দিন হলো। নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছে অজিত আগরকারের (Ajit Agarkar) নেতৃত্বাধীন কমিটি, কিন্তু সঞ্জুর সাথে বঞ্চনার ছবিতে কোনো পরিবর্তন আসে নি।
Read More: ভাগ্য খুললো সঞ্জু সহ এই প্লেয়ারের, পেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওডিআই দলে সুযোগ !!
সঞ্জুর প্রতি বঞ্চনার অভিযোগে সরব ভক্তেরা-

গতকাল রাতের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেছে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের গোড়া অবধি দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটেই প্রোটিয়াদের মুখোমুখি হবে ভারত। ওডিআই ফর্ম্যাটে দলে ফিরেছেন সঞ্জু (Sanju Samson), বাদ পড়েছেন টি-২০ থেকে। স্কোয়াড সামনে আসার পর একটি ব্যাপার নজর এড়ায় নি নেটিজেনদের। যাতে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন যে নির্বাচকদের ভাবনায় স্থায়ী ভাবে নেই সঞ্জু স্যামসন। ২০২৩ সালে এশিয়া কাপ, ওডিআই বিশ্বকাপের মত একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বড় দুটি প্রতিযোগিতা ছিলো। সেখানে প্রায় সারা বছর ওডিআই-তে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিলো সঞ্জুকে।
এশিয়া কাপে অতিরিক্ত ক্রিকেটার হিসেবে শ্রীলঙ্কা নিয়ে যাওয়া হলেও কে এল রাহুল ফিট হয়ে ওঠা মাত্র তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিলো। জায়গা দেওয়া হয় নি ওডিআই বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। ওডিআই’তে নিয়মিত না হলেও বছরের মাঝামাঝি থেকে প্রতিটি টি-২০ সিরিজে খেলেছেন সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ হোক বা আয়ারল্যান্ড-সবক’টি সফরেই গিয়েছিলেন তিনি। খেলেওছেন বেশ কয়েকটি ম্যাচ। আবার এশিয়ান গেমসের (Asian Games) মত প্রতিযোগিতায় উইকেটরক্ষক হিসেবে অনভিজ্ঞ জিতেশ শর্মাকে পাঠানো হলেও শিকে ছেঁড়ে নি সঞ্জুর (Sanju Samson) ভাগ্যে।
আগামী বছরের জুন মাসে টি-২০ বিশ্বকাপ। এখন থেকেই প্রস্তুতি সারছে টিম ইন্ডিয়া। আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ বড় পরীক্ষা হতে চলেছে দলের কাছে। কিন্তু তার ঠিক ছেঁটে ফেলা হলো সঞ্জুকে। আগামী এক বছর ওডিআই ক্রিকেটের তেমন গুরুত্ব নেই। সেখানে ওডিআই’তে ফেরানো হলো সঞ্জুকে। এক প্রকার বুঝিয়েই দেওয়া হলো যে তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সিরিজে জায়গা হলেও বড় টুর্নামেন্টে বোর্ড আস্থা রাখছে না তাঁর উপরে। কেরলের ক্রিকেটারের সাথে বিসিসিআই-এর আচরণে রুষ্ট সঞ্জু (Sanju Samson) ভক্তেরা। তারা বঞ্চনার অভিযোগ এনে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।