২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক আঙিনায় পা দিয়েছিলেন সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন প্রথম টি-২০। এরপর প্রায় কেটে গিয়েছে এক দশক। কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার এই দীর্ঘ সময়ে খেলতে পেরেছেন মাত্র ৩৫টি টি-২০ ম্যাচ। পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে পথচলা শুরু করার জন্য ২০২১ অবধি অপেক্ষা করতে হয়েছিলো তাঁকে। শেষমেশ শিকে ছেঁড়ে শ্রীলঙ্কা’র বিরুদ্ধে। সেখানেও দলে নিয়মিত হয়ে ওঠা আর হয় নি তাঁর। চার বছরে সঞ্জু (Sanju Samson) সুযোগ পেয়েছেন কেবল ১৬টি ম্যাচে। সাদা বলের দুই ফর্ম্যাটেই ভালো পারফর্ম্যান্স করলেও বাদ পড়তে হয়েছে তাঁকে। বদলে একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন অন্য কেউ। এই টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে ক্ষতি হয়েছে কেরিয়ারের। নিজের দক্ষতার শিখরে আর পা দেওয়া হয় নি তাঁর, এমনটাই মনে করছেন সঞ্জু’র বাবা স্যামসন বিশ্বনাথ (Samson Vishwanath)।
Read More: CT 2025: পাকিস্তান থেকে সরে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, শীঘ্রই নয়া ভেন্যু ঘোষণা করবে আইসিসি !!
ভালো ছন্দে রয়েছেন সঞ্জু স্যামসন-
গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir) কোচ হয়ে আসার পর থেকে ভাগ্য খুলেছে সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson)। সাদা বলের ক্রিকেটে তিনি নিয়মিত সুযোগ দিচ্ছেন তাঁকে। নয়া কোচের আস্থার মান’ও রেখেছেন ডান হাতি ব্যাটার। আগুনে ছন্দে রয়েছেন তিনি। এই বছর আইপিএলে (IPL) ভালো খেলেছিলেন। ভারতের জার্সি গায়েও একাধিক ধুন্ধুমার ইনিংস ইতিমধ্যেই এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে একটি চমকপ্রদ অর্ধশতক করেছিলেন। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে (IND vs BAN) হায়দ্রাবাদে কেরিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ শতরানেরও মালিক হন তিনি। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে (IND vs SA) ডারবানেও জ্বলে ওঠেন তিনি। ক্রিকেটদুনিয়ার চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে টানা দুটি টি-২০ ইনিংসে করেন শতরান।
বিধ্বংসী স্যামসন’কে (Sanju Samson) দেখে আক্ষপের সুর ক্রিকেটদুনিয়ায়। এতগুলো বছরে যদি প্রাপ্য সুযোগ পেতেন তিনি, তাহলে আরও অনেক শৃঙ্গ যে জয় করতে পারতেন, তা মনে করছে ক্রিকেটমহল। সেই ধারণার সাথে সহমত পোষণ করেন সঞ্জু’র বাবা স্যামসন বিশ্বনাথ’ও। গত এক দশকে যাঁদের হাতে ছিলো দলের দায়িত্ব-সেই ধোনি, কোহলি ও রোহিত শর্মা’কে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিশানা করেছেন তিনি। সরাসরি তিন মহাতারকার নাম উচ্চারণ করেন নি স্যামসন বিশ্বনাথ। কিন্তু দুইয়ে দুইয়ে চার করে নিতে কোনো সমস্যা হয় নি কারও। তোপের মুখে পড়তে হয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী কোচ রাহুল দ্রাবিড়কেও (Rahul Dravid)। একইসাথে বর্তমান কোচ গৌতম গম্ভীর ও অধিনায়ক সূর্যকুমার’কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
তারকাদের দিকে তোপ দাগলেন সঞ্জুর বাবা-
পুত্রের সাথে সঠিক আচরণ করে নি ভারতীয় দল, এমনটাই মনে করেন সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) বাবা। যথেষ্ট প্রতিভা থাকলেও যেভাবে তাঁর পুত্রকে মাঝেমধ্যেই কোনো অজানা কারণে ছেঁটে ফেলা হত তা নিয়ে তিনি যে ক্ষুব্ধ তাও স্পষ্ট করেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারে বলেন, “যাঁরা আমার ছেলের গত দশটা বছর নষ্ট করে দিলো তাঁরা সত্যিকারের ক্রীড়াব্যক্তিত্ব বলে আমি মনে করি না। ওরা আমার ছেলের দশটা বছর নষ্ট করেছে, ওর যত ক্ষতি করতে চেয়েছে, সঞ্জু ততটাই কঠিন হয়ে এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে এসেছে।” পুত্রকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামী বছরগুলো ওর (সঞ্জুর) হতে চলেছে। যে বছরগুলো ও হারিয়েছে তা পুষিয়ে দেবে। ওর ব্যাটিং ক্লাসিক ঘরাণা’র, দেখে শচীন বা দ্রাবিড়ের স্মৃতি মনে পড়ে।” পিতার অভিযোগ সম্পর্কে এখনও মুখ খোলেন নি সঞ্জু স্বয়ং।