SA vs IND: ইংল্যান্ডের মাটিতে লাল বলের ফর্ম্যাটে ২০০৭ সালে সিরিজ জিতেছে ভারত। ২০২১-২২ সালেও ড্র রাখতে পেরেছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। অস্ট্রেলিয়াকে তাদের ঘরের মাঠে হারানোর রেকর্ড’ও রয়েছে ভারতীয় দলের। ২০১৮ ও ২০২০-২১ সালে জোড়া সিরিজ জিতেছে ‘মেন ইন ব্লু।’ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও রয়েছে অ্যাওয়ে টেস্ট সিরিজ জয়ের নজির। কেবল অধরা রয়েছে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সাফল্য অর্জন। ২০২৩ সালের শেষের দিকে সেই অধরা মাধুরীকে স্পর্শ করার স্বপ্ন বুকে নিয়েই প্রোটিয়াদের ডেরায় পা রেখেছিলো টিম ইন্ডিয়া। পিছিয়ে পড়েও টি-২০ সিরিজে সমতা ফেরানো ও সিনিয়র তারকাদের ছাড়াই একদিনের সিরিজে ২০১ জয় আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিলো ভারতের। কিন্তু সুখের সপ্তম স্বর্গ থেকে বাস্তবের রুক্ষ জমিতে টিম ইন্ডিয়াকে টেনে নামালো সেঞ্চুরিয়নের টেস্ট ম্যাচ। তিন দিনেই মুখ থুবড়ে পড়লো রোহিত-বাহিনী।
Read More: SA vs IND: দ্বিতীয় টেস্টের আগে টিম ইন্ডিয়ায় বড় পরিবর্তন, টিমে এন্ট্রি নিলেন এই ম্যাচ উইনার খেলোয়াড় !!
প্রথম টেস্টে লজ্জার হার ভারতের-
গত দুই টেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনালে অংশ নিয়েছে ভারতীয় দল। দেশে হোক বা বিদেশে, লাল বলের ফর্ম্যাটে দুনিয়ার অন্যতম ধারাবাহিক দল হিসেবে সুখ্যাতি কুড়িয়ে নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। সেই সুনামের সাথে সুবিচার সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে করতে পারলো না ভারতীয় দল। কাগিসো রাবাডা (Kagiso Rabada), নান্দ্রে বার্গারদের (Nandre Burger) বিরুদ্ধে আগাগোড়া গুটিয়ে রইলেন রোহিত শর্মা, শুভমান গিল’রা। টসে জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিং-এর আমন্ত্রণ জানান প্রোটিয়া অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা। রাবাডার বিক্রমে শুরুতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিলো টিম ইন্ডিয়া।
হাল ধরেন কোহলি (Virat Kohli) ও শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)। যদিও লাঞ্চের পর ফেরেন দুজনেই। এরপর প্রায় একা কুম্ভ হয়ে লড়াই করেন কে এল রাহুল (KL Rahul)। তাঁর শতরান ভারতকেকে পৌঁছে দেয় ২৪৫ রানে। ২৪ রানের ইনিংস খেলেন শার্দুল ঠাকুর।জবাবে ব্যাট করতে নেমে সাবলীল ইনিংস খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। কেরিয়ারের শেষ সিরিজ খেলছেন ডিন এলগার (Dean Elgar)। সেঞ্চুরিয়নে ১৮৫ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন তিনি। মার্কো ইয়ানসেনের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংস। বুমরাহ’র ৪ উইকেট সত্ত্বেও ৪০৮ রান তুলে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা।
১৬৩ রানে পিছিয়ে থাকা ভারত দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। ফের একবার অনবদ্য বোলিং করতে দেখা যায় নান্দ্রে বার্গার, রাবাডা, ক্যুৎসিয়েদের (Gerald Coetzee)। একমাত্র বিরাট কোহলি ছাড়া প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন নি কেউই। রোহিত, যশস্বী, শ্রেয়স এমনকি প্রথম ইনিংসে শতরান করা কে এল রাহুল (KL Rahul) অবধি ব্যর্থ হন। ১৩১ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। এরমধ্যে কোহলির একারই ৭৬ রান। বছরের শেষে র্যাঙ্কিং-এ শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও ইনিংস ও ৩২ রানে হেরে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় এক থেকে পাঁচে নেমে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়া।
দ্বিতীয় টেস্টে একাদশে রদবদল ভারতের-
আগামী ৩ থেকে ৭ জানুয়ারি কেপ টাউনের মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটি আয়োজিত হবে। সমতা ফেরাতে মরিয়া টিম ইন্ডিয়া একাদশে ব্যাপক রদবদল করতে চলেছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। দুই ইনিংসে যথাক্রমে পাঁচ ও শূন্য রান করেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। তিনি কেপ টাউনে নিজের ব্যর্থতা ভুলে রানের সন্ধানে থাকবেন। তবে তাঁর ওপেনিং জুটি বদলে যাওয়ার মুখে। দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১৭ ও ৫ রান করা যশস্বী জয়সওয়ালকে সরিয়ে খেলানো হতে পারে বাংলার অভিমণ্যু ঈশ্বরণকে (Abhimanyu Easwaran)। এর আগে ভারত-এ দলের হয়ে সফল হয়েছেন ২৮ বর্ষীয় অভিমণ্যু। তিন নম্বর থেকে সরতে পারেন শুভমান গিল’ও (Shubman Gill)। তাঁকে বাতিল করে শ্রেয়স আইয়ারকে তুলে আনা হতে পারে ব্যাটিং অর্ডারে।
পছন্দের চার নম্বরেই থাকতে পারেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ওডিআই ক্রিকেটের মত টেস্টেও পাঁচে খেলতে দেখা যেতে পারে কে এল রাহুলকে। প্রথম টেস্টে পিঠের ব্যথার কারণে খেলেন নি রবীন্দ্র জাদেজা (Ravindra Jadeja)। দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন তিনি। ছয়ে ব্যাটিং করতে পারেন তিনি। সাতে নামতে পারেন শ্রীকার ভরত। লোয়ার অর্ডারে খেলতে পারেন অন্ধ্রের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। দুই ইনিংসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন অশ্বিন। বল হাতেও পেয়েছেন কেবল ১ উইকেট। কেপ টাউনে নিঃসন্দেহে বাদ পড়বেন তিনি। একমাত্র স্পিনার হিসেবে থাকছেন জাদেজাই। আট নম্বরে দেখা যাবে শার্দুল ঠাকুরকে। বিশেষজ্ঞ পেসারদের মধ্যে জসপ্রীত বুমরাহ ও মহম্মদ সিরাজের সুযোগ পাওয়া নিয়ে বিন্দুমাত্র প্রশ্নচিহ্ন নেই। চোটের কারণে বাইরে থাকা শামির বিকল্প হিসেবে সেঞ্চুরিয়নে খেলছিলেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা। তাঁর বদলে কেপ টাউনের একাদশে ফিরবেন মুকেশ কুমার (Mukesh Kumar)।
দ্বিতীয় টেস্টে সম্ভাব্য ভারতীয় একাদশ-
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), অভিমণ্যু ঈশ্বরণ, শ্রেয়স আইয়ার, বিরাট কোহলি, কে এল রাহুল (উইকেটরক্ষক), রবীন্দ্র জাদেজা, কে এস ভরত, শার্দুল ঠাকুর, জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ সিরাজ, মুকেশ কুমার।