অস্ট্রেলিয়া সিরিজ (IND vs AUS) চলার সময়েই সামনে চলে এসেছিলো ভারতীয় ক্রিকেট দলের ফাটলগুলি। কোচ গম্ভীরের সাথে অধিনায়ক রোহিতের (Rohit Sharma) মতপার্থক্যের খবর প্রকাশিত হয়েছিলো সংবাদমাধ্যমে। ক্রিকেটারদের মধ্যেও যে সম্পর্কের সুতোগুলো সূক্ষ্ম হয়ে এসেছে, জানা গিয়েছিলো তাও। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে লজ্জাজনক হারের পরে যে রিভিউ মিটিং আয়োজন করেছিলো বিসিসিআই, সেখানে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়। দলীয় সংহতি ও শৃঙ্খলা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে জারি হয় বেশ কিছু নয়া নির্দেশিকাও। কিন্তু বোর্ডের হস্তক্ষেপের পরেও টিম ইন্ডিয়ার অন্দরের সমস্যাগুলি যে এখনও বিদ্যমান তার প্রমাণ মিললো গতকাল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) স্কোয়াড ঘোষণার জন্য আয়োজন করা হয়েছিলো সাংবাদিক সম্মেলন। তার নেপথ্য কাহিনী সামনে আসতেই ফের অস্বস্তিতে ‘মেন ইন ব্লু।’
Read More: কনুইয়ের চোটে কাহিল অধিনায়ক, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে চিন্তা বাড়লো দলের !!
হার্দিককে নিয়ে তুঙ্গে মতানৈক্য-
গতকাল দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে মুম্বইতে বিসিসিআই-এর সদর দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘন্টা পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ও মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকার (Ajit Agarkar)। এত দেরী কেন তা নিয়ে তখন থেকেই সংবাদমাধ্যমে শুরু হয়েছিলো চর্চা। অবশেষে সত্যিটা এসেছে সামনে। দৈনিক জাগরণ-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে যে টিম ম্যানেজমেন্টের মধ্যে মতের মিল না হওয়াতেই দুই ঘন্টা আটকে ছিলো সাংবাদিক সম্মেলনে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বৈঠক হয়েছিলো সেখানে রোহিত (Rohit Sharma) ও আগরকারকে নাকি শোনা গিয়েকে একই সুরে সুর মেলাতে। কার্যত সেখানে একঘরে হয়ে পড়েছিলেন কোচ গম্ভীর (Gautam Gambhir)। অধিনায়ক ও নির্বাচক প্রধানের দাবীই মানা হয়েছে বলে সামনে এসেছে তথ্য।
দৈনিক জাগরণে দাবী করা হয়েছে যে সহ-অধিনায়কত্ব প্রশ্নে রোহিত (Rohit Sharma) ও আগরকারের (Ajit Agarkar) সাথে একমত হতে পারেন নি কোচ গম্ভীর। তিনি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মত বড় টুর্নামেন্টে অভিজ্ঞ কাউকে চেয়েছিলেন রোহিতের ডেপুটি হিসেবে। তাঁর প্রথম পছন্দ ছিলো হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। কিন্তু কোচের মতামতকে গুরুত্ব বিশেষ দেওয়া হয় নি। শ্রীলঙ্কা সফরের পর ফের একবার অনভিজ্ঞ শুভমান গিলের (Shubman Gill) নামই ঘোষণা করা হয়েছে সহ-অধিনায়ক হিসেবে। প্রসঙ্গত টি-২০ বিশ্বকাপের পর কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে ভারতের নেতা হওয়ার দৌড়েও এগিয়ে ছিলেন হার্দিকই। কিন্তু সকলকে চমকে দিয়ে রোহিতের (Rohit Sharma) উত্তরসূরি হিসেবে সূর্যকুমারের নাম ঘোষণা করে বিসিসিআই। হার্দিককে সরানোর জন্য তখনও যে আগরকাররাই আড়ালে থেকে কলকাঠি নেড়েছিলেন, গতকালের ঘটনার পর স্পষ্ট হলো তা।
সঞ্জুকে নিয়েও গম্ভীর বনাম আগরকার-
ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) স্কোয়াডের অন্যতম চর্চিত বিষয় ঋষভ পন্থের সুযোগ পাওয়া। লাল বলের ক্রিকেটে নিঃসন্দেহে দিল্লীর তারকা দেশের সেরা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে পারফর্ম্যান্স আহামরি না হওয়া সত্ত্বেও ঠিক কোন কারণে তিনি রয়েছেন দুবাইগামী স্কোয়াডে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ৩১টি একদিনের ম্যাচে ৩৩.৫০ গড়ে ঋষভের (Rishabh Pant) সংগ্রহ মাত্র ৮৭১ রান। শতরানের সংখ্যা ১। তাঁর তুলনায় পরিসংখ্যানের দিক থেকে অনেক এগিয়ে সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। ১৫ ম্যাচ খেলে ৫৬.৬৬ গড়ে তিনি করেছেন ৫১০ রান। সীমিত ওভারের খেলায় শেষ ১৩ আন্তর্জাতিক ইনিংসের মধ্যে ৪টি শতরানও রয়েছে তাঁর। তাও তিনি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ডাক না পাওয়ায় হতাশ অনেকেই। দৈনিক জাগরণ জানাচ্ছে যে গম্ভীর আদতে চেয়েছিলেন স্যামসনকেই। কিন্তু রোহিত-আগরকার জুটির চাপেই দলে ঠাঁই হয়েছে ঋষভের।