IPL 2024: ২০২২ সালে নিজেদের আইপিএল (IPL) অভিযানের শুরুটা সাড়া জাগিয়ে করেছিলো গুজরাত টাইটান্স (GT)। প্রথম মরসুমেই সবাইকে টেক্কা দিয়ে ট্রফি জিতে নেয় তারা। দ্বিতীয় মরসুমেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলো গুজরাত। প্রথম দল হিসেবে পা রেখেছিলো প্লে-অফে। অনবদ্য পারফর্ম করে পৌঁছে গিয়েছিলো ফাইনালেও। কিন্তু শেষমেশ চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) বিরুদ্ধে হেরে রানার্স-আপ হয়েছিলো তারা। টানা দু বছর চোখধাঁধানো পারফর্ম্যান্সের পর তৃতীয় মরসুমে খানিক ব্যাকফুটে গুজরাত। নতুন অধিনায়ক শুভমান গিলের (Shubman Gill) অধীনে পরপর হেরে বিদায়ের মুখে তারা।
এই বছরের আইপিএল (IPL) শুরু হওয়ার আগেই বড় রদবদল দেখা গিয়েছিলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স শিবিরে। গত দুই মরসুমের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya) দল ছেড়ে ফিরে গিয়েছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। নয়া নেতা হিসেবে শুভমান গিলের হাতে দায়িত্ব তুলে দেয় ফ্র্যাঞ্চাইজি। শুরুটা জয় দিয়ে করলেও ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়তে থাকে গুজরাত। ঘরে হোক বা ঘরের বাইরে-তাদের টেক্কা দিয়ে যেতে থাকে পাঞ্জাব কিংস, লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের (LSG) মত দলগুলি। লীগ তালিকায় নামতে নামতে আপাতত নয়ে পৌঁছেছে গুজরাত। কঠিন সময়ে তাদের উপর চাপ আরও বাড়িয়েছে রশিদ খানের (Rashid Khan) ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা।
Read More: TOP 3: চলতি IPL-এ মুম্বইয়ের মুখ থুবড়ে পড়ার পিছনে ‘ভিলেন’ এই তিন ক্রিকেটার !!
চোট পেয়ে অনিশ্চিত রশিদ খান-
গতকাল অ্যাওয়ে ম্যাচে গুজরাত টাইটান্স (GT) মুখোমুখি হয়েছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (RCB)। অফ ফর্মে থাকা বেঙ্গালুরুকেও হারাতে পারলো না তারা। একই সাথে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র রশিদ খানের চোট চিন্তা বাড়ালো কোচ আশিষ নেহরার। প্রথমে ব্যাটিং করেছিলো গুজরাত। শুভমান, সাই সুদর্শন’রা দ্রুত সাজঘরে ফেরায় ক্রিজে ব্যাট হাতে নামতে হয়েছিলো আফগান লেগস্পিনারকে। সেই সময়ই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনের ছোঁড়া একটি বলে কাঁধে আঘাত পান রশিদ (Rashid Khan)। এরপরেও যন্ত্রণা সামলে ব্যাটিং চালিয়ে গেলেও তিনি যে অস্বস্তিতে রয়েছেন তা বোঝা যাচ্ছিলো। বেশীদূর ইনিংসকে এগিয়েও নিয়ে যেতে পারেন নি। ১৮ করেই ফেরেন সাজঘরে।
বোলিং-এর সময়ও চেনা ছন্দে পাওয়া যায় নি রশিদ খান’কে (Rashid Khan)। কাঁধের চোটের কারণেই হয়ত গুটিয়ে রইলেন তিনি। প্রথম ওভারেই খরচ করে বসেন ১৬ রান। মোট ১.৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে একটি উইকেটও গতকালের ম্যাচে পান নি রশিদ। তাঁর ওভারেই জয় সুনিশ্চিত করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। গুজরাত শিবির থেকে এখনও অবধি সুনির্দিষ্ট করে রশিদ খানের (Rashid Khan) চোট নিয়ে কিছু জানানো হয় নি। যা বাড়িয়েছে আশঙ্কা। দিনকয়েক আগেই কোমরে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন তিনি। মাঠের বাইরেও ছিলেন অনেকদিন। সামনেই রয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ। কাঁধের চোট যদি গুরুতর হয় তাহলে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাকে মাথায় রেখে সম্ভবত আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলিতে খেলবেন না রশিদ।
সপ্তম হার গুজরাতের, বিদায় আসন্ন-
গতকালের ম্যাচে টসের মুদ্রা পড়েছিলো গুজরাত টাইটান্সের (GT) বিপক্ষে। প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি। পাওয়ার প্লে’তে গুজরাত ব্যাটিং-এর ভিত নড়িয়ে দেন মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। দুই ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহা ও শুভমান গিলকেই আউট করেন তিনি। ঋদ্ধি ১ ও শুভমান ২ রান করে ফেরেন। গুজরাতের সফলতম ব্যাটার সাই সুদর্শনকেও পাওয়ার প্লে’র মধ্যেই ক্যামেরন গ্রিন আউট করায় ম্যাচে চালকের আসনে বসে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এরপর শাহরুখ, রাহুল তেওয়াটিয়া, ডেভিড মিলার চেষ্টা করেছিলেন ইনিংসকে গতি দিতে। শেষমেশ ১৪৭ রানে অল-আউট হয় গুজরাত।
রান তাড়া করতে নেমে ঝড়ের গতিতে শুরুটা করেছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। জ্বলে ওঠেন অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি। পাওয়ার প্লে’তে ৯২ রান তুলে নেয় বেঙ্গালুরু। এর মধ্যে দু প্লেসির ব্যাট থেকেই আসে ২৩ বলে ৬৪ রান। বিরাট কোহলি (Virat Kohli) করেন ২৭ বলে ৪২ রান। মিডল অর্ডার ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও সামলে নেন দীনেশ কার্তিক। তাঁর ও স্বপ্নীল সিং-এর জুটি জয় এনে দেয় বেঙ্গালুরুকে। মরসুমের চতুর্থ জয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাত নম্বরে উঠে আসে তারা। হেরে নয়ে নেমে যায় গুজরাত (GT)।