ভারতীয় ক্রিকেটের ‘দ্বিতীয় দেওয়াল’ বলা হয় চেতেশ্বর পূজারাকে (Cheteshwar Pujara)। রাহুল দ্রাবিড়ের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে দেশের হয়ে ১০০’র বেশী টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন সৌরাষ্ট্রের ক্রিকেটার। দেশে হোক বা বিদেশে, যখনই দল বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে, তখনই ব্যাট হাতে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে চেতেশ্বর পূজারাকে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২০১৮-১৯ মরসুমে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জেতে ভারত। সেখানে সেরা ক্রিকেটারের পুরষ্কার পেয়েছিলেন তিনি। পূজারার (Cheteshwar Pujara) রক্ষণ টলাতে না পেরে হতদ্যম হতে দেখা গিয়েছিলো অস্ট্রেলীয় বোলারদের। ব্যাগি গ্রিনদের দেশে ২০২০-২১ মরসুমেও প্রতিরোধের নতুন নজির গড়তে দেখা গিয়েছিলো তাঁকে। শরীরে একের পর এক বলের আঘাত সয়ে দল’কে এনে দিয়েছিলেন সাফল্য। ম্যারাথন ইনিংস খেলতে সিদ্ধহস্ত পূজারা ধৈর্য্য, অধ্যবসায় আর দক্ষতার চূড়ান্ত নিদর্শন রেখেছেন দেশের মাটিতেও। করেছেন ত্রিশতক।
Read More: IND vs AUS: চোট পেলেন রোহিত শর্মা, আহত অধিনায়ককে নিয়ে চিন্তায় টিম ইন্ডিয়া !!
রঞ্জি ট্রফিতে ত্রিশতরান পূজারা’র-
দীর্ঘ সময় ক্রিজে থেকে প্রতিপক্ষের মনোবল ভাঙার ব্যাপারে জুড়ি নেই চেতেশ্বর পূজারা’র (Cheteshwar Pujara)। ২০১৩ সালের রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনালেও দেখা গিয়েছিলো তেমনই এক দৃশ্য। রাজকোটের মাঠে কর্ণাটকের মুখোমুখি হয়েছিলো সৌরাষ্ট্র। পূজারার বিক্রমে তারকাখচিত কর্ণাটকের সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্নের সলিল সমাধি হয়েছিলো রাজকোটের বাইশ গজে। প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নেয় সৌরাষ্ট্র দল। তিনে নামা পূজারা (Cheteshwar Pujara) আউট হন ৩৭ রান করে। চিরাগ জানি, জয়দেব শাহরাও উল্লেখযোগ্য রান পান নি। তবে অর্পিত ওয়াসাওয়াড়া’র ১৫২ রানের সুবাদে প্রথম ইনিংসে তারা তোলে ৪৬৯ রান। জবাবে ব্যাট করতে নামা কর্ণাটক তোলে ৩৯৬ রান। মনীশ পাণ্ডের (Manish Pandey) অনবদ্য ১৭৭ রান সত্ত্বেও প্রথম ইনিংসে লিড নিতে ব্যর্থ হয় তারা। পিছিয়ে পড়ে ৭৩ রানে।
প্রথম ইনিংসে লিড না পাওয়ায় সরাসরি জয়ের চেষ্টা করা ছাড়া উপায় ছিলো না কর্ণাটকের সামনে। কিন্তু তাদের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান চেতেশ্বর পূজারা (Cheteshwar Pujara)। সৌরাষ্ট্রের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করতে দেখা যায় তাঁকে। অভিমণ্যু মিঠুন, স্টুয়ার্ট বিনি (Stuart Binny), কৃষ্ণাপ্পা গৌতমদের মত চেনা মুখেরা ছিলেন কর্ণাটকের বোলিং আক্রমণে। কিন্তু পুজারাকে ঠেকাতে পারেন নি কেউই। ৪২৭ বল খেলেন তিনি। করেন ৩৫২ রান। লম্বা ইনিংসটি তিনি সাজান ৪৯ টি বাউন্ডারি ও ১টি ছক্কায়। শেষমেশ কৃষ্ণাপ্পা গৌতমের বলে যখন উইকেট হারান পূজারা (Cheteshwar Pujara), ততক্ষণে কর্ণাটকের আর কিছু করার নেই। ৯ উইকেটের বিনিময়ে ৭১৮ রান তোলে সৌরাষ্ট্র। কে এল রাহুল, মনীশ পাণ্ডেরা দ্বিতীয় বার ব্যাটিং-এর সুযোগই পান নি। প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে সেমিফাইনালে চলে যান পূজারা, জয়দেব উনাদকাটরাই।
দেখুন সেই ম্যাচের স্কোরকার্ড-
পূজারার প্রত্যাবর্তন চায় ক্রিকেটমহল-
২০২৩-এর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ব্যর্থতার পর জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয় চেতেশ্বর পূজারাকে (Cheteshwar Pujara)। এরপর কেটে গিয়েছে এক বছরেরও বেশী সময়। কিন্তু ডাক পান নি তিনি। বদলে শুভমান গিল’কে তিন নম্বরে খেলার সুযোগ করে দিয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। দেশের মাঠে পাঞ্জাবের তরুণ কিছু রান করলেও বিদেশে একেবারেই ব্যর্থ তিনি। গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে হতাশ করেছিলেন। চলতি বছরে অস্ট্রেলিয়ার মাঠেও রান পাচ্ছেন না শুভমান (Shubman Gill)। তাঁর হতশ্রী পারফর্ম্যান্স দেখে বিরক্ত ক্রিকেটজনতা। রঞ্জি ট্রফির আসরে নিয়মিত রান করে চলা চেতেশ্বর পূজারাকে ফেরানোর জন্য উঠছে দাবী। এই নিয়ে দিনকয়েক আগে অধিনায়ক রোহিত শর্মা’কেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিলো। ভাবনায় রয়েছেন সৌরাষ্ট্রের ক্রিকেটার, সাংবাদিক সম্মেলনে স্বীকার করে নিয়েছেন রোহিত।