৯ জুলাই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিলো গৌতম গম্ভীরকে (Gautam Gambhir)। টি-২০ বিশ্বকাপ জেতানোর পর সরে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে দিল্লীর প্রাক্তনীকেই মনে ধরেছিলো বিসিসিআই কর্তাদের। আইপিএলে (IPL) নাইট রাইডার্সের মেন্টর হিসেবে তাঁর কর্মকাণ্ড পছন্দ করেছিলেন সমর্থকেরাও। আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে সাফল্য ছিনিয়ে নেবে গম্ভীরের (Gautam Gambhir) ভারত, আশায় ছিলেন অনেকেই। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র মাস চারেকের মধ্যেই ক্রিকেটজনতার কাছে ‘ভিলেনে’ পরিণত হয়েছেন তিনি। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে কাটাছেঁড়া, ভুলে ভরা গেমপ্ল্যান, সঠিক টিম কম্বিনেশন খুঁজে বের করতে না পারা-অভিযোগের পাহাড় জমেছে তাঁর বিরুদ্ধে। কিছুদিনের মধ্যেই পদ থেকে সরানো হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে গুঞ্জন।
Read More: রঞ্জি ট্রফির মঞ্চে রাজকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটলো মহম্মদ শামির, অস্ট্রেলিয়া সফরে নিচ্ছেন এন্ট্রি !!
সরানো হতে পারে গম্ভীর’কে-
টিম ইন্ডিয়ার কোচ হিসেবে গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) মার্কশিট বিশেষ চমকপ্রদ নয় এখনও। শুরুটা করেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে জয় দিয়ে। কিন্তু এরপরেই কলম্বোর মাঠে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে ওডিআই-তে ২-০ হেরে বসে ভারত। ২৭ বছর পর উপমহাদেশীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক ওডিআই সিরিজ হাতছাড়া হয়। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-২০’র সাফল্য কোচ গম্ভীরকে (Gautam Gambhir) খানিক অক্সিজেন যুগিয়েছিলো ঠিকই, কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ০-৩ টেস্ট হার ফের খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছে তাঁকে। ১২ বছর পর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হেরেছে ‘মেন ইন ব্লু।’ ২৪ বছর পর জুটেছে হোমগ্রাউন্ডে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার লজ্জা। এছাড়া গম্ভীরের (Gautam Gambhir) বিভিন্ন মন্তব্য বা কর্মকাণ্ড’ও জন্ম দিয়েছে ক্ষোভের।
২০২৪-এর জুলাই থেকে ২০২৭-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) সাথে চুক্তি করেছিলো বিসিসিআই। এই সময়কালের মধ্যে রয়েছে ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, ২০২৬-এর এশিয়া কাপ, টি-২০ বিশ্বকাপ, ২০২৭-এর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল ও ওডিআই বিশ্বকাপ। এতগুলি বড়সড় প্রতিযোগিতায় গম্ভীর আদৌ টিম ইন্ডিয়ার দায়িত্ব সামলাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে কিউই বিপর্যয়ের পরেই। বোর্ড সূত্র মারফত খবর মিলেছে যে নয়া কোচকে নিয়ে মোহভঙ্গ হয়েছে কর্মকর্তাদের। তাঁকে ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়েছে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি (Border-Gavaskar Trophy) অবধি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে খারাপ ফল হলেই চুক্তির মেয়াদ ফুরানোর বহু আগে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে গম্ভীরকে।
ভারতের কোচ হতে পারেন ধোনি-
গম্ভীরের (Gautam Gambhir) উত্তরসূরি কে হতে পারেন এই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই। সাদা ও লাল বলের ফর্ম্যাটে দুই ভিন্ন কোচের কথাও রয়েছে বিসিসিআই-এর ভাবনায়। অতীতে এই পন্থা অনুসরণ করে সাফল্য পেয়েছে ইংল্যান্ডের মত দল। পাকিস্তানও আলাদা আলাদা ফর্ম্যাটে ভিন্ন কোচ নিয়োগের পথে হেঁটেছিলো। সূত্রের খবর যে পরবর্তী টেস্ট কোচ হিসেবে ভিভিএস লক্ষ্মণের নাম নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন কর্মকর্তারা। আজ সাদা বলের দুই ফর্ম্যাটের জন্য মহেন্দ্র সিং ধোনি’কে (MS Dhoni) রাজী করানোর চেষ্টা হতে পারে। ভারতের একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে তিনটি আইসিসি ট্রফি জিতেছেন ধোনি। তাঁর মগজাস্ত্রের ধার কাজে লাগাতে পারে টিম ইন্ডিয়া, আশায় রজার বিনি’রা। ধোনি এর আগে কখনও কোচিং করান নি। তবে ২০২১-এর টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের মেন্টর হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।