irfan-alleges-dhoni-axed-him-from-team

২০০৭-এর টি-২০ বিশ্বকাপে প্রথমবার ভারতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। ক্যাপ্টেন্সি অধ্যায়ের শুরুটাই তিনি করেছিলেন সাফল্য দিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে ‘মেন ইন ব্লু’কে জিতিয়েছিলেন কুড়ি-বিশের বিশ্বখেতাব। এরপর তাঁর হাত ধরে ২০১১ সালে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ (ICC World Cup) জিতেছে ভারত। ওয়াংখেড়েতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে উইনিং শট’টি মেরেছিলেন ধোনিই (MS Dhoni)। ঘুচিয়েছিলেন ২৮ বছরের খরা। এরপর ২০১৩তে তাঁর নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়া জিতেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও। প্রথম অধিনায়ক হিসেবে আইসিসি আয়োজিত তিনটি সাদা বলের টুর্নামেন্টে দলকে চ্যাম্পিয়ন করে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। এখনও অক্ষত সেই নজির।

খেতাবজয়ের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক আঙিনায় সুযোগ করে দেওয়ার ক্ষেত্রেও অগ্রনী ভূমিকা নিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের তারকা। ধোনি (MS Dhoni) জমানাতেই উত্থান বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবীন্দ্র জাদেজাদের মত মহাতারকাদের। তবে অধিনায়ক হিসেবে প্রায় এক দশকের কেরিয়ারে কয়েকজন ক্রিকেটারকে পর্যাপ্ত সুযোগ না দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তেমনই একজন ইরফান পাঠান (Irfan Pathan)। নয়া শতকের শুরুর দিকে নজর কেড়েছিলেন তিনি। দেশে-বিদেশে একের পর এক দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সও করেছিলেন। কিন্তু ধোনির হাতে টিম ইন্ডিয়ার স্টিয়ারিং যাওয়ার পরেই ক্রিকেটের মূলস্রোত থেকে হারিয়ে যান বরোদার অলরাউন্ডার।

Read More: ৬,৬,৬,৬,৬,৬..’, ৩৮ বছর বয়সে CPL’এ অবিশ্বাস্য ইনিংস, তান্ডব রূপে ফিরলেন কাইরন পোলার্ড !!

ধোনির দিকে আঙুল তুললেন ইরফান-

Irfan Pathan | Image: Getty Images
Irfan Pathan | Image: Getty Images

কেন হঠাৎ থমকে গেলো আন্তর্জাতিক কেরিয়ার? প্রশ্নের জবাবে তৎকালীন অধিনায়ক ধোনি’র (MS Dhoni) দিকেই আঙুল তুলেছিলেন ইরফান পাঠান (Irfan Pathan_। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, “(গ্যারি) কার্স্টেন আমায় দু’টো কারণ দিয়েছিলেন। ‘কিছু কিছু জিনিস আমার হাতে নেই,’ ঠিক এই কথাগুলোই গ্যারি সেদিন বলেছিলেন। আমি প্রশ্ন করেছিলাম, আদতে কার হাত রয়েছে তাহলে? কিন্তু উনি আমায় বলেন নি। যদিও আমি জানতাম কার হাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। প্লেয়িং ইলেভেন ঠিক করা হত অধিনায়কের ইচ্ছা অনুযায়ী। সিদ্ধান্তটা নেওয়ার ভারত থাকে অধিনায়ক, কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের উপর। ধোনি সেই সময় অধিনায়ক ছিলেন।” বোলিং অলরাউন্ডার নয় বরং সেই সময় ব্যাটিং অলরাউন্ডারের খোঁজে ছিলেন ধোনি (MS Dhoni), তাই ছেঁটে ফেলা হয় ইরফান’কে, ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি।

ইরফানের (Irfan Pathan) সেই সাক্ষাৎকারের পরেই তাঁর সাথে ধোনি’র সমীকরণ নিয়ে শুরু হয়েছে জোর গুঞ্জন। এই প্রসঙ্গে তাঁর একটি পুরনো সাক্ষাৎকার’ও ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। সংবাদসংস্থা স্পোর্টস তক’কে সেখানে তিনি বলেছেন, “হ্যাঁ ওর (ধোনি) সাথে কথা বলেছিলাম আমি ২০০৮-এর অস্ট্রেলিয়া সিরিজ চলাকালীন। সংবাদমাধ্যম সূত্রে আমি জানতে পেরেছিলাম যে মাহি ভাই নাকি বলেছেন যে আমি ভালো বোলিং করছি না। আমার মনে হয়েছিলো গোটা সিরিজে ভালো বোলিং করেছি। তাই জিজ্ঞেস করেছিলো সেই ব্যাপারে। মাঝেমধ্যে সংবাদমাধ্যম বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপনা করে। মাহি ভাই আমায় বলেছিলেন যে ‘ম্না ইরফান, এমন কিছুই হয় নি। সবকিছু পরিকল্পনামাফিকই হচ্ছে।’ এমন একটা উত্তর পাওয়ার পর আপনার মনে হবে সব ঠিকই আছে। এরপরও বারবার ব্যাখ্যা চাইতে তো আত্মসম্মানে লাগে।”  

পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছেন ইরফান-

Rahul Dravid, Irfan Pathan, MS Dhoni, Harbhajan Singh | Image: Getty Images
Rahul Dravid, Irfan Pathan, MS Dhoni, Harbhajan Singh | Image: Getty Images

২০০৮ সালে শেষবার টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছিলেন ইরফান পাঠান (Irfan Pathan)। ২০১২-র পর সুযোগ পান নি সাদা বলের দুই ফর্ম্যাটেও। ঘরোয়া ক্রিকেটে লাগাতার ভালো পারফর্ম্যান্স করার পরেও ভাবা হয় নি বরোদার অলরাউন্ডারের কথা। ‘অধিনায়ক’ ধোনি’র (MS Dhoni) অঙ্গুলিহেলনেই তাঁকে পিছনের সারিতে ঠেলে দেওয়া হয়েছিলো, অভিযোগ করেছিলেন তিনি। স্পোর্টস তক’কে ঐ সাক্ষাৎকারে ইরফান জানিয়েছিলেন, “কারও ঘরে হুঁকো সেজে দেওয়ার অভ্যেস আমার নেই। সবাই জানেন। মাঝেমধ্যে এটা নিয়ে কোনো কথা বলা হয় না। সেটাই ভালো। একজন ক্রিকেটারের কাজ মাঠে পারফর্ম করা আর আমি সেটাই করতাম।” ধোনির (MS Dhoni) নাম সরাসরি উল্লেখ করেন নি ইরফান। কিন্তু প্রাক্তন অধিনায়কের হুঁকোপ্রীতির কথা সর্বজনবিদিত। ফলে ইঙ্গিত যে তাঁর দিকেই তা বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয় নি কারও।

Also Read: ক্রিকেট খেলতে গিয়ে রক্তাক্ত রোহিতের ভাই, সঙ্কটজনক অবস্থায় ভর্তি হাসপাতালে !!

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *