IPL 2024: শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে ২০২৪-এর আইপিএল (IPL)। আজ দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মুখোমুখি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ (SRH) ও রাজস্থান রয়্যালস (RR)। পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থেকে আইপিএল প্লে-অফের ছাড়পত্র আদায় করলেও প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে হেরে বসেছিলো সানরাইজার্স। দ্বিতীয় সুযোগে ফাইনাল নিশ্চিত করতে মরিয়া তারা। অন্যদিকে টানা পাঁচ ম্যাচ জয়শূন্য থাকার পর একটা সময় প্লে-অফের দূর্বলতম দলের তকমা পাচ্ছিলো রাজস্থান। কিন্তু কোনো জাদুমন্ত্রে যেন শেষ চারের লড়াইতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা। এলিমিনেটর ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে অনবদ্য জয় ছিনিয়ে নিয়ে তারা পৌঁছেছে চেন্নাই।
টসে জিতে প্রথমে বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। আজও ব্যর্থ সানরাইজার্সের ওপেনিং জুটি। শুরুতেই ফেরেন অভিষেক শর্মা। এরপর রাহুল ত্রিপাঠী, এইডেন মার্করাম’রাও বেশীদুর এগোতে পারেন নি ব্যাট হাতে। প্রথম স্পেলে নতুন বল হাতে হায়দ্রাবাদের ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট (Trent Boult)। ট্র্যাভিস হেডের ব্যাটেও আজ দেখা গেলো না বড় রান। বল হাতে আগুন ঝরালেন সন্দীপ শর্মা (Sandeep Sharma), আবেশ খান’রা। একটা সময় যখন বেশ ব্যাকফুটে সানরাইজার্স, তখন ঢাল হয়ে দাঁড়ান হেনরিখ ক্লাসেন (Heinrich Klaasen)। প্রোটিয়া ক্রিকেটারের অর্ধশতক অক্সিজেন যোগালো তাদের। লড়াই জারি রইলো অলরাউন্ডার শাহবাজ আহমেদের ব্যাটেও। শেষমেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ইনিংস সমাপ্ত হলো ১৭৫ রানে।
Read More: আইপিএলের মাঝেই ফাঁস হলো ভারতের বিশ্বকাপ একাদশ, সঞ্জু স্যামসন সহ এই খেলোয়াড়রা পড়লেন বাদ !!
বোল্ট বিদ্যুতে বেসামাল সানরাইজার্স-
গোটা আইপিএলে ব্যাটিং-ই লড়াইতে রেখেছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে। কিন্তু প্লে-অফ পর্বে এসে যেন মুখ থুবড়ে পড়লেন তাদের ব্যাটাররা। গত ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে রান পায় নি হায়দ্রাবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজি। আজ রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে আশানুরূপ পারফর্ম্যান্স করতে পারলেন না তাঁরা। বল হাতে হায়দ্রাবাদকে প্রথম ধাক্কাটা দেন ট্রেন্ট বোল্ট। নিউজিল্যান্ডের বোলারের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন অভিষেক শর্মা। ৫ বলে ১টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১২ রান করে টম কোহলার-ক্যাডমোরের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তিনে নেমে ভরসা যুগিয়েছিলেন রাহুল ত্রিপাঠী। গত ম্যাচে ৫৫ রানের পর আজও ১৫ বলে ৩৭ রানের চমকপ্রদ ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু বোল্টের দ্বিতীয় শিকার হতে ফিরতে হলো তাঁকেও।
দক্ষিণ আফ্রিকার এইডেন মার্করামকে আজ একাদশে ফিরিয়েছিলো সানরাইজার্স। প্রত্যাবর্তন সুখের হলো না তাঁর। ২ বলে মাত্র ১ রান করেই ট্রেন্ট বোল্টের বলে যুজবেন্দ্র চাহালের হাতে ধরা পড়েন তিনি। আজ নিজের ৪ ওভারে ৪৫ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষকে জোর ধাক্কা দেন বোল্ট। প্রাথমিক ঝড়ঝাপ্টা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়াস করেছিলেন ট্র্যাভিস হেড। গত দুই ম্যাচে জোড়া শূন্য করেছিলেন তিনি। আজ সময় নিয়েছিলেন ক্রিজে থিতু হতে। কিন্তু চেনা ছন্দ খুঁজে পেলেন না বাম হাতি ওপেনার। ২৮ বলে ৩৪ রানের স্বভাববিরুদ্ধ ইনিংস খেলে সন্দীপ শর্মা’র শিকার হন তিনি। ৯৯ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ঘোর সমস্যায় পড়েছিলো হায়দ্রাবাদ।
প্রতিরোধ ক্লাসেনের, ফেভারিট রাজস্থান’ই-
চিপকের বাইশ গজে সানরাইজার্সের ব্যাটিং সমস্যা জারি থাকে ট্র্যাভিস হেড আউট হওয়ার পরেও। নীতিশ কুমার রেড্ডিকে আউট করেন আবেশ খান। ১০ বলে ৫ রানের বেশী এগোতে পারেন তরুণ অলরাউন্ডার। ফিনিশার আব্দুল সামাদের ঝুলিতে আজ ‘গোল্ডেন ডাক।’ তাঁর স্টাম্প উড়িয়ে দিলেন আবেশ। ডুবতে থাকা তরীর হাল ধরতে হয় হেনরিখ ক্লাসেনকে। হেডের সাথে ৪২ রানের কার্যকরী জুটি গড়েছিলেন তিনি। এরপর লাগাতার উইকেট পড়লেও ক্রিজের এক প্রান্ত সামলে স্কোরবোর্ড সচল রাখার মরিয়া প্রয়াস করতে দেখা গেলো দক্ষিণ আফ্রিকান উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে। টি-২০ ক্রিকেটের বৃত্তে ধুন্ধুমার ব্যাটার হিসেবে নাম রয়েছে তাঁর, কিন্তু আজ ক্লাসেন অনেক সাবধানী। করলেন ৩৪ বলে ৫০ রান।
শাহবাজ আহমেদকে ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামিয়েছিলো সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। বাংলার অলরাউন্ডার লোয়ার অর্ডারে নেমে ভরসা যোগালেন দলকে। ক্লাসেনের সাথে জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৪৩ রান। নিজে করেন ১৮ বলে ১৮। আউট হলেন শেষ ওভারে। অধিনায়ক কামিন্স করলেন ৫*। জয়দেব উনাদকাটেরও সংগ্রহ ৫। পরপর দুই ম্যাচে বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স রাজস্থান রয়্যালসের। গত ম্যাচে আহমেদাবাদের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ১৭২ রানের বেশী এগোতে দেয় নি তারা। আজ সানরাইজার্স’কে রুখে দিলো ১৭৫ রানে। সর্বোচ্চ ৩ টি করে উইকেট পেয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট ও আবেশ খান। ২টি উইকেট পেয়েছেন সন্দীপ শর্মা।