IPL 2025: গত শুক্রবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ঘরের মাঠে তাদের নাস্তনাবুদ করে এসেছিলো পাঞ্জাব কিংস। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৯৫ রান তুলতে ৯ উইকেট খুইয়ে বসেছিলেন বিরাট কোহলি, রজত পাটিদাররা। ৫ উইকেটের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিতে কোনো সমস্যাই হয় নি শ্রেয়স আইয়ার, যুজবেন্দ্র চাহালদের। ঠিক দুই দিনের মধ্যে সেই অপমানজনক পরাজয়ের বদলা নিলো আরসিবি। আজ পাঞ্জাবের ঘরের মাঠ মুল্লানপুরে, তাদের নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করে জয় নিলো তারা। টসে জিতে প্রথম বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রজত পাটিদার। ক্রুণাল-সুয়শদের ঘূর্ণির দাপটে মাত্র ১৫৭-এর বেশী এগোতে পারে ‘কিংস’রা। রান তাড়া করতে নেমে ফিল সল্ট বিশেষ কার্যকরী হতে না পারলেও জ্বলে ওঠেন বিরাট কোহলি ও দেবদত্ত পাডিক্কাল। অর্ধশতক পেরোন দু’জনেই। শেষমেশ ৭ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁহে যায় বেঙ্গালুরু।
Read More: আইপিএলের মধ্যেই প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়কের ওপর অ্যাকশন, স্টেডিয়াম থেকে সরানো হলো নাম !!
স্পিনের ফাঁসে আটক পাঞ্জাব-

প্রথম ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দুরন্ত গতিতে করেছিলেন প্রিয়াংশ আর্য ও প্রভসিমরণ সিং। বাধ্য হয়েই পাওয়ার-প্লে’তে স্পিনারদের আক্রমণে আনতে হয় বেঙ্গালুরু অধিনায়ক রজত পাটিদারকে। বাজিমাত তাতেই। পঞ্চম ওভারে সাজঘরে ফেরান প্রিয়াংশ। বছর ২৪-এর বাম হাতি আউট হন ২২ রান করে। এরপর সপ্তম ওভারে ব্যক্তিগত ৩৩ রানের মাথায় উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন প্রভসিমরণ’ও। আজ পাঞ্জাবকে ডোবালো তাদের মিডল অর্ডার। শ্রেয়স আইয়ার, নেহাল ওয়াধেরারা রান পান নি। খানিক চেষ্টা করেন জশ ইংলিস। কিন্তু অজি তারকাকেও থামতে হয় ২৯ রান করেই। সুয়শ শর্মা আউট করেন তাঁকে। দিল্লীর লেগস্পিনার ফেরান মার্কাস স্টয়নিসকেও। স্বভাববিরুদ্ধ মন্থর ইনিংস খেলেন শশাঙ্ক সিং। ৩১* করতে তিনি আজ খরচ করেছেন ৩৩ বল। শেষলগ্নে মার্কো ইয়ানসেরন ২৫* লড়াইতে টিকিয়ে রাখে পাঞ্জাবকে।
সল্ট ফিরলেও সাবলীল কোহলি-পাডিক্কল-

রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আর্শদীপ সিং-এর বল ফিল সল্টের ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ে প্রভসিমরণের দস্তানায়। মাত্র ১ রান করেন তিনি। ইংল্যান্ডের তারকা ওপেনারকে খুইয়ে অবশ্য আজ ভেঙে পড়ে নি বেঙ্গালুরু। বরং উইকেটে টিকে থেকে স্কোরবোর্ডকে সচল রাখেন বিরাট কোহলি। অপর প্রান্তে পান দেবদত্ত পাডিক্কলকে। চলতি আইপিএলের (IPL) শুরুটা বিশেষ ভালো হয় নি দেবদত্তের। কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি যে ছন্দ ফিরে পাচ্ছেন তার আভাস গত দুই-একটি ম্যাচে দেখা গিয়েছিলো। আজ মুল্লানপুরের বাইশ গজে রীতিমত ঝড় তুলতে দেখা গেলো কর্ণাটকের তরুণকে। মাত্র ৩৫ বল খেলে করেন ৬১ রান। ইনিংস সাজান ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে। দেখতে দেখতে পঞ্চাশের মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলেন তিনিও। এই নিয়ে চলতি মরসুমে চতুর্থ অর্ধশতক হলো তাঁর।
সহজ জয় বেঙ্গালুরুর-

১৩তম ওভারে হরপ্রীত ব্রারের বলে নেহাল ওয়াধেরার হাতে ধরা পড়েন দেবদত্ত পাডিক্কাল। তার পর থেকে বাকি পথটা অভিজ্ঞ সেনাপতির মত দলকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন বিরাট কোহলি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত রইলেন ৫৪ বলে ৭৩ রান করে। আজকের ম্যাচের আগে কমলা টুপির তালিকায় দশ নম্বরে ছিলেন কোহলি। এক লাফে উঠে এলেন তৃতীয় স্থানে। সামনে কেবল গুজরাতের সাই সুদর্শন ও লক্ষ্ণৌর নিকোলাস পুরান। চারে নেমে আজ ১৩ বলে ১২ করেন আরসিবি অধিনায়ক রজত পাটিদার। মধ্যপ্রদেশের তারকাকে আউট করেন যুজবেন্দ্র চাহাল। তাতে অবশ্য জয় আটকান নি। ৮ বলে ১১* করে ব্যাট হাতে সাফল্যে যোগদান রাখেন জিতেশ শর্মা’ও। ১৮.৫ ওভারেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে বেঙ্গালুরু। আজ ৭ উইকেটে জিতে লীগ তালিকায় তিন নম্বরে উঠে এলো বেঙ্গালুরু। আর তিনটি ম্যাচ জিতলেই প্লে-অফ নিশ্চিত তাদের।