IPL 2025: দিনকয়েক আগে উপ্পলে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ২৪৬ রানের লক্ষ্য অনায়াসে তাড়া করে দিয়েছিলো সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ (SRH)। উচ্ছ্বাসে ভেসেছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু সেই উচ্ছ্বাস দীর্ঘস্থায়ী হলো না। আজ ওয়াংখেড়েতে ফের মুখ থুবড়ে পড়লো অরেঞ্জ আর্মি। টসে জিতে বোলিং বেছে নিয়েছিলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। প্রথমে ব্যাটিং-এর সুযোগ পেয়েও তা সদ্ব্যবহার করতে পারেন নি ট্র্যাভিস হেড, ঈশান কিষণরা। ২০ ওভারে ১৬২ রানেই থমকে যায় তাদের ইনিংস। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী পদক্ষেপ ফেললো মুম্বই। বল হাতে কার্যত একা কুম্ভ হয়ে লড়াই চালান সানরাইজার্স অধিনায়ক প্যাট কামিন্স (Pat Cummins)। ৩টি উইকেট নেন তিনি। কিন্তু যথেষ্ট হয় নি তা। রিকলটন, সূর্য, হার্দিকদের কার্যকরী ব্যাটিং-এ ভর দিয়ে ১১ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ৪ উইকেটের ব্যবধানে ছিনিয়ে নেয় জয়।
Read More: চলতি ম্যাচে গুরুতর চোট পেলেন হার্দিক পান্ডিয়া, বাঁকি IPL খেলা নিয়ে সংশয় !!
নড়বড়ে ব্যাটিং ডোবালো সানরাজার্সকে-

গত ম্যাচে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma)। আজ প্রচুর প্রত্যাশা ছিলো তাঁকে নিয়ে। শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন পাঞ্জাবের তরুণ। বেশ কিছু চোখধাঁধানো শট’ও মারেন। কিন্তু ২৮ বলে ৪০ করেই থামতে হয় তাঁকে। অভিষেককে ফিরিয়ে সানরাইজার্সকে প্রথম ধাক্কাটা দেন মুম্বই অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়াই। আরেক ওপেনার ট্র্যাভিস হেড’কে আজ বেশ স্বভাববিরুদ্ধ ব্যাটিং করতে দেখা গেলো। ২৯ বলে ২৮ করলেন তিনি। পুরনো দলের বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠার সুযোগ ছিলো ঈশান কিষণের সামনে। কিন্তু হতাশ করলেন ঝাড়খণ্ডের তারকাও। মাত্র ২ করে আউট হন তিনি। ধুঁকতে থাকা ইনিংসকে খানিক গতি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। ২৮ বলে ৩৭ রান করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকান তারকাকে বোল্ড করেন জসপ্রীত বুমরাহ। শেষ ওভারে ঝোড়ো ব্যাটিং করে দলের স্কোর ১৬০ পার করান ২৩ বর্ষীয় অনিকেত ভার্মা।
একাই লড়লেন কামিন্স-

মুম্বইয়ের তারকাখচিত ব্যাটিং লাইন-আপের বিরুদ্ধে ১৬২ রানের পুঁজি যে যথেষ্ট নয় তা ইনিংসের বিরতিতেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। মাঠেও দেখা গেলো তেমনটাই। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নেমেছিলেন রোহিত শর্মা। রায়ান রিকলটনকে সাথে নিয়ে দ্রুত রান তোলা শুরু করেন তিনি। তবে বড় ইনিংস খেলতে আজও ব্যর্থ হিটম্যান। ১৬ বলে ২৬ করে ছুঁড়ে এলেন উইকেট। ৩১ করে আউট হন দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার রায়ান রিকলটন। তাতে অবশ্য বিশেষ চাপে পড়ে নি মুম্বই। উইল জ্যাকস ও সূর্যকুমার যাদবের যথাক্রমে ৩৬ ও ২৬ রানের ইনিংস ম্যাচের রাশ তুলে দেয় পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নদের হাতে। ফলাফল যে কি হতে চলেছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিলো পাওয়ার প্লে’র পরেও। তবুও কার্যত একাই বল হাতে লড়ে গেলেন সানরাইজার্সের অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ২৬ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি।
সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতলো মুম্বই-

আজ পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিলক বর্মা। উইকেটের এক প্রান্ত সামলে ব্যাটিং করছিলেন তিনি। অন্য প্রান্তে ধুন্ধুমার ইনিংস খেলেন হার্দিক পান্ডিয়া। মাত্র ৯ বলে ২১ রান করে যখন সাজঘরে ফেরেন তিনি, তখন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের স্কোর ১৭.২ ওভারে ১৬২ রান। পরবর্তী এক বা দুই বলের মধ্যেই জয় নিশ্চিত, ধরে নিয়েছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু এরপরই দেখা গেলো ‘কাহানি মে ট্যুইস্ট।’ চাপের মুখে সম্ভবত আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ওভার করলেন এহসান মালিঙ্গা। অষ্টাদশতম ওভারের বাকি বলগুলিতে তিনি খরচ করেন নি একটিও রান। উলটে নমন ধীরকে আউট করেন পঞ্চম ডেলিভারিতে। যদিও তাঁর অনবদ্য ওভার দাম পেলো না দিনের শেষে। পরের ওভারের প্রথম বলে জিশান আনসারিকে রিভার্স স্যুইপে চার মেরে ম্যাচ ‘ফিনিশ’ করেন তিলক। হায়দ্রাবাদী তরুণের ব্যাটেই হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে জয় পায় মুম্বই।