IPL 2025: মেগা নিলাম যে হচ্ছেই তা গত ৩১ জুলাই’ই স্পষ্ট করে দিয়েছিলো বিসিসিআই। বেশ কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজির তরফে মিনি নিলামের দাবী তোলা হলেও সায় দেয় নি দেশের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। তবে নিলাম সংক্রান্ত কোনো নিয়মনীতি তখন প্রকাশ করা হয় নি। রিটেনশন ও রিলিজ প্রক্রিয়া নিয়েও অন্ধকারে ছিলেন সকলে। মুম্বইতে আয়োজিত হওয়া বৈঠকে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ (SRH), কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) মত দল ৭ থেকে ৮টি রিটেনশনের দাবী জানিয়েছিলো। কথা উঠেছিলো রাইট টু ম্যাচ বা আরটিএম কার্ড ব্যবহার নিয়েও। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কতগুলি দাবী মানা হবে, নিয়মে কিছু পরিবর্তন বা পরিবর্ধন হবে কিনা তা নিয়ে গত দুই মাস চর্চা চলেছে প্রতিনিয়ত। অবশেষে যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিয়মবিধি সামনে আনলো খোদ বিসিসিআই-ই।
Read More: টেস্টের মাঝপথেই বড় সিদ্ধান্ত টিম ইন্ডিয়ার, বাদ পড়লেন সরফরাজ-সহ একঝাঁক ক্রিকেটার !!
প্রকাশ্যে IPL রিটেনশনের নিয়মবিধি-
আইপিএল (IPL) নিলাম ও রিটেনশন সংক্রান্ত নিয়মাবলী প্রকাশ করতে যে কিছুদিন সময় লাগবে তা ফ্র্যাঞ্চাইজিদের আগেই জানিয়ে দিয়েছিলো বোর্ড। আভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার জন্য সময় লাগছিলো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে। অবশেষে ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে নিয়মাবলী প্রকাশ করেছে বিসিসিআই। ৭ বা ৮টি রিটেনশনের দাবী মানা হয় নি। তবে আরটিএম কার্ড ফেরানোর দাবিতে সিলমোহর দিয়েছেন জয় শাহ (Jay Shah), রজার বিনি’রা। ২০২২-এর মেগা নিলামে ৪টি রিটেনশন স্লট ব্যবহারের অনুমতি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের দিয়েছিলো ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। তার মধ্যে ভারতীয় ও বিদেশীর সংখ্যার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ‘কোটা’ মেনে চলতে হত। কিন্তু এবার আর সেসব থাকছে না। ৫টি রিটেনশন ও ১টি আরটিএম মিলিয়ে মোট ছয় জনকে ধরে রাখার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে অংশগ্রহণকারী দশ দল’কে।
৫টি রিটেনশন স্লটের অর্থমূল্য রাখা হয়েছে যথাক্রমে ১৮, ১৪, ১১, ১৮ ও ১৪ কোটি টাকা। পাঁচ বছরের বেশী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থাকা ক্রিকেটারকে আনক্যাপড হিসেবে পরিগণিত করার নিয়ম’ও ফিরিয়ে এনেছে বোর্ড। এবারই প্রথম আইপিএলে (IPL) ম্যাচ ফি’র ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি খেলার জন্য ৭,৫ লক্ষ টাকা করে পাবেন খেলোয়াড়রা। বিদেশীদের মাত্রাছাড়া দাম পাওয়া রুখতেও পদক্ষেপ নিয়েছে বিসিসিআই। নিলামে সর্বোচ্চ মূল্যে যে ভারতীয় ক্রিকেটার বিক্রি হবেন তাঁর বেশী দাম পাবেন না কোনো বিদেশী। তার থেকে বেশী দামে যদি কোনো বিদেশীকে নেয় কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি তাহলে অতিরিক্ত অর্থ তাদের পার্স থেকে কাটা গেলেও তা পাবেন না সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার। খেলা ও পরিকাঠামোর মানোন্নয়নে ব্যবহৃত হবে তা। নিলামে দল পাওয়ার পর সরে দাঁড়ালে থাকছে দুই বছর নির্বাসনের শাস্তি।
রিটেনশনের নিয়ম চাপ বাড়িয়েছে মুম্বইয়ের-
বিসিসিআই-এর তরফে আইপিএলের (IPL) রিটেনশনের যে নিয়মবিধি প্রকাশ করা হয়েছে তা চাপ বাড়িয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI) ফ্র্যাঞ্চাইজির। যে দলগুলি ৩১ জুলাইয়ের বৈঠকে ৭-৮ বা তারও বেশী ক্রিকেটারকে ধরে রাখার জন্য আবেদন জানিয়েছিলো, তাদের মধ্যে একটি ছিলো মুম্বই। সেই দাবী নামঞ্জুর হওয়ায় সমস্যা বেড়েছে মুকেশ আম্বানিদের। কাকে ধরে রাখবেন আর কাকে ‘রিলিজ’ করা হবে তা হিসেব করতেই কালঘাম ছুটছে। হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya), রোহিত শর্মা, জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah), সূর্যকুমার যাদব’দের মত মহাতারকা রয়েছেন তাদের স্কোয়াডে। একইসাথে আকাশ মাধওয়াল, বিষ্ণু বিনোদ, ঈশান কিষণ (Ishan Kishan), নেহাল ওয়াধেরা, ডিওয়াল্ড ব্রেভিস, টিম ডেভিডের মত অনেকে রয়েছেন যাঁদের এই মুহূর্তে হাতছাড়া করলে পরে আক্ষেপ করতে হতে পারে। সব মিলিয়ে ‘প্রব্লেম অফ প্লেন্টি’র শিকার তারা।
বুকে পাথর রেখে বেশ কয়েকজন তারকা বা সম্ভাবনাময় তরুণকে যে বাদ দিতেই হবে তা বুঝতে পারছে মুম্বই ফ্র্যাঞ্চাইজি (MI)। কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তারা। পাশাপাশি রিটেনশনের ক্ষেত্রে কোন স্লটে কাকে রাখা হবে তা নিয়েও বেশ চিন্তায় আম্বানিরা। অধিনায়ক হিসেবে গত মরসুমে ব্যর্থ হয়েছেন হার্দিক (Hardik Pandya)। তাঁকে নিয়ে কার্যত গৃহযুদ্ধ দেখা গিয়েছিলো স্কোয়াডে। তাঁকে প্রথম বা চতুর্থ রিটেনশন স্লটের ১৮ কোটি দেওয়া হলে মনক্ষুণ্ণ হতে পারেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) বা জসপ্রীত বুমরাহ’র (Jasprit Bumrah) মত তারকা। পাঁচ বার ট্রফি জেতানো রোহিত’কে (Rohit Sharma) রাখার সিদ্ধান্তই সম্ভবত নিচ্ছে মুম্বই। কিন্তু কত নম্বর স্লট তিনি পাবেন তা নিয়েও এখনও মেলে নিশ্চয়তা। সব মিলিয়ে ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ দশা এখন পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নদের।