২০২৫-এর আইপিএল (IPL) শুরু হতে ক্যালেন্ডারের হিসেবে বাকি এখনও নয় মাসের কাছাকাছি। কিন্তু এখন থেকেই পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। হয়ত এই বছরের শেষ দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে বসতে চলেছে মেগা অকশন। নতুন করে দল সাজানোর ভাবনাচিন্তা শুরু করতে হয়েছে কর্মকর্তাদের। ব্যতিক্রম নন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স’ও (MI)। গত দশকটা দুর্দান্ত কেটেছিলো তাদের। ২০১৩ থেকে ২০২০-এর মধ্যে পাঁচবার আইপিএল (IPL) খেতাব জিতেছিলো তারা। কিন্তু শেষ চার বছর কেবল জুটেছে হতাশা। আলোর বৃত্তে ফিরতে ২০২৪ মরসুমেই বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো মুম্বই। রোহিত শর্মা’কে সরানো হয়েছিলো নেতৃত্ব থেকে। ২০২২-এ দল ছাড়া হার্দিককে ফিরিয়ে এনে তাঁর হাতে দেওয়া হয়েছিলো অধিনায়কত্বের ভার। সুফল মেলে নি। ফলত এক মরসুম কাটতে না কাটতেই হার্দিককে ছেঁটে ফেলার ভাবনা ফ্র্যাঞ্চাইজির।
Read More: টি-২০ বিশ্বকাপ শুরুর আগেই বড় ঘোষণা ICC’র, বাংলাদেশ নয় বরং এই দেশ করবে আয়োজন !!
রিটেনশন নিয়ে চিন্তায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স-
এখনও পর্যন্ত আগামী মরসুমের রিটেনশন ও রিলিজ নিয়ে কোনো রকম সিদ্ধান্ত নেয় নি বিসিসিআই। সম্প্রতি একটি বৈঠকে নীতি নির্ধারণের জন্য দশ ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠিয়েছিলো ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। সেখানে নিজেদের দাবীদাওয়াগুলি রেখেছে দলগুলি। ‘সেট’ কম্বিনেশন অটুট রাখতে কিছু দল মেগা অকশন নয়, বরং মিনি অকশনের দাবী জানিয়েছে। কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR), সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) মত ফ্র্যাঞ্চাইজিদের পাশাপাশি সেই তালিকায় রয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স’ও। প্যারিস থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন দলমালিক আম্বানিরা। তাঁরা রায় দিয়েছেন ‘মিনি’ অকশনের পক্ষে। তবে বিরুদ্ধমত শোনা গিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস, পাঞ্জাব কিংস প্রভৃতি দলের পক্ষ থেকে।
‘মিনি’ অকশনের প্রস্তাবে বোর্ড সায় দেবে না বলেই মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। ২০২৫-এর আইপিএলের আগে মেগা অকশনের ভাবনাই রয়েছে জয় শাহ (Jay Shah), রজার বিনিদের (Roger Binny)। সেই কারণেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে রিলিজ ও রিটেনশন। ২০২২-এর মেগা অকশনের মত এবারও যদি চারজনকে ধরে রাখার সুযোগ দেওয়া হয় দলগুলিকে তাহলে বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে তারা সম্ভবত ‘রিটেন’ করতে চাইবে সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav), জসপ্রীত বুমরাহ, ঈশান কিষণ ও তিলক বর্মা’কে (Tilak Varma)। নতুন অধিনায়ক হিসেবে হয়ত দেখা যাবে সূর্যকুমারকে। সেক্ষেত্রে হার্দিক পান্ডিয়াকে (Hardik Pandya) ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কোনো রাস্তা খোলা থাকবে না আম্বানিদের সামনে।
হার্দিক যোগ দিতে পারেন বেঙ্গালুরু’তে-
২০১৫ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (MI) জার্সিতেই আইপিএলে (IPL) পথচলা শুরু হয়েছিলো হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আঙিনায় তাঁর পরিচিতি লাভের পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ লীগের। মুম্বই জার্সিতে চারটি আইপিএল (IPL) জিতেছেন তিনি। অবশেষে ২০২২ মরসুম শুরুর আগে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাত টাইটান্সে যোগ দেন তিনি। হাতে তুলে নেন নেতৃত্বের ভার। প্রথম মরসুমেই ট্রফি জেতান গুজরাতকে। প্রশংসিত হয় তাঁর অধিনায়কত্ব। দ্বিতীয় মরসুমেও খেলেন ফাইনাল। রোহিতের (Rohit Sharma) দীর্ঘমেয়াদী উত্তরসূরি হিসেবে এরপর হার্দিককেই বেছে নিয়েছিলেন আম্বানিরা। ২০২৪ আইপিএলের আগে বিপুল অর্থের বিনিময়ে দলে ফেরানো হয় তাঁকে। করা হয় নতুন অধিনায়ক। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজির আস্থার দাম দিতে পারেন নি তিনি। মাত্র ২১৬ রান করেন, সাথে নেন ১১ উইকেট।
হার্দিকের যোগদান ও নেতৃত্বগ্রহণে সাজঘরের অন্দরেও অশান্তির খবর সামনে এসেছিলো আইপিএল (IPL) চলাকালীন। রুষ্ট হয়েছিলেন সমর্থকদের একটা বড় অংশ। সবদিক খতিয়ে দেখেই ২০২৫-এর আইপিএল (IPL) শুরুর আগে ‘রিলিজ’ করে দেওয়া হতে পারে তাঁকে। তখন তারকা অলরাউন্ডার নাম লেখাবেন নিলামের খাতায়। মেগা অকশনে তাঁকে নিয়ে দড়ি টানাটানি হতে পারে। গুজরাত (GT), লক্ষ্ণৌর মত দল উৎসাহ দেখাতে পারে হার্দিক’কে (Hardik Pandya) নিয়ে। তবে তাঁর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে বিরাট কোহলির দল ছেড়ে দিচ্ছে দুই অজি অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন (Cameron Green) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (Glenn Maxwell)। আদর্শ বিকল্প হিসেবে তাদের লাইন আপে যুক্ত হতে পারেন হার্দিক।