TOP 4: ২০২২ আইপিএলে (IPL) প্রথমবার মাঠে নেমেছিলো গুজরাত টাইটান্স (GT)। নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও হেভিওয়েটদের তালিকায় জায়গা করে নিতে বেশী সময় লাগে নি তাদের। প্রথম মরসুমেই দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করে ছিনিয়ে নিয়েছিলো ট্রফি। ফাইনালে হারায় রাজস্থান রয়্যালসকে (RR)। দ্বিতীয় মরসুমেও অটুট ছিলো দাপট। প্রথম দল হিসেবে তারা পা দিয়েছিলো প্লে-অফে। সর্বোচ্চ পয়েন্টও ছিলো তাদের। ফাইনালের যোগ্যতাও অর্জন করে নিয়েছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা, শুভমান গিলরা (Shubman Gill)। চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হারতে হলেও টাইটান্সদের পারফর্ম্যান্স কুড়িয়েছিলো তারিফ। তৃতীয় মরসুমে এসে খানিক ধাক্কা খেতে হয়েছে তাদের। প্লে-অফ দূর অস্ত, এবার পয়েন্ট তালিকায় থামতে হয়েছে অষ্টম স্থানে। সাময়িক ব্যর্থতা দূরে সরিয়ে ২০২৫-এর আইপিএলে (IPL) ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে আবার ঝাঁপাতে চায় গুজরাত। মেগা অকশনের টেবিলে বসার আগে তারা ধরে রাখতে পারে ৪ তারকাকে।
Read More: কোহলির সাথে প্রতারণা করেছে BCCI, চাঞ্চল্যকর অভিযোগে সরগরম ক্রিকেটমহল !!
শুভমান গিল-
গুজরাত টাইটান্সের (GT) রিটেনশন তালিকায় প্রথম নামটিই হতে পারে শুভমান গিলের (Shubman Gill)। ২০২২ থেকেই গুজরাত ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে রয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই দলের প্রধান ব্যাটিং ভরসা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রথম মরসুমেই টাইটান্স (GT) শিবিরের ট্রফি জেতার অন্যতম কারণ ছিলেন তরুণ ওপেনার। ২০২৩-এর আইপিএলে (IPL) ব্যাট হাতে অনবদ্য পারফর্ম্যান্স ছিলো তাঁর। ৩টি শতরান-সহ করেছিলেন মোট ৮৯০ রান। যা আইপিএলের (IPL) ইতিহাসে একই মরসুমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। তিনি পিছনে ফেলেন জস বাটলার, ডেভিড ওয়ার্নারদের। সামনে একমাত্র বিরাট কোহলি। হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya) দল ছাড়ার পর ২০২৪ আইপিএলে নেতৃত্বের ভার সামলাতেও দেখা গিয়েছে শুভমানকেই। ব্যাট হাতেও করেছেন ৪৩২ রান। তাঁর মধ্যেই দীর্ঘকালীন অধিনায়ককে দেখছেন ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকরা। ফলে ২০২৫-এর আইপিএলেও তাঁকে রিটেন করতে চলেছে দল।
সাই সুদর্শন-
রিটেনশন তালিকায় দ্বিতীয় নামটি হতে পারে সাই সুদর্শনের (B. Sai Sudharshan)। তামিলনাড়ুর তরুণ নিজের আইপিএল কেরিয়ার শুরুই করেছেন গুজরাত টাইটান্স জার্সিতে। ২০২২-এ মাত্র ৫টি ম্যাচে সুযোগ পেলেও তিনি ৩৬.২৫ গড়ে করেছিলেন ১৪৫ রান। ২০২৩ মরসুম থেকে বেশ নিয়মিত তিনি। গত বছর টাইটান্স (GT) শিবিরকে ফাইনালে নিয়ে যাওয়ার পিছনে বড় ভূমিকা ছিলো তাঁর। যখনই সুযোগ পেয়েছিলেন, করেছিলেন বড় রান। প্রায় ৫২ গড়ে তাঁর মোট সংগ্রহ ছিলো ৮ ম্যাচে ৩৯২ রান। ফাইনালে অনবদ্য ৯২ রানের ইনিংসও খেলেন তিনি। ২০২৪-এও ব্যাট হাতে অনবদ্য ছিলেন সাই । ১২ ম্যাচ খেলে তাঁর সংগ্রহ ৫২৭ রান। গড় প্রায় ৪৮। একটি শতরানের মুখও ২০২৪-এ দেখেছেন তিনি। তাঁর বয়স এখন মাত্র ২২। আগামীতে শ্রেষ্ঠত্বের শিখরে নিজেকে নিয়ে যেতে পারেন তিনি। তা মাথায় রেখে তাঁকে রিটেন করবে ফ্র্যাঞ্চাইজি।
রশিদ খান-
গুজরাত টাইটান্সের (GT) রিটেনশন তালিকার তৃতীয় নামটি হতে পারে আফগানিস্তানের তারকা ক্রিকেটার রশিদ খানের (Rashid Khan)। গত দশকের সেরা টি-২০ ক্রিকেটারের পুরষ্কার যে তিনি এমনি এমনি পান নি আইসিসি’র থেকে তা আইপিএলের (IPL) আসরে গুজরাত টাইটান্সের হয়ে বারবার প্রমাণ করে দিয়েছেন আফগান তারকা। স্পিন বোলিং-এর জাদুতে নিয়মিত প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২০২২ সালে যোগ দেন গুজরাতে (GT)। প্রথম মরসুমেই ১৯ উইকেট তুলে নিয়ে দলের ট্রফি জয়ে ভূমিকা রাখেন তিনি। ২০২৩-এ ক্ষুরধার বোলিং-এ তুলে নেন ২৭টি উইকেট। ২০২৪-এ চোট থেকে ফিরে ছন্দ খুঁজে পান নি বটে। বোলিং-এর পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারে নেমে ব্যাট হাতেও একাধিকবার দলকে উদ্ধার করেছেন রশিদ (Rashid Khan)। তাঁর মত ক্রিকেটারকে তাই কিছুতেই হাতছাড়া করতে চাইবে না গুজরাত।
রাহুল তেওয়াটিয়া-
তালিকার চতুর্থ নামটি হতে পারে রাহুল তেওয়াটিয়ার (Rahul Tewatia)। গুজরাত টাইটান্সের সাফল্যে রাহুল তেওয়াটিয়ার অবদান কেবলমাত্র শুকনো পরিসংখ্যান দিয়ে সম্ভবত ব্যাখ্যা করা সম্ভবই নয়। পাঁচ বা ছয় নম্বরে ফিনিশার হিসেবে নেমে কতবার যে দলের নিশ্চিত পতন রোধ করেছেন তিনি, তার সঠিক হিসাব হয়ত করাও সম্ভব নয়। পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ২০২২ মরসুমে যখন তেওয়াটিয়া মাঠে নামেন তখন গুজরাত টাইটান্সের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ২ বলে ১২ রান। ক্রিজে থিতু হওয়ার জন্য বিন্দুমাত্র সময়ও ছিলো না তাঁর সামনে। প্রায় অভাবনীয় পরিস্থিতি থেকে সেই ম্যাচও তিনি দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। দীর্ঘ সময় ধরেই এহেন ধারাবাহিক হরিয়ানার অলরাউন্ডার। রাজস্থান রয়্যালসে খেলার সময় তিনি পরপর পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কাও মেরেছেন। ‘ডেথ ওভারে’ তেওয়াটিয়া শো যাতে চলতে থাকে, তা নিশ্চিত করতে তাঁকেও ধরে রাখবে গুজরাত টাইটান্স।