IPL 2023

IPL 2023: এই বছর ষোলো বছরে পা দেবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আয়োজিত ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ। ২০০৮ সালে পথচলা শুরু করেছিলো এই প্রতিযোগিতা। মাঝের দেড় দশকে টি-২০ ক্রিকেটের খোলনলচেই বদলে গিয়েছে। আর এই বদল আনার ক্ষেত্রে অনেকটা ভূমিকা নিয়েছে আইপিএল। ক্রীড়া আর বিনোদন দুনিয়ার মাঝের সীমারেখা অনেকটা মুছে দিয়ে ক্রিকেটকে আরও বেশী করে জনমানসে ছড়িয়ে দিয়েছে আইপিএল। ২০০৮ সালে আট দলকে নিয়ে পথচলা শুরু করেছিলো আইপিএল। আজ আকারে-বহরে প্রতিযোগিতা বেড়েছে অনেকখানি। এখন দশটি দল অংশগ্রহণ করে আইপিএলে। এই টুর্নামেন্টের অন্যতম জনপ্রিয় দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রতিযোগিতার গোড়া থেকে আইপিএলের অংশ হলেও আজও ট্রফি জিতে ওঠা হয় নি বেঙ্গালুরুর। ক্রিস গেইল (Chris Gayle), এ বি ডিভিলিয়ার্সের (AB De Villiers) মত তারকা খেলে গিয়েছেন বেঙ্গালুরু জার্সিতে। টানা দেড় দশক আরসিবি জার্সিতে খেলছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। তবুও ট্রফি আসে নি তাদের ঘরে। বারবার ফাইনাল বা শেষ চারে গিয়েই থেমে যেতে হয়েছে। পনেরো বছরের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বদল আনতে এই বছর মরিয়া রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স দল। গত বছর শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত করেছিলো তারা। এইবছর ট্রফির লক্ষ্যেই সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপাতে প্রস্তুত ফাফ দু প্লেসি, দীনেশ কার্তিকরা।

IPL 2023-র জন্য RCB’র সম্ভাব্য একাদশ-

রজত পতিদার-

Rajat Patidar | image: twitter

গত মরসুমে বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজি মাঝ মরসুমে রজত পতিদারকে (Rajat Patidar) বেস প্রাইস ২০ লাখের বিনিময়ে দলে নেয় লভনিত সিসোদিয়া’র জায়গায়। কলকাতা’র ইডেন গার্ডেন্সে আইপিএল নক-আউট পর্বের এলিমিনেটর ম্যাচে সটান ১১২ রানের এক চোখ-ধাঁধানো ইনিংস খেলেছিলেন পতিদার। শতরানের মাইলস্টোন ছুঁয়েছিলেন মাত্র ৪৯ বলে। সম্প্রতি ভারতীয় দলেও ডাক পেয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ব্যাটার। RCB’র হয়ে ইনিংসের শুরুতে হয়ত দেখা যাবে পতিদারকে।

ফাফ দু প্লেসি-

Faf Du Plessis | image: twitter

বিরাট কোহলি গত মরসুমের আগে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোয় নেতার দায় বর্তায় ফাফ দু প্লেসির (Faf Du Plessis) কাঁধে। দায়িত্বপালনে সফল হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান ডান হাতি ব্যাটার। দলকে নক-আউট পর্বে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাফ। ব্যাট হাতেও সফল হন তিনি। ১৬ ম্যাচে করেছিলেন ৪৬৮ রান। পতিদারের ওপেনিং পার্টনার হিসেবে দু প্লেসিকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

বিরাট কোহলি-

Virat Kohli | image: twitter

আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। পনেরো বছর তিনি খেলছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু জার্সিতে। ব্যাট হাতে একাধিক রেকর্ড গড়লেও এখনও অব্দি ট্রফি জয়ের স্বাদ পান নি। ২০২২ মরসুমে ১৬ ম্যাচে ৩৪১ রান করেছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন ফর্ম সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সেই অন্ধকার কাটিয়ে গত বছরের টি-২০ বিশ্বকাপ থেকেই আবার জ্বলে উঠেছে বিরাটের ব্যাট। ভালো ফলাফলের জন্য বরাবরের মত বিরাটের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকবে বেঙ্গালুরু দল (RCB)।

গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-

Glenn Maxwell | image: twitter

গত মরসুমে বেঙ্গালুরু মিডল অর্ডারকে ভরসা দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (Glenn Maxwell)। ১৩ ম্যাচে প্রায় ১৭০ স্ট্রাইক রেটে ৩০১ রান করেছিলেন তিনি। বল হাতেও নিয়েছিলেন কার্য্যকরী ভূমিকা। ২০২২ মরসুমে ৬টি উইকেট নিয়েছিলেন অজি অলরাউন্ডার। বাইশ গজে ‘বিগ শো’ বলে পরিচিত ম্যাক্সওয়েল একাই যে কোনো মুহূর্তে পালটে দিতে পারেন ম্যাচের রঙ। ট্রফি জিততে সেরা ফর্মের ম্যক্সওয়েলকেই (Glenn Maxwell) চাইবে বেঙ্গালুরু দল। তবে পায়ে চোট পেয়ে বর্তমানে ক্রিকেট থেকে দূরে রয়েছেন তিনি। আইপিএলের মঞ্চেই কামব্যাক করার কথা তাঁর।

দীনেশ কার্তিক-

Dinesh Karthik | image: twitter

‘ফিনিশার’-এর ভূমিকায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দল ব্যবহার করেছিলো দীনেশ কার্তিককে (Dinesh Karthik)। লোয়ার অর্ডারে কার্তিকের ব্যাটিং সাফল্য তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের পুর্নজন্ম দিয়েছিলো বলা চলে। RCB জার্সিতে ১৬ ম্যাচে ৩৩০ রান করেছিলেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ছিলো ১৮৩.৩৩। ১০টি ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন DK। আইপিএলের পারফর্ম্যান্সের সুবাদে ভারতীয় টি-২০ দলেও কামব্যাক করেন তিনি। খেলেন এশিয়া কাপ এবং টি-২০ বিশ্বকাপ।

শাহবাজ আহমেদ-

Shahbaz Ahmed | image: twitter

২০২২ আইপিএলের ‘মেগা’ নিলামে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাথে নিলাম লড়াইয়ে জিতে ২.৪ কোটি টাকায় শাহবাজ’কে (Shahbaz Ahmed) দলে নেয় বেঙ্গালুরু। বহু ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয় সামলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের উদ্ধারকর্তা হয়ে উঠেছিলেন তিনি। লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করলেও ১৬ ম্যাচে করেছিলেন ২১৯ রান। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৫ রান। এছাড়া ৪টি উইকেটও পেয়েছিলেন বাংলার অলরাউন্ডার। আগামী মরসুমেও RCB’র একাদশে জায়গা করে নেবেন শাহবাজ।

ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা-

Wanindu Hasaranga | image: twitter

২০২২ এর নিলামে ১০ কোটির বেশী অর্থ খরচ করে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (Wanindu Hasaranga) দলে নিয়েছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স দল। বর্তমানে টি-২০ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলিং প্রতিভা তিনি। লোয়ার অর্ডারে কার্য্যকরী ব্যাট হাতেও। গত মরসুমে ১৬ ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার স্পিনার। ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কাকে এশিয়া কাপ জেতাতেও মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন হাসারাঙ্গা। প্রথম একাদশে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের অন্যতম বাজি হতে পারেন তিনি।

জশ হ্যাজেলউড-

Josh Hazlewood | image: twitter

নিজের টেস্ট বোলার তকমা ঘুচিয়ে জস হ্যাজেলউড (Josh Hazlewood) শেষ দুই বছরে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণে নিজের জাত চিনিয়েছেন। বেশ কিছুদিন বিশ্বক্রমতালিকার এক নম্বর বোলারও ছিলেন তিনি। গত মরসুমে পাওয়ার প্লে এবং ডেথ ওভারে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স দলের বোলিং ভরসা হয়ে উঠেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার। মাত্র ১২ ম্যাচে নিয়েছিলেন ২০ উইকেট। ২০২৩-এ প্রথম একাদশে তাঁর জায়গা নিশ্চিত।

মহম্মদ সিরাজ-

Mohammed Siraj | image: twitter

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সাড়া ফেলে দিয়েছেন মহম্মদ সিরাজও (Mohammed Siraj)। তাঁকেও অনেকেই কেবল টেস্ট বোলার বলে ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু গত কয়েকমাসে সিরাজ বুঝিয়েছেন যে সাদা বলের ক্রিকেটেও প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। বর্তমানে একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বর‍্যাঙ্কিং-এ এক নম্বরে উঠে এসেছেন সিরাজ। তাঁর থেকেঈ সাফল্য প্রত্যাশা করবে বেঙ্গালুরু দল।

হর্ষল প্যাটেল-

Harshal Patel | image: twitter

আইপিএলে এক মরসুমে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন হর্ষল প্যাটেল (Harshal Patel)। ডোয়েন ব্র্যাভোর সাথে এই রেকর্ডটি ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। ২০২১ মরসুমে ৩২ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। প্রথমবার ট্রফি জিততে হর্ষলের থেকে সেই পারফর্ম্যান্সের পুনরাবৃত্তি আশা করবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দল।

সিদ্ধার্থ কৌল-

Siddharth Kaul | image: Twitter

 

পাঞ্জাবের অভিজ্ঞ পেসার সিদ্ধার্থ কৌল’কে (Siddharth Kaul) রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু একাদশে দেখার সম্ভাবনা প্রবল। এর আগে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ জার্সিতে সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি। গত মরসুমে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু একাদশে বিশেষ সু্যোগ না পেলেও ২০২৩ মরসুমে তাদের তুরুপের তাস হয়ে উঠতেই পারেন সিদ্ধার্থ।

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *