রোহিত-কোহলির অবসরের পর এই মুহূর্তে ভারতীয় টেস্ট দলের পয়লা নম্বর তারকা নিঃসন্দেহে জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। অস্ট্রেলিয়াতে অনবদ্য পারফর্ম্যান্স করেও দলকে সিরিজ জেতাতে পারেন নি তিনি। ইংল্যান্ডেও টিম ইন্ডিয়ার সাফল্য-ব্যর্থতার অনেকটাই নির্ভর করছে তাঁরই উপরে। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের মাথাব্যথার কারণ তাঁর চোটপ্রবণতা। অস্ট্রেলিয়াতে একটানা পাঁচটি টেস্ট খেলার মাশুল গুণতে হয়েছিলো বুমরাহকে (Jasprit Bumrah)। পিঠের চোটে দীর্ঘ সময়ের জন্য তিনি ছিটকে গিয়েছিলেন মাঠ থেকে। ইংল্যান্ডে সেই একই ভুল আর করতে চায় না দল। তাই পাঁচটি নয় বরং তিনটি ম্যাচে তাঁকে খেলানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। লিডসে খেলেছিলেন ডান হাতি পেসার। থাকছেন না এজবাস্টনের দ্বিতীয় ম্যাচে। দেশের সেরা পেস অস্ত্রকে এভাবে নিয়মিত বিশ্রাম দিতে হলে এগোবে না ভারতীয় ক্রিকেট, আশঙ্কিত প্রাক্তনী ইরফান পাঠান।
Read More: উদ্দাম অন্তরঙ্গতা! শেফালী জরিওয়ালার সাথে এই তারকা ক্রিকেটারের গোপন ভিডিও ফাঁস !!
তরুণদের তৈরি করে নি ভারত, মত ইরফানের-
ওয়ার্কলোডের কারণে যে ম্যাচগুলিতে বুমরাহ (Jasprit Bumrah) মাঠে নামতে পারবেন না, সেগুলিতে তাঁর পরিবর্ত কে হবেন? এই প্রশ্নের এখনও কোনো যুতসই উত্তর নেই কারও কাছে। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের অদূরদর্শীতাই এই সমস্যার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন ইরফান পাঠান। প্রাক্তন অলরাউন্ডার গতকাল একটি ইউটিউব ভিডিওতে বলেছেন, “এই সমস্যার সমাধান কি করে হবে? বুমরাহ’র সঙ্গীরা সবসময় রক্ষণাত্মক বোলিং করেন। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার দিকেই তাকান। বুমরাহ যখন খেলবেন না তখন কৃষ্ণাকে আক্রমণাত্মক বোলিং করতেই হবে। আকাশ দীপ ও মহম্মদ সিরাজকে আক্রমণাত্মক বোলিং করতে হবে। বুমরাহ’র খেলা বা না খেলার কথা মাথায় রেখে ভিন্ন ভূমিকা নিতে হবে। যে কোনো বোলারের একটা স্থিতিশীলতার প্রয়োজন হয়। সেটা না থাকলে কেউই পারফর্ম করতে পারে না।”
ফলাফলের পিছনে ছুটতে গিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি করতে ভুলে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়া, মত ইরফানের। জানিয়েছেন, “রবি শাস্ত্রী ও রাহুল দ্রাবিড় জমানায় কি মানসিকতা ছিলো? ওরা সেরা তারকাদের ব্যবহার করে ফলাফল চাইতেন। শাস্ত্রীর সময় বুমরাহ, শামি, উমেশ যাদব, ঈশান্ত শর্মা’রা ছিলেন। ওরাই অধিকাংশ ম্যাচ খেলতেন। একটা-দু’টো ম্যাচে নভদীপ সাইনি খেলেছেন। টি নটরাজন’ও অস্ট্রেলিয়াতে খেলেছিলেন। কিন্তু তারপর আর ওকে কোথাওই দেখা যায় নি। তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় নি।” “রাহুল দ্রাবিড়ের সময়েও বুমরাহ, শামি, সিরাজরা বেড়ে উঠেছেন। ওরা জয়দেব উনাদকাটের দিকেও তাকিয়েছিলো। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম্যান্সের পর সেটা ওর প্রাপ্যও ছিলো। কিন্তু তরুণ ফাস্ট বোলারদের গুরুত্ব দেওয়া হয় নি। আকাশ দীপ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণারা গুটিকয় ম্যাচ খেলেছিলো মাত্র,” সংযোজন তাঁর।
সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে টিম ইন্ডিয়ার-
গত দুই-তিন বছরে নতুন প্রজন্মের ফাস্ট বোলারদের তৈরি করে নেওয়ার সুযোগ ছিলো ‘মেন ইন ব্লু’র সামনে। কিন্তু সেই সুযোগ তারা হাতছাড়া করেছে, মনে করেছেন ইরফান পাঠান। ২০২২-এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চোটের জন্য ছিলেন না বুমরাহ (Jasprit Bumrah), শামি’রা। তখনও বোলিং চতুর্ভুজের বাকি দুই সিনিয়র সদস্য উমেশ যাদব ও মহম্মদ সিরাজের উপরেই আস্থা রেখেছিলো দল। একটি মাত্র ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন জয়দেব উনাদকাট (Jaydev Unadkar)। ভুল ছিলো সেই পরিকল্পনায়, মত ইরফানের। ইউটিউব ভিডিওতে তিনি জানিয়েছেন, “ওরা যখন বাংলাদেশ গিয়েছিলো তখন মহম্মদ সিরাজকে নিয়ে গিয়েছিলো। যে কিনা ততদিনে ১২-১৩টি টেস্ট খেলে ফেলেছিলো। ওদের কি উচিৎ ছিলো না কোনো তরুণকে ওখানে সুযোগ দেওয়া? জয়দেব উনাদকাটের সাথে আরও কয়েকজনকে নিয়ে যেতে পারত। তাহলে অনেককেই তৈরি করা যেত।”