IND vs ZIM: নেদারল্যান্ডস দিনের প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকা’কে হারিয়ে দেওয়ায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো সেমিফাইনালের টিকিট। মেলবোর্নে ভারতের লক্ষ্য ছিলো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ চারে যাওয়া। ভারত আর গ্রুপের শীর্ষস্থানের মাঝে বাধা হিসেবে ছিলো কেবল জিম্বাবুয়ে। এই বিশ্বকাপে পাকিস্তান’কে হারিয়েছে ‘শেভ্রন’রা। বাংলাদেশের কাছে হারলেও, লড়ে হেরেছে। কোনও ভাবেই তাই জিম্বাবুয়ে’কে হাল্কা করে দেখে নি ভারত। মেলবোর্নের ঐতিহাসিক এম সি জি’তে ভারতের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হয়েছিলো পাকিস্তান’কে হারিয়ে। সেই একই মাঠে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জয় দিয়েই গ্রুপ পর্বে ইতি টানলেন কোহলি, রোহিত’রা। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করেছে ভারত। সূর্যকুমার যাদব আবার বুঝিয়েছেন কেনো তিনি বিশ্বের এক নম্বর টি-২০ ব্যাটার। তাঁর অনবদ্য ২৫ বলে ৬১* রানের ইনিংসে ভর করে স্কোরবোর্ডে ১৮৬ রান তুলেছিলো ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতের বোলিং আক্রমণের ধারে ছিন্নভিন্ন হয় জিম্বাবুয়ে।
মেলবোর্নে সন্ধ্যাতেও সূর্যোদয়, রানের পাহাড়ে ভারত-

টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা(Rohit Sharma)। ওপেনার হিসেবে অধিনায়কের খারাপ ফর্ম এখনও চলছে। পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশ ম্যাচের পর আজও ব্যর্থ রোহিত। ১৩ বলে ১৫ করে পুল মারতে গিয়ে আউট হন ‘হিট-ম্যান।’ রোহিতের খারাপ ফর্ম চললেও আলোয় ফিরেছেন আরেক ওপেনার কে এল রাহুল(KL Rahul)। শুরুর ম্যাচগুলিতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন তিনিও। বাংলাদেশ ম্যাচে ৩২ বলে ৫০ করেছিলেন। আজ’ও ৩৪ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেললেন। ভারতের সেরা ব্যাটার কোহলি(Virat Kohli) আজ বড় রান পাননি। ২৫ বলে ২৬ করেন তিনি। তবে আরও একবার সূর্যকুমার যাদব(Suryakumar Yadav) দেখালেন কেনো তিনি এখন বিশ্বের সেরা টি-২০ ব্যাটার। মাঝের ওভারগুলিতে পরপর কিছু উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিলো ‘টিম ইন্ডিয়া।’ ফুৎকারে সেসব উড়িয়ে ২৫ বলে ৬১* রানের মারকাটারি ইনিংস খেললেন ‘স্কাই’। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গী’তে নিজের ভাঁড়ার থেকে ল্যাপ শট, স্যুইপ, ইনসাইড আউট শট সব দেখিয়েছেন সূর্য। টি-২০ বিশ্বকাপে তৃতীয় অর্ধশতক করে ফেললেন মিস্টার ৩৬০। ২০২২ ক্যালেন্ডার বর্ষে ৫০ ছক্কার রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন আগেই। এবার ১০০০ রান’ও করে ফেললেন তিনি। তাঁর ইনিংসে ভর করে ভারত তোলে ১৮৬ রান।
ভারতের পেস ব্যাটারি হিট অস্ট্রেলিয়া’য়-

বিশ্বকাপের আগে পিঠের চোটে ছিটকে গেছিলেন জসপ্রীত বুমরাহ। ছিলেন না দীপক চাহার’ও। অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের বোলিং বিভাগের ভবিষ্যত নিয়ে সন্দিহান ছিলেন অনেকে। বাস্তবে ভারতের পেসার’রা কিন্তু বাইশ গজে ফুল ফোটাচ্ছেন। ভুবনেশ্বর, শামি’র অভিজ্ঞতা’র সাথে যুক্ত হয়েছে অর্শদীপের তারুণ্য।আজও ভারত’কে ম্যাচ জেতাতে সাহায্য করলেন পেসার ত্রয়ী। প্রথমেই ওয়েসলি মাধবেরে’কে ফেরান ভুবি। অর্শদীপ সিং-এর স্যুইং-এ বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড হয়ে ফিরলেন রেজিস চাকাভা। মহম্মদ শামি মেলবোর্নে তুললেন ২ টি উইকেট। আরেক পেসার হার্দিক পান্ডিয়া’ও নিলেন ২ টি উইকেট। চলতি বিশ্বকাপে গড়ে প্রায় ২.৪ ডিগ্রী স্যুইং বাইশ গজ থেকে তুলে নিয়েছেন ভারতের পেসার’রা। গোটা টুর্নামেন্টে যা সবচেয়ে বেশী। সেমিফাইনালের আগে উইকেটের ঝুলি পূর্ণ করলেন স্পিনার রবিচন্দ্রণ অশ্বিন’ও(Ravichandran Ashwin)। ৪ ওভারে ২২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নিলেন তিনি। অক্ষর প্যাটেল’ও পান ১ টি উইকেট।১১৫ রানেই থেমে যায় ‘শেভ্রন’রা। রায়ান বার্ল এবং সিকান্দার রাজা প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ঠ ছিলো না। রাজা ২৪ বলে ৩৪ করে হার্দিকের শিকার হন। বার্ল ২২ বলে ৩৫ করে আউট হন অশ্বিনের বলে। ৭১ রানে এই বিরাট জয়ের পর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে ভারত। অ্যাডিলেডে শেষ চারে ভারতের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। সামনে আর দু’টো ম্যাচ। জিতলেই দেড় দশক পর ফের আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হবে- ‘চক দে।’ সেদিকেই তাকিয়ে এখন গোটা ভারতের ক্রিকেটজনতা।